১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা

-

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সিলেটের ছয়টি পয়েন্টের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঈদের দিন দু'টি নদীর পানি দু'টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও আজ সকালে সিলেটে চারটি নদীর পানি ৬ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয় মঙ্গলবার সকালে জানায়, এ সময় পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার এবং নদীর সারিগোয়াইন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মি.মি বৃষ্টি হয়েছে। আগামী দুই দিন সিলেটে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

আর ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে- ভারতের চেরাপুঞ্জিতে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত ৩৯৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে দ্রুত বাড়ছে সিলেটের সকল নদ-নদীর পানি।

এর আগে, রোববার সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার ১৩টির মধ্যে ১০টি উপজেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী। তবে গতকাল ভোর রাত থেকে সিলেটে ঝরতে শুরু করে ভারী বৃষ্টি। সাথে নামতে থাকে উজানের ঢল। ফলে সোমবার সকালের মধ্যেই প্রায় সকল উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়। এছাড়া  সিলেট মহানগরের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান সড়ক তলিয়ে যায় পানিতে। যার ফলে আজ সকাল পর্যন্ত প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ বন্যা কবলিত। এর মধ্যে মহানগরের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী। ঈদের দিন দুপুরের পর বৃষ্টি থামলে নামতে শুরু করে মহানগরের পানি।

জেলা প্রশাসন আরো জানায়, মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে আবারো শুরু হয় সিলেটে বৃষ্টিপাত। ফলে আজ সকাল থেকে আবারো বাড়তে শুরু করে সিলেট মহানগরের পানি।

অনেক এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল থেকে আজ পরিস্থিতি আরো খারাপ। নতুন নতুন সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে ডুবছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের সব নিচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। বিশেষ করে শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা পর্যন্ত পানি।

এছাড়া যতরপুর,মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের বেশিভাগ এলাকা বন্যা কবলিত। এছাড়া মহানগরের মধ্যে অনেক প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি রয়েছে।

এয়ারপোর্ট সড়ক, সিলেট-তামাবিল সড়ক, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোডসহ বিভিন্ন সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান পানির নিচে। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদের দিন কুরবানির পশুর মাংস, শুকনো খাবার, স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।

সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেটের সব উপজেলায় মোট ৫৩৮টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সোমাবার রাত পর্যন্ত জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৪৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement