দোয়ারাবাজারে কোরবানির পশুর হাটে ভারতীয় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা
- সোহেল মিয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)
- ১১ জুন ২০২৪, ১২:১৮
আসন্ন ঈদুল আযহা কোরবানির ঈদ সামনে রেখে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে পশুর হাটগুলোতে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। খামারগুলোতে চলছে কোরবানির পশুর শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা।
খামার মালিকরা জানিয়েছেন, খাদ্য, ওষুধ ও বিদ্যুতের দামের পাশাপাশি শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে গত বছরের তুলনায় এবার পশুর দাম চড়া যাবে। তবে, সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতীয় গরু আসায় বাজারে বিক্রেতা বেশি ও ক্রেতা কম হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপজোর ছোট-বড় খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: ইমান আল হোসাইন নয়া দিগন্তকে জানান, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ছোট-বড় নিবন্ধন-অনিবন্ধিত মিলিয়ে গরুর খামার রয়েছে ৫৫টি। খামার ও কৃষক মিলিয়ে এবার দোয়ারাবাজার উপজেলায় কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে ১৭ হাজারের বেশি। চাহিদা রয়েছে ১৬ হাজার। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে উপজেলায় আটটি পশুর হাটের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
দোয়ারাবাজারের জোহান এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছর ২৫ কেজির খাবারের দাম ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা ছিল। এখন দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০০ থেকে ১৯০০ টাকা। শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে ২০ শতাংশ। তা-ও দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায় না। ওষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।
খামারি ও কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, পছন্দের ওপর ভিত্তি করেও দাম ওঠে পশুর। এবার স্থানীয় বাজারগুলোতে গত বছরের তুলনায় ভালো গরু উঠলেও সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসায় বাজারে ক্রেতাদের সংখ্যা খুবই কম। এতে আশানুরূপ লাভের চেয়ে ক্ষতির দিকটায় বেশি দেখছে খামারিরা।
উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও নরসিংপুর ইউনিয়নের খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসায় বাজারে গরুর দাম আশানুরূপ নেই। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। দোয়ারাবাজার উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ঈদ টার্গেট করে পাঁচ থেকে ১০টি করে গরু পালন করা হয়। সবাই কোরবানির পশুর হাটে গরু তুলেছেন কিন্তু তুলনামূলক ক্রেতা নেই।’
বাংলাবাজার এলাকার কৃষক নুর মোহাম্মদ জানান, প্রতি বছর নিজ গোয়ালের গরুর সাথে বাজার থেকে কয়েকটি কিনে ঈদে বিক্রির জন্য তৈরি করেন। এবার বিক্রির জন্য তার নয়টি গরু আছে। নিজস্ব খড়, কুঁড়া ও ঘাস থাকায় তাদের খরচ একটু কম পড়েছে। তবুও বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকায় তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
উপজেলা ছোট-বড় আরো একাধিক খামার মালিক বলেন, গত বছর গরুর গোশতের কেজি ছিল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়াতেই কেজি প্রতি ১০০ টাকা দাম বেড়েছে। তাই কোরবানির পশুর দামও বেশি পড়বে। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলেও ভারতীয় গরু আসায় বাজারে বিক্রেতাদের চেয়ে ক্রেতা কম থাকায় গরু নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: ইমান আল হোসাইন বলেন, উপজেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানির পশু রয়েছে। কোরবানি ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমাদের এখানে ভারতীয় গরুর কোনো প্রয়োজন নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা