২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিয়ানীবাজারে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত, দোকানপাট ভাংচুর

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগরে তিন দিন আগে ঘটে যাওয়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার দু’গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

ইউনিয়নের আলীনগর ও টিকরপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী চলা রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালানো হয়েছে।

জানা যায়, শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পূর্ব বিরোধের জেরে দু’পক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় আশাপাশের এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড টিআরসেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে পুলিশের চার সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশত আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ জনকে সিলেট এমএজি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্যদের প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তিন দিন আগে আলীনগর গ্রামের অটোরিকশাচালক নজর আলীর সাথে টিকরপাড়া এলাকার যুবক সাদিকসহ কয়েকজন প্রথমে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে যুবকরা অটোরিকশাচালককে মারধর করে। বিষয়টি আলীনগর এলাকাবাসী জানার পর গ্রামজুড়ে উত্তেজনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে শনিবার দুপুরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’গ্রামবাসী। সংঘর্ষ চলাকালে দু’গ্রামের মসজিদের মাইকে সংঘর্ষের ঘটনা প্রচার করা হলে শত শত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সিলেট-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক

মহাসড়ক দু’ঘণ্টা অবরোধ ছিল। এতে অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কিছু পণ্য ও ব্যক্তিগত গাড়ি আটকা পড়ে।

স্থানীয় যুবক আবু হানিফ জানান, দু’দিন আগে থেকে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। শুক্রবার রাতে টিকরপাড়া এলাকার এক ব্যক্তি ধান ভাঙ্গাতে রাইস মিলে গেলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। শনিবার দুপুরে মাইকে প্রচার করে দু’গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়ায়।

খবর পেয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) জাকির হোসেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায়, ওসি (তদন্ত) মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সামাজিক নেতৃবৃন্দের হেস্তক্ষেপে দু’গ্রামবাসীর উত্তেজনা দমন করেন। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ (সার্কেল) জাকির হোসেন জানান, গ্রামবাসীর ছোড়া ডিল থেকে পুলিশের তিন থেকে চারজন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ পাঁচ রাউন্ড টিআরসেল নিক্ষেপ করে।

তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে উভয় গ্রামের তিনজন করে ছয়জন মুরব্বিদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে তাৎক্ষণিক বৈঠক করা হয়। এ সময় দু’গ্রামের মুরব্বিরা আবার সংঘর্ষ হবে বলে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দায়িত্বশীলদের জানান।

তিনি বলেন, বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে দু’গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এবং উভয় পক্ষের মুরব্বিদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement