২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এফ-১৬ কিনতে না পারলেও হেরে যাবে না তুরস্ক

এফ-১৬ কিনতে না পারলেও হেরে যাবে না তুরস্ক - ছবি : সংগ্রহ

এটা প্রায় স্পষ্ট যে মার্কিন কংগ্রেসের কিছু নতুন শর্ত আরোপ করার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুরস্কের এফ-১৬ ক্রয় করা এখন তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কংগ্রেসের আরোপিত শর্তের মধ্যে গ্রিসের আকাশ ও সমুদ্রপথ অতিক্রমের বিষয়টিও রয়েছে। জো বাইডেন চাইলে নিজে এটি বিক্রিতে মত দিতে পারেন। তবে এটা এখনও জানা যায়নি যে তিনি কঠিন সময়ে কংগ্রেস কে অগ্রাহ্য করে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন কি না,পরিস্থিতি দেখে যা মনে হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরেও তুরস্কের পক্ষে এফ-১৬ বিমান ক্রয় করা সম্ভব না।

আমেরিকা আগেও এফ-৩৫ বিক্রি করেনি, আর এখন গ্রিক, আর্মেনিয়ান এবং অন্যান্য লবির অনুরোধে এফ-১৬ বিক্রি করতেও নারাজ। এছাড়াও, যেদিন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, কংগ্রেস পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সিরিয়ান শাখা ওয়াইপিজিকে ১৮৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, তুরস্ক বাদে তুরস্কের বিরোধী সব দেশ ও সংস্থাই আমেরিকান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হয়েছে। তবে তুরস্ক ছাড়াও অন্যান্য বন্ধু দেশের প্রতিও বাইডেন প্রশাসনের দ্বিমুখী কপটতা স্পষ্ট, তুরস্ক যখন রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করলো আমেরিকা তখন সিএএটিএসএ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো অথচ, ভারত একই জিনিস ক্রয় করলেও আমেরিকা টু শব্দ পর্যন্ত করেনি উল্টা ভারতের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। এমনকি ভারতের প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের কাছে তুরস্ক আমেরিকান ইঞ্জিনবাহী এটিক হেলিকপ্টার বিক্রি করতে চাইলেও ওয়াশিংটন অনুমতি দেয়নি। এটা সবাই জানে যে আমেরিকান কংগ্রেসের সদস্যরা লবিস্টদদের দেয়া চেকের কল্যাণে তাদের রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।এইভাবে, যে লবিগুলো বেশি অর্থ দেয় তারা সহজেই তাদের জন্য সুবিধাজনক সিদ্ধান্ত, আইন পেতে পারে।
এফ-১৬ বিক্রিতে ন্যাটো সদস্য তুরস্ক লবিস্টদের কম অর্থ দিয়েছে ফলে নিজেদের পক্ষে সিদ্ধান্ত আসেনি।
অবশ্যই, এটি আমেরিকা নয় যে জিতেছে, কিন্তু লবিস্ট এবং কংগ্রেসম্যানরা যারা তাদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে। বলে রাখা ভালো, এখানে আমেরিকার কোনো লাভ না হলেও লবিস্ট ও কংগ্রেস সদস্যরা ঠিকই মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

তবে, তারা এখনো বুঝতে পারছে না যে তুরস্ক এখানে একদমই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আবার তারা যে ভাবছে তুরস্ককে অস্ত্র না দিলে তারা অরক্ষিত থাকবে, ব্যাপারটা এমনও নয়। গ্রিকরা যদি মনে করে যে তাদের কাছে খুব উন্নত জেট আছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে তারা তুরস্কের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারবে, তবে সেটা তাদের ভুল ধারণা। গ্রিকদের প্রথম ভুল হলো তুরস্কের ভয়ে বিশাল সংখ্যক অস্ত্র কেনা। অবশ্য তুরস্ক অস্ত্রের মহড়াকে সমাধান হিসেবে মনে করছে না এবং এক সাথে আলোচনার টেবিলে বসে আকাশ ও সমুদ্রসীমার যে অংশ গ্রিসের না সে অংশ ছেড়ে দেয়ার কথা বলছে। (যারা জানেন না গ্রিস তাদের আকাশ ও সমুদ্রসীমা ছয় মাইল থেকে বাড়িয়ে ১০ মাইল করতে চায়)। গ্রিকরা যদি মনে করে যে তুরস্কের তারা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে তবে তারা সম্পূর্ণ ভুল, কারণ জাতীয় যুদ্ধ বিমানের প্রথম প্রোটোটাইপ (এমএমইউ) শিগগিরই স্থলের জন্য হ্যাঙ্গার ছেড়ে যাবে। যুদ্ধের মাঠে গেলেই বোঝা যাবে মার্কিন কংগ্রেসে তুরস্কবিরোধী সিদ্ধান্ত তাদের কোনো কাজেই আসেনি। এভাবে যুদ্ধে জয় সম্ভব না। কারণ যদি ব্যাপারটা ফাইটারের মালিকানার হয়, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে, যখন তারা (গ্রিস) উচ্চ মূল্যে জেট কিনবে, তুরস্ক কম খরচে নিজস্ব বিমান তৈরি করবে।

বর্তমানে, ব্রিটেনের রোলস রয়েস কোম্পানি বিমানের ইঞ্জিন তৈরি করতে সম্মত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে এবং বিএই সিস্টেম ইতিমধ্যে নকশার জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে । মজার বিষয় হলো গ্রিকরা যখন কংগ্রেসম্যানদের সাথে তাদের সময় নষ্ট করছে, তুরস্ক তখন ব্রিটিশ বিমান নির্মাতাদের সাথে আলোচনা করছে এবং ভবিষ্যতে জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, বিনিয়োগ করছে। এর পরেও যদি তুর্কি নির্মাতারা সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাহলে তুরস্কে বিমানের যন্ত্রাংশ তৈরি করতে পারে সকলে একসাথে হয়ে সম্ভবত দেশীয় বিমান তৈরি করবে কারণ তারা ইতিমধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছে গেছে। দরকার পড়লে 'বেকার' এই প্রকল্পে যুক্ত হবে কারণ তারা আগে থেকেই বায়ারাক্টার ইউসিভি তৈরি করে দেখিয়েছে, এবং তৈরি করে আসছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তান, আজারবাইজান, কাতার এবং কুয়েতের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর জন্য এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হওয়া বেশ ভালো হবে। শেষ পর্যন্ত, তাদের একটি সস্তা মূল্যে একটি পঞ্চম-প্রজন্মের জেট থাকবে, তারা নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হবে না এবং একটি জেটের উৎপাদনে অবদান রাখবে।
গত ৮০ বছরে, পশ্চিমা বিশ্ব সহযোগিতা করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছে, পাশাপাশি সস্তায় অনেক পণ্য উৎপাদন করতে পেরেছে। তুরস্ক এবং তার বন্ধুরা একই কাজ খুব সহজে করতে পারে।

একটি দেশ একা দুর্বল হতে পারে, অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে কয়েকটি দেশ মিলে অনেক কিছু করতে পারে। এছাড়াও, প্রকল্প-ভিত্তিক সহযোগিতা সময়ের সাথে অন্যান্য ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটা নিশ্চিত যে যারা অন্যের উপর নির্ভরশীল তাদের ভবিষ্যত অন্যের মাধ্যমে যেমন নির্মিত হয় তেমন ধ্বংসও হয়। তবে, ঐক্য শক্তি এবং স্বাধীনতা নিয়ে আসে।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ


আরো সংবাদ



premium cement
মিরসরাইয়ে জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে লুট, মূল হোতা গ্রেফতার বৃষ্টি কামনায় ঈশ্বরগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর ইসতিসকার নামাজ আদায় কুবিতে আল্টিমেটামের পর ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলাল শিক্ষক সমিতি সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ শ্রমিক নিহতের খবরে ঈশ্বরগঞ্জে শোক দুর্যোগে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু কেন বাংলাদেশে? জবিতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বেড়েছে ৫০টি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব

সকল