২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শয্যাশায়ী মা-বাবা

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শয্যাশায়ী মা-বাবা - নয়া দিগন্ত

শায়েস্তাগঞ্জের নুরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নছরতপুর গ্রামের স্কুলছাত্র তানভীরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে একই এলাকার তিন যুবক। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তানভীরকে হত্যা করে তারা। ঘটনাটি পরিণত হয় ওই উপজেলার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নিহত তানভীর স্থানীয় হাজী আফরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তানভীর। বাবা ফারুক মিয়া একজন ব্যবসায়ী। বয়স ৫০ ছুঁইছঁই। মা উজ্জ্বলা বেগম বয়স ৪০-এর কাছাকাছি। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এখন শয্যাশায়ী উজ্জ্বলা বেগম।

মানসিকভাবে ভেঙে পডেছেন প্রচণ্ডভাবে। সন্তানের শোকে তিন দিন ধরে খাননি কিছুই। ফারুক মিয়াও কাতর ছেলের শোকে। কতই না স্বপ্নছিল একমাত্র ছেলে তানভীরকে ঘিরে। ছেলে তো আর বেঁচে নেই তবে কী নিয়ে বাঁচবেন এ দম্পতি? তানভীরের শোক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকা জুড়ে। বাতাস যেন ভারী হয়ে এসেছি নছরতপুরের। এ শোক ছড়িয়েছে স্কুলের সহপাঠীদের মাঝেও।

এরআগে ২৪ জানুয়ারি রাত ৮টা থেকে নিখোঁজ ছিলেন তানভীর। ঘটনার দিন রাতে তানভীরের মোবাইল থেকেই ফোন আসে বাবা ফারুক মিয়ার কাছে। ফোনটি করেছে অপহরণকারীরা। ফোনে ৮০ লাখ টাকা চাওয়া হয় ছেলের বিনিময়ে। না হয় মেরে ফেলা হবে তানভীরকে। বিষয়টি তানভীরের বাবা অবগত করেন থানা পুলিশকে। পরে মোবাইলের নাম্বার ট্রাকিং করে বের করা হয় অপহরণকারীদের লোকেশন। দেখা যায় ফোনটি এসেছে চুনারুঘাট এলাকা থেকে। পরে এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনকভাবে রোববার রাতেই নুরপুর গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে জাহেদ ও নুরপুরের মালাই মিয়ার ছেলে শান্তকে আটক করে। করা হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় ঘটনার মূল হোতা উজ্জ্বলকে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে ওই দিন দুপুরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় তানভীরের লাশ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তানভীরকে গলায় ফাঁস ও বুকে ছুরি দিয়ে মেরে ফেলে রেখে দেয় তারা, পরে লোকেশন পরিবর্তন করে টাকা চায় তানভীরের বাবার কাছে।

তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি তানভীরের বাবা বেশ কয়েকটি জায়গা বিক্রি করেছিলেন। তার বাবার ব্যাংক একাউন্টে টাকা আছে এ বিষয়টি জানতেন একই এলাকা উজ্জ্বল, শান্ত ও জাহেদ। জমি বিক্রির এ টাকাই কাল হয়ে এসেছে তানভীরের বাবা মায়ের জীবনে। হারাতে হয়েছে একমাত্র সন্তানকে।

নিহত তানভীরের বাবা ফারুক মিয়া বলেন, ‘আমি আমার একমাত্র ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই। খুনিরা আমার মানিককে আমার বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে। আমি এদের ফাঁসি দেখে মরতে চাই। এদের ফাঁসি দেখে যেতে না পারলে আমি মরেও শান্তি পাব না।’


আরো সংবাদ



premium cement