ভারতে বন্ধ চীনা অ্যাপ
- আহমেদ ইফতেখার
- ০৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০
ভারত-চীনের সীমান্ত উত্তেজনা ক্রমান্বয়ে বাড়ায় ভারতে বিভিন্ন মহল থেকে চীনা পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় চীনা অ্যাপ আনইনস্টলেরও দাবি জানিয়েছিলেন অনেকে। অবশেষে টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, শেয়ারইট, বিগো লাইভ ও হেলোর মতো ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে সে পথেই হাঁটল ভারত সরকার।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, চীনা অ্যাপগুলো দেশ ও দেশের নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক। যে কারণে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটসহ সব ধরনের গ্যাজেটে অ্যাপগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভারতীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাদান এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্যই অ্যাপগুলো নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভারত যেসব অ্যাপ বন্ধ করেছে, এর মধ্যে দেশটিতে জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটক ও উইচ্যাট রয়েছে। এক বিবৃতিতে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ৫৯টি চীনা অ্যাপ বন্ধ করেছে। কারণ বিভিন্ন সূত্র থেকে তারা এসব অ্যাপের তথ্য চুরির অভিযোগ পেয়েছে। এসব অ্যাপ ভারতীয়দের তথ্য চীনে স্থানান্তর করছে।
ভারতীয় সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চীনা অ্যাপগুলো বন্ধের সুপারিশ পেয়েছিল। অ্যাপ বন্ধ ছাড়াও ভারত সরকার দেশে চীনা কোম্পানির ফোরজি নেটওয়ার্ক হালনাগাদ ও রেলওয়ে নেটওয়ার্কের চুক্তি বাতিল করেছে। এছাড়া ই-কমার্স প্লাটফর্মগুলোয় চীনা পণ্য বিক্রি বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে। ভারত-চীনের সৈন্যদের সীমান্তে সংঘর্ষের পর বেইজিং সাইবার হানা চালাতে পারে এমন আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, চীনা অ্যাপের মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাসংক্রান্ত তথ্যও হাতিয়ে নেয়া হতে পারে। এ উদ্বেগসংক্রান্ত বেশকিছু অভিযোগ ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের। তবে চীনের পণ্য বাতিল না করে শুধু অ্যাপ বাতিল করে আদৌ চীনকে কড়া বার্তা দেয়া হলো, নাকি শুধুই সতর্কবার্তা পাঠানো হলো? অন্য একটি অংশের মতে, অ্যাপগুলো নিষিদ্ধ করে প্রথমে বার্তা দেয়া হলো। বেইজিং সংযত না হলে ভবিষ্যতে যে আরো বড় পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে, সেই বার্তাই দিয়ে রাখল ভারত।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে কয়েক ডজন অ্যাপ নিষিদ্ধের ঘটনা চীনের ডিজিটাল সিল্ক রুটের উচ্চাভিলাষের পক্ষে একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। এতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্যায়ন কমবে। ভারতের এসব অ্যাপ বন্ধ করার উদ্যোগ এখন অন্য দেশও অনুসরণ করতে পারে। কারণ অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে আগে থেকেই ব্যবহারকারীর তথ্য স্থানান্তরের অভিযোগ রয়েছে।
টিকটকের প্যারেন্ট কোম্পানি বাইটডান্সের প্রধান কার্যালয় বেইজিংয়ে। অ্যাপটি চীনে জনপ্রিয় হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকটক অ্যাপ ঘিরে সমালোচনাও বেড়েছে। টিকটক সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির কয়েকজন সিনেটর অ্যাপটির বিরুদ্ধে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও এসব অভিযোগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে টিকটক কর্তৃপক্ষ। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি প্রান্তিক শেষে টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস ছিল, যা পূরণ হবে না। টিকটক ছাড়াও ইউসি ব্রাউজার, বিগো লাইভ, বিগো ভিডিও, এমআই ভিডিও কল, ক্লিন মাস্টারের মতো অ্যাপগুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যাও কম নয়। ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ায় এসব অ্যাপ বড় আকারে ব্যবহারকারী হারাল।
টিকটকের বিকল্প চিঙ্গারি ডাউনলোডের হিড়িক
টিকটক বন্ধ হবার পর রাতারাতি ভাগ্য খুলে গেছে তারই আদলে তৈরি ভারতীয় অ্যাপ ‘চিঙ্গারি’র। দেশটিতে প্লে স্টোর থেকে চিঙ্গারি অ্যাপটি ৭২ ঘণ্টায় ডাউনলোড ছাড়িয়েছে ৫০ লাখ। এমনকি দেশটিতে গত ৭২ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সার্চ করা অ্যাপের নামও চিঙ্গারি।
ভারতের তথ্যপ্রযুক্তির রাজধানী হিসেবে পরিচিত বেঙ্গালুরুতে গত বছর বিশ্বাত্মা নায়েক ও সিদ্ধার্থ গৌতম নামের দুই ভারতীয় চিঙ্গারি অ্যাপটি লঞ্চ করেন। তখনও তারা কল্পনা করেননি একদিন ভারতীয়দের কাছে এটি এতটা জনপ্রিয় হবে। এটি তৈরি করা হয়েছে টিকটকের আদলেই। অ্যাপটিতে হিন্দি ইংরেজি ছাড়াও মোট আটটি ভাষা রয়েছে। এটিতে ভিডিও আপলোড করার সাথে সাথে চ্যাট এবং বন্ধুদের সাথে আলাপ করার একাধিক সুবিধা রয়েছে। হ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা