১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সিলেটে ১৩ উপজেলার ৯৭ ইউনিয়ন প্লাবিত

সিলেটে বন্যা - ছবি : নয়া দিগন্ত

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে তৃতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৭টি ইউনিয়ন। এতে ৭ লাখ ১১ হাজার ২২৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ছয়টি পয়েন্টেই পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বুধবার সকাল ৯টার দিকে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৩ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৮ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এছাড়া দুই দফা বন্যায় সব নদ-নদী ও হাওর এলাকা পানি ভর্তি থাকায় পানি নামার গতি কম।

জানা যায়, গত সোমবার থেকে সিলেটে তৃতীয় দফায় পানি বাড়তে থাকায় দেখা দেয় বন্যা। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বৃষ্টি কমলেও সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

টানা বৃষ্টির কারণে সিলেট নগরীতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শিবগঞ্জ, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মীরাবাজার, শাহজালাল উপশহর, মেন্দিবাগ, শামীমাবাদ, মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়ি, তালতলা, জামতলা ও চৌকিদেখী এলাকাসহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দী অবস্থায় আছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, মঙ্গলবার সিলেট নগরের মীরাবাজার এলাকার কিশোরী মোহন বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ৮০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠা বাসিন্দাদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

সিলেটে সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ সবচেয়ে বেশি বন্যার কবলে পড়েছে। তবে প্লাবিত হয়েছে সবকটি উপজেলাই।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উপজেলার ১৫১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে পানিবন্দী লোকের সংখ্যা প্রায় ৯৮ হাজার।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম খাসিয়া পাহাড়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত আছে।

জৈন্তাপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, মঙ্গলবার দুপুর থেকে বৃষ্টি কমে আসায় পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দুপুরের পর অনেকে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement