ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার নর্দমার পানিতে সয়লাব
- ওসমানীনগর (সিলেট) সংবাদদাতা
- ০৪ জুন ২০২০, ২১:৪২, আপডেট: ০৪ জুন ২০২০, ২১:২৯
সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে সামান্য বৃষ্টি হলেই অধিকাংশ গলি ও প্রধান সড়কগুলো নর্দমার পানি এসে ভরে যায়। নর্দমার পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে হাঁটতে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সওদা করতে বাজারে আসা হাজার হাজার পথচারীদের পড়তে হয় চরম বিপাকে।
তাছাড়া বাজারের মধ্যখান দিয়ে চলে যাওয়া সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ফলের দোকান থেকে আবর্জনা ফেলে রাখার কারণে এসব ফলের আবর্জনা পঁচে বাজারে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে বিপর্যস্থ হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন এলাকার হাজার হাজার লোকজন।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় সকাল ১১টায় উপজেলার গোযালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ রোড, হাজি নছিব উল্লাহ মার্কেট, পূর্ব বাজার, গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় রোড, করনসীরোডসহ অধিকাংশ সড়কে প্রায় হাটু পানি জমে যায়। এ সময় এসব সড়ক দিয়ে দূরদূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন গ্রামের শত শত লোকদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে দুপুর ১টা নাগাদ গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদে গুরুত্বপূর্ণ কাজে আসা লোকজনও পড়েন চরম বিপাকে। নর্দমার ময়লা পানিতে তাদের পায়ের জুতা, মহিলাদের পরনের কাপড় ভিজে যায়।
গোয়ালাবাজার স্কুল রোডের বাসিন্দা সোহান অভিযোগ করেন, তাদের পাড়ার একজন প্রবাসী ব্যক্তি সড়কের পার্শ্বের নর্দমা ভরে বাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করায় তার বাসার সামনের রোডে প্রতিনিয়ত হাটু পানি জমে থাকে।
বাজার থেকে কিছু কিনতে হলে, বাজার থেকে মোবাইলে রিক্সা ডেকে নিয়ে রিক্সায় চড়ে বাজারে আসা যাওয়া করতে হয়। তাছাড়া একটি বাড়ির মালিক কর্তৃক নর্দমা বন্ধ করার কারণে বৃষ্টি হলে গোয়ালাবাজার-স্কুল রোড-গদিয়ারচর রাস্তায় প্রায় হাটুর নীচে পানি উঠে যায়। এসময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আশ পাশের গ্রামের মানুষকে চরম কষ্ট পোহাতে হয়। সরকারি পাকা সড়কে প্রতিনিয়ত পানি ওঠার কারণে সড়কটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এতে সরকারের কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হবে।
গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ রোডে অবস্থিত ভিশন কম্পিউটারের পরিচালক অজয় কুমার দেব জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের মার্কেটের সামনে প্রায় হাটু জল জমে যায়। স্থানীয় ইউপি কার্যালয়, মসজিদের পাশের নর্দমা ভরে পানি প্রায়ই উপচে পড়ে সড়কে উঠে যায়। সকালে ইউপি কার্যালয় ও মার্কেটে লোকজন নর্দমার পানিতে ভিজে আসতে হয়েছে। করোনা মহামারির সময় ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে নর্দমা পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাজী নছিব উল্লাহ মার্কেটের এক ব্যবসায়ী জানান, একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের মার্কেটে হাটু পানির বেশি পানি জমে থাকে। আশপাশের লোকজন মার্কেটের ভিতরে মাছ শিকার করতে আসেন। আজও মার্কেটের ভিতরে প্রচুর পানি উঠেছিলো। মার্কেটের কোনো নর্দমা না থাকায় এ অবস্থা হয়ে থাকে। মার্কেটে একটি নর্দমা করা প্রয়োজন।
স্থানীয় গোয়ালাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক জানান, বর্তমানে গোয়ালাবাজার একটি বাণিজ্যিক শহরে পরিণত হয়েছে। অপরিকল্পিত বাসা বাড়ি ও দোকানপাট হওয়ায় জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে। গোয়ালাবাজারকে স্থায়ী জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করতে হলে একটি মাস্টার প্লান নিয়ে কাজ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: তাহমিনা আক্তার বলেন, আজ থেকে ৪ মাস আগে গোয়ালাবাজার উন্নয়নের জন্য একটি প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছিলো। করোনা এসে সব নষ্ট করে দিয়েছে। বাজারের ভিতরে যাতে ময়লা আবর্জনা ফেলা না হয় এ জন্য শীঘ্রই স্থানীয় চেয়ারম্যান ও বাজার ইজারাদারদের নিয়ে আবার বসবো। এখন বর্ষাকাল। জুন ক্লোজিং চলছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রজেক্ট করে এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা