২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে অঘটন, চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিদায় নাদালের

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে অঘটন, চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিদায় নাদালের - ফাইল ছবি

তিনি কাঁদছেন। তোয়ালেতে মুখ ঢেকে চেয়ারে বসে আছেন। দুঃখ বা লজ্জায় নয়, আনন্দে-আবেগে। ইনি-ফ্রান্সিস তিয়াফো। কিছুক্ষণ আগে যিনি হারিয়ে দিয়েছেন কিংবদন্তি রাফায়েল নাদালকে। নতুন ইতিহাস রচনার আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

ফ্রান্সিস তিয়াফো যে এই প্রথম ইউএস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন, তা নয়। তিন বছর আগেও শেষ আটে উঠেছিলেন। তাহলে এবার কাঁদলেন বা তোয়ালেতে মুখ ঢেকে বসে থাকলেন কেন? আসলে নাদালকে হারিয়েছেন যে!

টেনিস কিংবদন্তিকে ৬-৪, ৪-৬, ৬-৪ ও ৬-৩ সেটে হারানোর পর ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলেন ফ্রান্সিস।

পুরো খেলায় ১৮টা এস ও ৪৯টা উইনার্স মেরেছেন তিনি। যে ফ্রান্সিস টেনিস জীবনে একটা সেটও নাদালের বিপক্ষে কখনো জেতেননি, তিনি স্প্যানিশ তারকাকে হারিয়ে দেয়ায় তোলপাড় পড়ে যায় চতুর্দিকে।

খেলা শেষেও আবেগে বারবার আক্রান্ত হয়েছেন ফ্রান্সিস। ম‌্যাচ শেষে বলেন, ‘কী বলব, কী বলা উচিত, সত্যি আমার জানা নেই। নিজেকে অসম্ভব সুখি লাগছে। দারুণ আনন্দ হচ্ছে ভেতরে ভেতরে। আমি তো আবেগ চেপে না রাখতে পেরে কেঁদেই ফেলেছিলাম। আসলে নাদালকে হারিয়েছি, আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। নাদাল সর্বকালের সেরাদের অন‌্যতম, চ‌্যাম্পিয়ন প্লেয়ার। আর সেই নাদালকে কি না আমি হারিয়েছি! অব্যশই ‍আমি ভালো খেলেছি, নয়তো নাদালকে হারানো যেত না। কিন্তু তার পরেও বিশ্বাস হচ্ছে না আমার।’

নাদাল এই মৌসুমে চারটি গ্র্যান্ড স্ল‌্যামের মধ্যে দুটোয় চ‌্যাম্পিয়ন হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে এবং ফরাসি ওপেনে। উইম্বলডনে সেমিফাইনালে উঠলেও শেষে চোট পেয়ে সরে দাঁড়াতে হয়।

অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, নোভাক জকোভিচ না থাকায় নাদালের ইউএস ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না রাফা। নাদালের হিসেব মতে, ফ্রান্সিসের সাথে তার বয়সের তফাত কোথাও গিয়ে একটা ফ‌্যাক্টর হয়ে গেল।

নাদাল বলেন, ‘টেনিসে আপনাকে জিততে হলে খুব দ্রুত নড়াচড়া করতে হবে। প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি জায়গা দেয়া চলবে না। তরুণ বয়সে সেটা সম্ভব। কিন্তু আমার আর এখন সেই বয়স নেই। তাই ফ্রান্সিসের সাথে লড়ে পেরে উঠিনি। আর মানতেই হবে, ফ্রান্সিস আমার চেয়ে ভালো খেলেছে।’

আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে জেতার পর মাটিতে র‌্যাকেট ছুঁড়ে বিজয় উদযাপন করেন ফ্রান্সিস। বিজয়ের উচ্ছ্বাস তখন তার চোখে-মুখে। অন্যদিকে নাদাল ছিলেন ভাবলেশহীন। এবার ইউএস ওপেনের শুরু থেকেই কেমন ছন্দহীন দেখাচ্ছিল নাদালকে।

নাদালের ছন্দহীনতার অন্যতম কারণ তার স্ত্রীর অসুস্থতা। এর সাথে চোট তো রয়েছেই। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিলেন স্প্যানিশ তারকা।

ম্যাচ হারার পর নাদাল স্পষ্ট করে বলতে পারেননি, কবে আবার কোর্টে ফিরতে পারবেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন ‘জানি না কবে ফিরব (কোর্টে)। কিছু কিছু বিষয় ঠিক করতে হবে। মানসিকভাবে নিজেকে আগে প্রস্তুত করার প্রয়োজন আছে। যখন মন বলবে প্রতিযোগিতায় নামার মতো প্রস্তুত, তখন ফেরা যাবে’।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন


আরো সংবাদ



premium cement