১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আবারো মুখ খুললেন ওজিল

- ছবি : সংগৃহীত

জার্মানির জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার মেসুত ওজিল বর্ণবাদের অভিযোগ এনে গতবছর পদত্যাগ করেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারও কথা বলেছেন তুর্কি বংশোদ্ভূত এই ফুটবলার।

খেলাধুলা বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘দ্য অ্যাথলেটিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ জেতা ওজিল বলেন, জাতীয় দল থেকে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল।

‘‘সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অনেক সময় চলে গেছে। কিন্তু আজও আমি জানি যে, সিদ্ধান্তটা ঠিক ছিল,'' বলেন ৩১ বছর বয়সি ওজিল।

তিনি বলেন, ‘‘ঐ সময়টা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। কারণ জার্মানির হয়ে আমি নয় বছর খেলেছি। তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ও ছিলাম আমি।’’

গতবছর মে মাসে লন্ডনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সঙ্গে ছবি তুলে জার্মানিতে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন ওজিল। তার সঙ্গে জার্মান জাতীয় দলের আরেক খেলোয়াড় ইলকায় গুন্দোয়ানও ছিলেন।

ঐ ছবি প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে ওজিলকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এরপর জুন-জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জার্মানির হয়ে খেলার সময় সমর্থকদের রোষের মুখে পড়েন বলে জানান তিনি। এরপর ২২ জুলাই জাতীয় দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ওজিল। পদত্যাগপত্রে তিনি বর্ণবাদ ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিলেন।

দ্য অ্যাথলেটিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ওজিল ঐ সময় সম্পর্কে আবারও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি বর্ণবাদী আচরণ পাচ্ছিলাম- এমনকি রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকেও। সেই জাতীয় দলের কেউ এসে বলেননি যে, ‘এসব বন্ধ করুন। ও আমাদের খেলোয়াড়, আপনি তাকে এভাবে অপমান করতে পারেন না’। সবাই চুপ করে ছিলেন এবং এসব ঘটতে দিয়েছিলেন।’’

বিশ্বকাপের সময় সমর্থকদের কাছ থেকে শোনা কয়েকটি মন্তব্যও উল্লেখ করেন ওজিল। যেমন ‘তোমার দেশে ফিরে যাও’, ‘এফ... ইওরসেল্ফ’ এবং ‘তুর্কি শুয়োর’ ইত্যাদি।

ওজিল বলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছিল, তারা আশা করছিলেন, (এরদোগানের সঙ্গে) বৈঠকের জন্য আমি ক্ষমা চাই, আমি যে ভুল করেছি সেটা স্বীকার করে নেই, এবং তারপর সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। তা না হলে, আমি দলে স্বাগত হতাম না এবং আমাকে দল ছাড়তে হতো। আমি কখনও তা করবো না।’’

জার্মানিতে বর্ণবাদ সবসময় ছিল মন্তব্য করে আর্সেনালের বর্তমান ফুটবলার ওজিল বলেন, তার ঘটনায় বর্ণবাদের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

তিনি বলেন, ‘‘তারা ব্যক্তিগত মত দিতে পারেন, আমার ছবি তাদের অপছন্দ হতে পারে, তেমনি আমিও ছবি তোলার বিষয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারি। কিন্তু তারপর যা হয়েছে, তাতে সবার কাছে তাদের বর্ণবাদী চরিত্র বের হয়ে গেছে।’’

ওজিল মনে করছেন, তার সঙ্গে হওয়া ঘটনাটি জার্মানিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের একটি নির্দেশক।

সম্প্রতি জার্মানির হালে শহরে ইহুদিদের একটি উপাসনালয়ের কাছে এক নব্য-নাৎসির এলোপাতাড়ি গুলিতে দুজন নিহত হন। এই ঘটনার উল্লেখ করে ওজিল বলেন, ‘‘জার্মানির অনেকগুলো বড় সমস্যা আছে - গত সপ্তাহে হালেতে যে ঘটনাটি হলো সেটির দিকে তাকান, সেটা একটি ইহুদিবিদ্বেষী হামলা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বর্ণবাদ শুধুমাত্র আর ডানপন্থি ইস্যু নয়। এটি সমাজের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে।’’ ডয়েচে ভেলে।


আরো সংবাদ



premium cement