২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে অফিসের বারান্দায় সন্তান প্রসব

হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে অফিসের বারান্দায় সন্তান প্রসব -

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হাসপাতালের অদূরে সরকারি অফিসের বারান্দায় সন্তান প্রসব করলেন গ্রাম থেকে আসা রেসমিনা বেগম (২৪) নামের এক নারী। তিনি দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের দলকুতুব গ্রামের রুবেল মিয়ার স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে প্রধান ফটক সংলগ্ন দিরাই উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসের বারান্দায় তিনি সন্তান প্রসব করেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সকালে রেসমিনার প্রসব ব্যাথা ওঠলে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন তাকে দিরাইয়ে নিয়ে আসেন।

দিরাই উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত মিড ওয়াইফ শিপ্রা রানী দাস বলেন, আমি আরেকজন প্রসূতি মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছিলাম। প্রসূতি রেসমিনাকে সিটে বসে অপেক্ষা করতে বলছিলাম কিন্ত তার স্বামী অপেক্ষা না করেই তাকে নিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। পরে জানতে পারি তারা সিলেটে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছিলেন। কিন্ত অ্যাম্বুলেন্সে তোলার আগেই ওই প্রসূতি মা সন্তান প্রসব করেন।

তিনি আরো বলেন, তার স্বামী হাসপাতাল থেকে কোনো রকমের চিকিৎসার কাগজ পত্র না নিয়ে এমন কী রেফার্ডের কাগজ না নিয়ে নিজ উদ্যোগে সব করেছেন। এখন দোষারোপ করছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার বিদ্যুৎ রঞ্জন দাস বলেন, আমি সকালে জরুরি বিভাগে ডিউটিতে ছিলাম। আমার কাছে রেসমিনা নামে কোনো রোগী
জরুরি বিভাগে আসেনি।

রেসমিনার স্বামী রুবেল মিয়া বলেন, সকাল ১১টার দিকে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হলে আমরা তাৎক্ষণিক দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। সেখানে ডাক্তার না পেয়ে প্রাইভেট চিকিৎসা করাই। পরে প্রাইভেট ডাক্তারের কথায় আবার হাসপাতালে এলে আমার স্ত্রীকে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই সিলেট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন ধাত্রী। নিরুপায় হয়ে হাসপাতাল থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হলে হাসপাতালের প্রধান ফটকের
অদূরে গাড়ির পাশে গেলে প্রসবের ব্যাথা বেড়ে যায় পরে একটি অফিসের বারান্দায় নবজাতকের জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক মেয়ে সুস্থ আছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা স্বাধীন কুমার দাস বলেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক কে ছিল আমার জানা নেই, আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন মো: শামছ উদ্দিন বলেন, রেসমিনাকে দিরাইয়ে একটি প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তার দেখান স্বামী। ওই ডাক্তার তাকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পরামর্শ দেন। তারপর তিনি ভর্তির প্রচলিত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে জরুরি বিভাগের ডাক্তারকে না দেখিয়ে কোনো কাগজ-পত্র ছাড়াই মিড ওয়াইফের কাছে চলে যান। মিড ওয়াইফ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার আগেই প্রসূতির স্বামী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসেন তাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ সময় তার সন্তান প্রসব হয়।

তিনি আরো বলেন, রেসমিনা নামে কোন প্রসূতিকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়নি বা কোথাও রেফার্ড করা হয়নি। তবে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিড ওয়াইফ শিপ্রা রানী দাস তাকে জানিয়েছেন রেসমিনা নামের একজন প্রসূতিকে তার স্বামী চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কোনো ধরনের চিকিৎসায় গাফিলতি হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement