২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শব্দদূষণে মতে উঠেছে পর্যটকরা

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শব্দদূষণে মতে উঠেছে পর্যটকরা -

টাংগুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন পর্যটনস্পষ্টগুলোতে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের আগমনে সরগরম পুরো হাওরজুড়ে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পরও দলবেঁধে নৌকা, স্পীডবোট দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীরা এসে শব্দদূষণে মেতে উঠেছে।

ঈদ ও ঈদ পরর্বতীতে আগমনের সংখ্যা ও তাদের জ্ঞানহীনতা, করোনা স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি রীতিমতো আতঙ্কে ফেলেছে হাওরবাসীকে।

এখনি প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি না বাড়ালে তাহিরপুরে করোনার কঠিন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশংকায় গত ১৯ মার্চ থেকে পর্যটক আগমনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ফাঁকা ছিল তাহিরপুর উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো।

করোনাকালীন সময়ে কোরবানি ঈদে মাস্ক বা শারীরিক দূরত্বের স্বাস্থ্যবিধি কেউই মানছেন না টাংগুয়ার হাওর, ট্যাকেরঘাট এলাকায় শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী লেক), বারেকের টিলা, যাদুকাটা নদী ও শিমুল বাগানে আগত পর্যটকরা। তারা স্পীডবোটে ও বড় ও ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে দলবদ্ধভাবে উচ্চ স্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে নাচানাচি করে হাওরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকেই আবার রাত্রি যাপনও করছেন নৌকাতেই।

স্থানীয়রা জানায়, গত এক মাস ধরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন পর্যটকেরা। তাহিরপুর উপজেলার বাজারের নৌকাঘাট থেকে ও থানার ঘাট থেকে স্পীডবোট দিয়ে যাতায়াত করছে পর্যটকরা।

কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন বাধা না থাকায় তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

টাংগুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন পর্যটনস্পটে আসা আলি মিয়াসহ অনেকেই জানান, করোনাকালীন সময়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আমরা বন্ধুরা মিলে আগেও এসেছিলাম এবারও ঈদের আনন্দ করতে হাওরে জোছনা আর পাহাড়ের মেলবন্ধন চোখে পড়ে টাংগুয়ার হাওরে তাই দেখতে এসেছি।

টাংগুয়ার হাওর বেড়াতে আসা পর্যটক মোনায়েম রাজা জানান, আজ বেড়াতে এসেছি বন্ধু বান্ধব নিয়ে। এখানে আসলে ভাল লাগে আর কিছুটা প্রকৃতির কাছা কাছি আসা যায়। নিরমল বিশুদ্ধ বাতাশ আর কোলাহলমুক্ত পরিবেশে সময়টা অন্য রখম কাটে। এবার অনেক পর্যটক এসেছে।

টেকেরঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নূর ইসলাম জানান, প্রচুর পরিমানে পর্যটক নৌকা, স্পীডবোট দিয়ে দলবেঁধে আসছে দেশের বিভিন্ন স্থানের পর্যটক ও দর্শনার্থীরা হাওরে ও আমাদের এলাকায়।

টাংগুয়ার হাওর পাড়ের বাসিন্দা শফিক মিয়া জানান, শত শত পর্যটকবাহী নৌকা ঢাক ডোল বাজিয়ে করোনাকালীন সময়ে পর্যটকদের আগমনে পরিবেশ নষ্ট করে টাংগুয়ার হাওরে প্রবেশ করছে। শুনেছিলাম পর্যটক আসা নিষিদ্ধ এর পর কিভাবে পর্যটকরা আসছে বুঝতে পারছি না। মাইকের আওয়াজে বসতবাড়িতে অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা হাদিউজ্জামান জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার পর্যটকবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে আবার অনেকেরই গান গেয়ে টাংগুয়ার হাওরে প্রবেশ করছে। বসতবাড়িতে অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্দু বাবুল চৌধুরী বলেন, এই মহামারির সময়টায় হাওরে পর্যটকদের আসতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এটা সবার ভালোর জন্যই।
করোনাকালীন সময়েও যদি এভাবে পর্যটক আসে তাহলে তাহিরপুরবাসীর জন্য করোনা মোকাবেলা কঠিন হয়ে পড়বে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরুতেই করোনা প্রতিরোধ উপজেলার প্রতিটি পর্যটন স্পটে পর্যটকদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ সত্ত্বেও যারা আসছেন তারা ব্যক্তিগতভাবেই আসছেন।


আরো সংবাদ



premium cement