২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঘুম

-

আব্বার অনুশাসনের মধ্য দিয়ে আমার বেড়ে ওঠা। শৈশবের শুরু থেকে আজ এই তরুণবেলা অবধি আব্বা আমাকে তার কড়া নজরদারিতে রেখে আসছেন। যদিও শুধু একতরফা শাসন নয়, আমার জন্য তার বুকের যত আদর-মমতা, সব ঢেলে দিতেও দ্বিধা করেন না।
তবুও বলবÑ আব্বার আদর-শাসনকে তুলনা করতে গেলে শাসনের পাল্লাটাই ভারী হবে। অবশ্য শাসনের পাল্লা ভারী হওয়ার নানান কারণও আছে। অনেকটা ডানপিটে ছেলে আমি। পড়ালেখায় কখনো মন নেই। বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়ানোর দারুণ রেকর্ড আছে আমার। তবে আজকাল ফেসবুকের নেশাটাও কম না। বিভিন্ন কারণে ফেসবুকে ম্যালা টাইম দিতে হয় আমায়। বেশ কয়েকজন ভালো বন্ধুও জুটেছে এখানে। এসব ভালো বন্ধুর মধ্যে একজন হলেন আতিক সাহেব।
ভদ্রলোক ফেসবুকে দারুণ কেয়ার করেন আমাকে। যখন যা পোস্ট করি, লাইক দেন। ইনবক্সেও মেসেজ পাঠান। শরীরের সেবা যতœ নেয়ার বেশ তাগিদ দেন। বুঝতে পারলাম আতিক সাহেব নামের এই ভদ্রলোক আমার একজন শুভাকাক্সক্ষী।
২.
ফেসবুকের নেশায় দিন দিন আসক্ত হয়ে উঠি। টাইম টেবিল ভুলে গিয়ে এখানে সময় দেয়াতে বিরক্ত হই না। আব্বা আমার ফেসবুকে ডুবে থাকার বাতিক দেখে প্রতিবাদ করেন। মোবাইল ছুড়ে ফেলার হুমকি দেন। আমি মোবাইল হেফাজতে রাখি। মোবাইল ছাড়া আমি কতখানি অচল, সে আমি ভালো জানি।
পড়তে বসলেও ফেসবুকে চোখ রাখাটা আমার চাই-ই চাই। কিন্তু সেটা চুরি করে। কারণ পড়া ফাঁকি দিয়ে ফেসবুকে সময় দেই, এই অন্যায় আব্বা মানতেই পারেন না। তাই পড়তে বসে টেবিলের নিচে মোবাইল রেখে কৌশল করে ফেসবুক চালাই।
আজ শুক্রবার। আব্বার অফিস নেই। আব্বা হুকুম দিলেন আজ রাত ১২টা পর্যন্ত পড়তে হবে। ভীতু আমি আব্বার হুকুম পালন করতে পড়ার টেবিলে বসি। কিন্তু ফেসবুক চালানোর জন্য মন কুতকুত করছে। আশপাশে তাকালাম। না আব্বা কোথাও নেই। সম্ভবত নিজের ঘরে অফিসের ফাইল ফটো ঘাঁটছেন। এই সুযোগে আমি মোবাইলটা বের করে টেবিলের নিচে রেখে ফেসবুকে ঢুকতেই আতিক সাহেব নক করলেন।
‘হাই রঞ্জু, কী করছ?’
‘বসে আছি। আপনি?’
‘কিছু করছি না।’
‘ও আচ্ছা।’
‘এই সময়ে ফেসবুকে কেন তুমি? পড়তে বসো না?’
‘পড়ালেখা ভালো লাগে না একদম।’
‘হায় হায়! কী বলো!’
‘জি।’
হঠাৎ পাশের ঘর থেকে আব্বার আগমনের আভাস পেলাম। ফেসবুকে দেখলে আব্বা আমাকে এখন মাইর দেবেন। তাই ঘুমের ভান শুরু করেছি। আমি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছি ভেবে আব্বা নিশ্চয়ই আমাকে বিছানায় যাওয়ার তাগিদ দেবেন। যদি তাই হয়, তাহলে তো রাতভর ফেসবুক আর ফেসবুক।
আব্বা আসছেন। আমি পাঠ্যবইয়ে মাথা হেলে দিয়ে কপালের উপরের বড় চুলগুলো চোখে মুখে ঢেকে দিয়ে ঘুমের ভান শুরু করলাম। হালকা নাক ডাকতেও থাকলাম।
আব্বা কাছে এলেন। আমার চোখ মুখ থেকে বড় চুলগুলো সরালেন। ছোট্ট করে বললেন, ‘কী ব্যাপার রঞ্জু, ঘুমিয়ে গেলে?’
জেগে ওঠার ভান করে ঘুম ঘুম চোখে বললাম, ‘হ্যাঁ বাবা। পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম।’
আমি ধরেই নিয়েছি আব্বা আমাকে বলবেন, ‘তাহলে যাও বাবা, বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। আজ আর পড়ার দরকার নেই।’
তা না করে আব্বা ঠাস করে এক চড় মারলেন আমাকে।
‘আব্বা, আমার অপরাধ?’
‘ঘুমের ভান করছিস, এটাই তোর অপরাধ?’
‘ভান? না না। আমি সত্যিই ঘুমিয়ে পড়েছি।’
‘একটু আগে না তোকে অনলাইনে দেখলাম?’
‘না তো।’
‘আবার মিথ্যে? আমার সাথে না একটু আগে চ্যাট করলি?’
‘মানে?’
‘শোন। আতিক আইডিটা আমার ফেইক আইডি।’
‘কী বলছ!’
‘হ্যাঁ। চালাকি সবার সাথে সাজে না।’
বলেই আব্বা ঠাস করে আমাকে আরেকটি চড় মারলেন। আতিক সাহেব! মানে ‘আতিক’ আইডিটি আব্বার ফেক আইডি! হ


আরো সংবাদ



premium cement
ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার কবরে শুয়ে ছেলের প্রতিবাদ ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরো ৭১ জন নিহত পানছড়ি উপজেলায় চলমান বাজার বয়কট স্থগিত ঘোষণা আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে : দুদু যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি দলে নিউজিল্যান্ডের এন্ডারসন লড়াই ছাড়া পথ নেই : নোমান

সকল