১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দোয়ারাবাজারের খামারিরা

কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দোয়ারাবাজারের খামারিরা - ছবি : নয়া দিগন্ত

করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবে থমকে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। ফলে আসন্ন কোরবানিকে ঘিরে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ছোট-বড় শতাধিক গো-খামার ও কৃষকের ঘরে মোটাতাজা করা কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি জাতের কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে খামারিরা। কোরবানির পশুর দাম সঠিকভাবে পাওয়া যাবে কি-না তা নিয়ে সংশয়ে আছনে ওই এলাকার ১২৮টি গরু লালন-পালনকারী খামারি।

এছাড়া উপজলোর গ্রামগঞ্জের হাজারো কৃষক নিজ গৃহে কয়কে হাজার দেশি বলদ, ষাঁড় মোটাতাজা করে থাকেন। ছোট-মাঝারি গরু থাকলেও ক্রেতা শূন্য! ফলে খামারে মোটাতাজা করা গরু নিয়ে চিন্তিত তারা। গরু বিক্রি করতে পারবেন কি-না অথবা সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভুগছনে তারা। মুনাফা লাভের আশায় যে গরু তারা লালন-পালন করছেনে সঠিক দাম না পেলে অনেক খামারিকে পথে বসতে হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। স্বল্প আয়ের পরিবারে যারা গরু পালন করেছেন। তারা আরো বিপদে পড়বেন। করোনার এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোরবানির গরু ব্যবসায়ী ও লালন-পালনকারী পরিবারগুলো যাতে করে সঠিক দাম পায় তার জন্য সরকারের সাহায্য চান ব্যবসায়ীরা।

তারা আরো বলেন, দোয়ারাবাজারের দুটি পশুর হাট-বাংলাবাজার ও বোগলা বাজার হাটটি যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রশাসনের তদারকিতে খুলে দেয়া হয় তাহলে আমাদরে গরুগুলো বিক্রি করতে পারব।

উপজলো প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, কোরবানিতে অন্যান্য বারের চেয়ে একটু বেশি দাম পেয়ে কোরবানির পশু বিক্রি করে অধিক মুনাফার আশায় দোয়ারাবাজার উপজলোয় ৩ হাজার ৮৯৮টি গরু, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করছেন ১২৮টি খামারি ও ব্যবসায়ী। কিন্তু করোনার কারণে এবার কোরবানিতে পশু বিক্রি করতে পারবে কি-না তা নিয়ে সংশয়ে আছনে খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এক দিকে গরু বিক্রি আর অন্য দিকে সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তিত তারা। বিগত সময়ে কোরবানিকে ঘিরে এখানকার হাট-বাজার, গ্রামগঞ্জে পাইকারদের আনাগোনায় মূখরিত হয়ে উঠেতো কোরবানির পশু বেচা-কেনা। আর এ বছর ‘করোনা’ আতঙ্কে এখন পর্যন্ত জনপদের কোথাও কোরবানির গরুর খোঁজে কেউই আসেনি।

উপজলোর কুশিউড়া গ্রামরে পশু চিকিৎসক মহিউদ্দিন বলনে, প্রতি বছর কোরবানির বাজারে দেশি গরুর চাহিদা অতুলনীয়। কোরবানির এক দেড়মাস আগ থেকেই শহরের ব্যবসায়ীরা গরুর খোঁজে বাড়ি বাড়ি আসতে শুরু করেন। ফলে এখানকার ঘরে ঘরে কম-বেশি দেশি বলদ, ষাঁড় দেশি পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়। অনেকে আবার এ খাতে ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গরু বর্গা দিয়ে রাখেন।

উপজেলার ঝুমগাঁও গ্রামের হাছিব উদ্দিন, কুশিউড়া গ্রামের আকবর আলী ও ঢালিয়া গ্রামের আব্দুল বারিক বলনে, আমরা নিজ বাড়িতে দেশিয় পদ্ধতিতে সামান্য পুঁজি বিনিয়োগ করে ৫ থেকে ৭টি দেশিয় বলদ, ষাঁড় লালন-পালন করে কোরবানির জন্য বিক্রি করে থাকি। এ বছর ‘করোনা’র ছোবলে জনজীবনে কোরবানির আনন্দে ভাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে! ফলে এ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।

উপজলোর ঝুমগাঁও গ্রামরে গরুর খামারি সিরাজ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বছর আমার খামারে দেশি জাতের ১০টি গরু আছে। কিন্তু করোনার কারণে কোনো ক্রেতা আসছে না। আবার গো খাদ্যের দামও খুব বেশি। একটা গরু প্রন্তুত করতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই অবস্থায় যদি গরু বিক্রি করতে না পারি তাহলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আবার দোয়ারাবাজারে করোনার কারণে পশুর হাটগুলো রয়েছে ঝুকিপূর্ণ। গরুর ন্যায্যমূল্য পেতে উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে হাটবাজার খুলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরু বিক্রিতে সহায়তা কামনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement