২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
বন্যার প্রভাব

সিলেটে পশুর হাটে নেই ক্রেতা

সিলেটে পশুর হাটে নেই ক্রেতা - ছবি : নয়া দিগন্ত

সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে প্রাণিসম্পদের। বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী বন্যায় মারা গেছে মহিষ ও ছাগল-ভেড়াসহ গৃহপালিত ২১ হাজার পশু। এর মধ্যেই দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা।

ঈদকে ঘিরে স্বস্তি নেই খামারিদের মনে। বন্যায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন খামার মালিকরাও।

নিজ খামারের ২৩টি গরু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেট নগরীর কাস্টঘরের খামারি জসিম উদ্দিন। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ধার-দেনা করে ২৩টি গরু আট মাস ধরে খামারে রেখে পরিচর্যা করছেন তিনি। খামারে আছে তিনজন শ্রমিক। কিন্তু তৃতীয় দফার বন্যায় পানিতে তলিয়ে যায় জসিম উদ্দিনের গরুর খামার। এতে খাামারের গরুগুলো মেইন রাস্তার পাশে একটি ত্রিপল টাঙিয়ে স্থানান্তর করেন তিনি। কিন্তু ঈদের মাত্র পাঁচ দিন হাতে থাকলেও দুঃশ্চিন্তার অন্ত নেই জসিমের। যে হাটে তিনি গরুগুলো বিক্রির জন্য তুলবেন। নগরীর বৃহত্তম সেই হাট কাজিরবাজারে শনিবার পর্যন্ত পশুর সংখ্যা ছিল হতাশাজনক। সেখানে এখনো বিক্রেতার সাক্ষাৎ পাননি তিনি।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালবাজার এলাকার খামারি আব্দুস সাত্তার ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খামার গড়ে তুলেছেন। সেখানে এখন বিক্রির উপযুক্ত গরু আছে ৪০টি। ঈদে সেগুলো বিক্রি করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু এখনো হাট না বসায় তিনি লোকসানের শঙ্কায় আছেন।

আব্দুস সাত্তার বলেন, হাটের জায়গাগুলো এখনো পশু বিক্রির উপযোগী হয়নি। তাই শঙ্কায় আছি। শেষ দিকে হাট বসলেও আশানুরূপ ব্যবসা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যায় সব মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ। এখন জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে উঠেছে অনেকের। কোরবানি দেয়ার মতো পয়সা বেশিরভাগের হাতেই নেই। এ কারণে এবার পশু বিক্রি কমে যাবে। আবার বিক্রি হলেও আশানুরূপ দাম পাওয়া যাবে না।

তিনি জানান, গো-খাদ্যের সংকট রয়েছে। গরুগুলো না পারছি রাখতে, না পারছি বিক্রি করতে।

কাজিরবাজার পশুর হাটের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন জানান, সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার খামারি ও ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে পশু নিয়ে আসেন। এবার বন্যায় বেশিরভাগ সড়ক তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে কেউ পশু নিয়েও আসতে পারছেন না। তবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, দু’একদিনের মধ্যে হাটে পশুর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি আনাগোনা বাড়বে ক্রেতা-বিক্রেতারও।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, সিলেট বিভাগে ১৪ হাজার ৯৭১ জন খামারীর কাছে দু’লাখ ৪৩ হাজার ৮০৩টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৯১ হাজার ৩৭৫টি ষাঁড়, ২৭ হাজার ৪৬৬টি বলদ, ২৩ হাজার ৪৯০টি গাভী, ৮ হাজার ৯৩৬টি মহিষ, ৬২ হাজার ৬১৩টি ছাগল ও ২৯ হাজার ৯২৩টি ভেড়া রয়েছে। এছাড়া পারিবারিকভাবে আরো এক লাখ ৫০ হাজার ৪০৩টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ সিলেট সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহায় সিলেট জেলায় ৭৭ হাজার ৩৯২টি কোরবানীযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড়, বলদ ও গাভী আছে ৪৩ হাজার ৭৭৪টি, মহিষ চার হাজার ৬৫২ টি ও ছাগল-ভেড়া ২৮ হাজার ৯৬৬টি।

সুনামগঞ্জ জেলায় ৬৯ হাজার ২৮৯টি কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ষাঁড়, বলদ ও গাভীর সংখ্যা ৪৬ হাজার ৮২৮টি, এক হাজার ৭৯৪টি মহিষ, ২০ হাজার ৬৬৭টি ভেড়া-ছাগল রয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলায় ৩৯ হাজার ১৩টি কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ষাড়, বলদ ও গাভী রয়েছে ১৯ হাজার ৪১৭টি, মহিষ ১ হাজার ৭৫৭টি, ছাগল-ভেড়া আছে ১৭ হাজার ৮৩৯টি।

হবিগঞ্জ জেলায় ৫৮ হাজার ১০৯টি কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ষাঁড়, বলদ ও গাভী আছে ৩২ হাজার ৩১২টি, মহিষ আছে ৭৩৩টি ও ছাগল-ভেড়া আছে ২৫ হাজার ৬৪টি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, তিন দফা বন্যার পরও সিলেটে ঘাটতি হবে না কুরবানিযোগ্য পশুর।

কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সিলেটের বাহিরে থেকে প্রতিবারই প্রচুর পরিমাণ পশু সিলেটে আসে। যে কারণে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ বছর কোরবানিও কমতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

উল্লেখ্য, সিলেট জেলা ও মহানগরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪১টি কোরবানির পশুর হাট বসার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।


আরো সংবাদ



premium cement
অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান

সকল