১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিলেটে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাসার সামনে অস্ত্রের মহড়া, গ্রেফতার ৩

সিলেটে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাসার সামনে অস্ত্রের মহড়া, গ্রেফতার ৩। - ছবি : নয়া দিগন্ত

আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর বাসার সামনে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এখনো আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি।

শনিবার (১০ জুন) ভোরে নগরের বনকলাপাড়া ও হাজীপাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন বনকলাপাড়া এলাকার আতিকুর রহমান (৪২), জুবের আহমদ (৩৮) ও হাজীপাড়ার নুরুজ্জামান (৩৪)। তারা সবাই মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের অনুসারী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদীপ দাস নয়া দিগন্তকে বলেন, গ্রেফতার জুবের আহমদ ও নুরুজ্জামানের অস্ত্র নিয়ে মহড়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সায়ীদ মো: আবদুল্লাহর বাসার সামনে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়ার তিনটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলোর একটিতে বর্তমানে কাউন্সিলর আফতাব হোসেনকে মহড়া দিতে দেখা গেছে। অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়ার চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। পাশাপাশি অস্ত্র হাতে থাকা ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ওরফে তুহিনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

একটি সূত্র জানিয়েছে, অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ নেতা তুহিন ঘটনার পর এলাকায় অবস্থান করলেও বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছে।

তবে পুলিশ বলছে, তাকে গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো: আবদুল্লাহ তার বাসার সামনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফতাব হোসেন খান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়ার পাশাপাশি ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিতভাবে পুলিশ কমিশনারকে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপরই পুলিশ কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো: আবদুল্লাহর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় এ মামলা হয়েছে। এতে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খানকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ এবং আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন-২০১৯ অনুযায়ী, ত্রাস সৃষ্টি করে ভয়-ভীতি ছড়ানোসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে মামলাটি হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগে কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো: আবদুল্লাহ বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে বর্তমান কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার বাসার গেটের সামনে আসে। এ সময় সন্ত্রাসীরা বন্দুক তাক করে তাকে (আবদুল্লাহ) ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয়। পাশাপাশি ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়।

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আফতাব ঘুড়ি প্রতীক, সায়ীদ মো: আবদুল্লাহ লাটিম প্রতীক ও মো: জাহিদ খান সায়েক ঠেলাগাড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement