২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চীনের পরে ভারত নির্ভরশীল অ্যাপল

-

অ্যাপল পণ্য উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ চীন থেকে ভারতে সরিয়ে নিচ্ছে। গত কয়েক মাসে এ নিয়ে অ্যাপল এবং ভারত সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে একাধিকবার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অ্যাপল পণ্য উৎপাদন সক্ষমতার একটি অংশ চীন থেকে ভারতে সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে খুঁটিনাটি যাচাই-বাছাই করে দেখছে। এই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখলে অ্যাপল ভারতের বৃহৎ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
ভারত সরকার আশা করছে, অ্যাপল চুক্তিভিত্তিক পণ্য নির্মাতা উইস্ট্রন ও ফক্সকনের মাধ্যমে রফতানির জন্য ভারতে ৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের স্মার্টফোন উৎপাদন করবে। ভারত সরকার স্থানীয়ভাবে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনকে উৎসাহিত করছে। যে কারণে ভারত সরকারের প্রডাকশন-লিঙ্কড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিমের আওতায় লাভবান হবে জনপ্রিয় আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।
যদিও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাপল নির্বাহী এবং ভারত সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিষয়গুলো সমাধানে কাজ করছেন। শিগগিরই ছোটখাটো সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন অ্যাপল, স্যামসাং ও লাভার শীর্ষ নির্বাহীরা। এরপর থেকে বিভিন্ন স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ভারতে ডিভাইস উৎপাদন কার্যক্রম জোরদারে গুরুত্বসহ কাজ করছে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন বাজার হলেও অ্যাপলের জন্য বড় বাজার নয়। বার্ষিক মোট উৎপাদিত আইফোনের খুব সামান্য অংশ ভারতে বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি। অ্যাপল মূলত ভারতকে ডিভাইস উৎপাদন ও রফতানি হাব হিসেবে দেখছে। বিভিন্ন কারণে চীন থেকে উৎপাদন কার্যক্রম সরাতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে ভারত।
টানা কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ চলছে। এ বিরোধ কতদিন স্থায়ী হবে, তার নিশ্চয়তা নেই। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু চীনা পণ্যে আমদানি শুল্ক ধাপে ধাপে বাড়িয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ গত বছরেও চীনা পণ্যে আমদানি শুল্ক কয়েক ধাপ বাড়ানো হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। বাস্তবিক অর্থে চীন বদলা নিতে চাইলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে অ্যাপল। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির বেশির ভাগ পণ্য তৈরি হয় চীনে। যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধের প্রভাবমুক্ত থাকতে প্রধান পণ্য সরবরাহকারীদের উৎপাদন সক্ষমতার ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ চীন থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের বিষয়টি পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যাপল। বিশ্বের বৃহৎ দুই অর্থনীতির বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে আইফোন বা অন্য অ্যাপল পণ্যের দামে যাতে প্রভাব না পড়ে, সে কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলও ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।


আরো সংবাদ



premium cement