এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ : রনিকে ধরিয়ে দিতে এলাকাবাসীর প্রচারণা
- মোঃ আব্দুর রকিব, শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:১৪, আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:১৬
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বাগুনিপাড়া গ্রামের শাহ্ জাহাঙ্গীরের ছেলে শাহ্ মাহবুবুর রহমান রনি। সিলেট এমসি কলেজের ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কারণে রনি ও তার পরিবারের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করছেন এলাকার সর্বস্তরের লোকজন। পাশাপাশি রনিকে ধরিয়ে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ। সিলেটের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে শায়েস্তাগঞ্জের রনিসহ ছয়জন চিহ্নিত হয়েছে।
জানা যায়, শাহ্ মাহবুবুর রহমান রনি শায়েস্তাগঞ্জ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে এমসি কলেজ সিলেটে স্নাতকে ভর্তি হয়। সেখানে বিভিন্ন ধরণের নেশা, বখাটেপনা, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা ছিল তার নিত্যদিনের কাজ। সিলেট যাওয়ার পর বড়ভাইদের ছত্র-ছায়ায় রনি হয়ে উঠে বেপরোয়া। এমসি কলেজের ছাত্রবাস ভাঙচুর ও পোড়ানোর সাথেও সে জড়িত ছিল বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এমসি কলেজের ক্যাম্পাসটি অত্যন্ত মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন বিকেলে শতশত দর্শনার্থী ঘুরতে যান। সেই পর্যটকদের টাকা, মোবাইল, মোটরসাইকেল, দামি হাতঘড়ি, নারীদের সোনার-গহনা ছিনতাইয়ের মূল চক্রের অন্যতম সহযোগী ছিলো শায়েস্তাগঞ্জের রনি।
এলাকাবাসীর দাবি, বেকার রনির উপর ভর করেই তার পরিবার ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ হয়েছেন। সিলেটে চাঁদাবাজি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা বাড়িতে পাঠাত রনি। এলাকায় আসলে নিজেকে অনেক বড় নেতা দাবি করত সে।
এদিকে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে রনি জড়িত থাকায় লজ্জিত হয়েছেন শায়েস্তাগঞ্জ জেলাবাসী। তাই রনির প্রতি ঘৃণা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ফেসবুকে। পাশাপাশি রনিকে ‘কুলাঙ্গার’ উপাধি দিয়ে ধরিয়ে দিতে ফেসবুকে তার ছবিসহ স্ট্যাটাস দিচ্ছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ। নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এলাকাবাসীও।
এ বিষয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান শনিবার জানিয়েছেন, ওই গৃহবধূ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে গতকাল রাতে রনির শায়েস্তাগঞ্জ বাগুণিপাড়া গ্রামের বাড়িতে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থা রনিকে গ্রেফতারের জন্য তার বাড়িটি নজরদারীর আওতায় রেখেছে। তবে রনি গ্রেফতার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত আল-মামুন জানান, ঘটনাটি অতীব নিন্দনীয়। এটি জাতীয় ইস্যু। রনিকে গ্রেফতারের জন্য আমরা বিভিন্ন স্থানে তল্লাশী চালিয়ে যাচ্ছি। তার বাড়িও নজরদারীতে রয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল তালুকদার জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত রনি শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা। সে এ ধরণের ঘটনার সাথে জড়িত হয়ে এলাকাকে কলঙ্কিত করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। রনির এ ধরণের অপকর্মের জন্য তার নিজ গ্রামের মানুষ বিক্ষুব্ধ ও ঘৃণা প্রকাশ করছে। তারা তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সিলেট শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর রাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালানো হয়। এসময় সাইফুর রহমানের রুম থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা