পঞ্চম শ্রেণীর প্রস্তুতি : বিজ্ঞান - পর্বসংখ্যা-৪৩
অধ্যায় তিন : জীবনের জন্য পানি- নূরুন নাহার লাকী, সহকারী শিক্ষক, বাহরাম খান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ
- ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০
সুপ্রিয় পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অধ্যায় তিন : জীবনের জন্য পানি’ থেকে ৪টি বর্ণনামূলক প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হলো।
প্রশ্ন : বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের পৃষ্ঠ কেন ভিজে যায় তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের পৃষ্ঠ ভিজে যাওয়ার কারণ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. বায়ু যখন ঠাণ্ডা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়।
২. অর্থাৎ পানির অবস্থার পরিবর্তন হয়।
৩. কাচের গ্লাসে বরফের টুকরা রাখলে বরফের ঠাণ্ডার কারণে গ্লাসটি ঠাণ্ডা হয়ে যায়।
৪. আর সে ঠাণ্ডার পরশে বায়ুর জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানির কণায় পরিণত হয়।
৫. তাই বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের অংশ ভিজে যায়।
প্রশ্ন : ঠাণ্ডা পানির গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির কেন একই রকম?
উত্তর : রাতে ঘাস, গাছপালা ইত্যাদির ওপর যে বিন্দু বিন্দু পানি জমে তাকে শিশির বলে। বায়ু যখন ঠাণ্ডা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। এই পানির ফোঁটাই হলো শিশির। এ কারণেই ঠাণ্ডা পানির গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির একই রকম।
প্রশ্ন : পানির ফোঁটাগুলো কিভাবে তৈরি হয়?
উত্তর : বায়ুতে সব সময়ই কিছু না কিছু জলীয়বাষ্প থাকে। বিভিন্ন ঘাস, লতাপাতা যখন রাতের বেলা তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে যায় তখন এসব শীতল বস্তুর সংস্পর্শে যখন জলীয়বাষ্প আসে এবং তারা ঠাণ্ডা বস্তুর সংস্পর্শে ঘনীভূত হয়ে পানির ফোঁটায় পরিণত হয়। জলীয়বাষ্পে পানি থাকে, যা গ্যাসীয় অবস্থায় বিরাজমান।
প্রশ্ন : পানিচক্র ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সূর্যের তাপে পুকুর, খাল, বিল, নদী ও সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে উপরের দিকে উঠে ঠাণ্ডা হয় এবং ক্ষুদ্র পানিকণায় পরিণত হয়। ক্ষুদ্র পানিকণা একত্র হয়ে আকাশে মেঘ হিসেবে ঘুরে বেড়ায়। মেঘের পানিকণাগুলো একত্র হয়ে আকারে বড় হয়ে বৃষ্টিরূপে মাটিতে পড়ে। বৃষ্টির পানি নদীর পানির সাথে মেশে তা প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রের পানিতে মেশে। এ ছাড়া জলীয়বাষ্প এভাবে ভূপৃষ্ঠের পানি থেকে জলীয়বাষ্প, জলীয়বাষ্প থেকে মেঘ, মেঘ থেকে বৃষ্টি হিসেবে পানি আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। পৃথিবীতে পানি তার এক উৎস থেকে আরেক উৎসে চক্রাকারে ঘোরে। আবার জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পর্বতের চূড়ায় যে বরফ তৈরি করে তা গ্রীষ্মকালে সূর্যের তাপে গলে পানি হয়ে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে। এভাবে ছোট পাহাড়ি নদীর উৎপত্তি হয়। এই নদীর পানি সব শেষে সমুদ্রে গিয়ে মিশে। এভাবে পানি চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।
চিত্র : পানিচক্র