১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে করোনার প্রভাব

-

বিশ্বের অধিকাংশ প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা কোম্পানি কোনো না কোনোভাবে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় চীনের ওপর নির্ভরশীল। আর চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ ভাইরাস করোনা ছড়িয়ে পড়ায় প্রযুক্তি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ দক্ষিণ কোরিয়ায় এলজির ডিসপ্লে কারখানার পার্শ্ববর্তী এলাকায় নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর গুমিতে একটি কারখানার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে এলজি ডিসপ্লে। লিখেছেন সুমনা শারমিন

চীন থেকে করোনাভাইরাস দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ার কারণে সর্বত্র যেমন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর উৎপাদন ও সরবরাহব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের প্রবৃদ্ধি কমবে। আবার বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও করোনাভাইরাসের মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এলজির ডিসপ্লে কারখানা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে এলজি ডিসপ্লে। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কারখানাটির কর্মীদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে কভিড-১৯ আক্রান্ত কর্মী শনাক্ত হওয়ায় গুমিতে একটি মোবাইল ডিভাইস উৎপাদন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে স্যামসাং, যা এখনো বন্ধ রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক এলজির ডিসপ্লে নির্মাণ বিভাগ এলজি ডিসপ্লে। গুমির কারখানায় স্মার্টফোনের স্ক্রিন তৈরি করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এক বিবৃতিতে এলজি ডিসপ্লে জানিয়েছে, চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পের চিত্রপট বদলে দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায়ও এখন করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। স্মার্টফোন স্ক্রিন কারখানার পার্শ্ববর্তী একটি ব্যাংকের একজন কর্মী কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ঘটনার পর পরই কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী এলজি ডিসপ্লের কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এর প্রভাব বহুজাতিক অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ অ্যাপলের আইফোন থেকে শুরু করে অনেক ব্র্যান্ডের মোবাইল ডিভাইসের ডিসপ্লে স্ক্রিন তৈরি করে এলজি ডিসপ্লে। ফলে উৎপাদন কয়েক দিনের জন্য বন্ধ থাকলেও সরবরাহ চেইনে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের গুমিতে অবস্থিত কারখানায় কভিড-১৯ আক্রান্ত একজন কর্মী শনাক্ত করা হয়েছে। ওই কর্মী কারখানার যে ফ্লোরে কাজ করতেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী দুই দিনের মধ্যে কারখানাটির কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্তের কথা বলা হলেও তা এখনো বন্ধ রয়েছে। যারা কভিড-১৯ আক্রান্ত কর্মীর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাদের নিজেদের কোয়ারান্টাইন করে রাখার পরামর্শ দিয়েছে স্যামসাং।
এখন স্যামসাংয়ের বেশির ভাগ স্মার্টফোন উৎপাদন হচ্ছে ভারত ও ভিয়েতনামে স্থাপিত নিজস্ব কারখানায়। স্যামসাং মোট যত ইউনিট স্মার্টফোন উৎপাদন করে, তাতে গুমির কারখানার অবদান খুবই সামান্য। মূলত স্থানীয় বাজারের চাহিদা মেটাতে গুমির কারখানায় হাই-অ্যান্ড ফোন উৎপাদন করে আসছে স্যামসাং। গুমি দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু নামের শহরের কাছাকাছি। বলা হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় এ পর্যন্ত যত মানুষ কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে, তার বেশির ভাগই দেইগুর একটি চার্চের আশপাশ এলাকার।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান থেকে বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ নিয়ে থাকে। অ্যাপলের আইফোন সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান বা অ্যাসেম্বলার ফক্সকন ও পেগাত্রন মধ্য জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে। যার প্রভাব ইতোমধ্যে বাজারে পড়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement