২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাছ বিক্রেতার ছেলে রাকিব জিপিএ-৫ পেয়েছে

ছবিতে মা ও ভাইদের সাথ জিপিএ-৫ পাওয়া রাকিব - ছবি : নয়া দিগন্ত

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে আরিফুল ইসলাম রাকিব। সে উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মাছ বিক্রেতা মোঃ কদর হোসেনের ছেলে। তার বাবা কদর হোসেন মাছ বিক্রি করে সংসার চালান। রাকিব ছাড়াও তার আরো এক ভাই এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। তবে অল্পের জন্য মেঝ ভাই জিপিএ-৫ পায়নি।

রাকিবের আরো দুই ভাই আছে। সেঝ ভাই জহিরুল ইসলাম সাজিব সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে আর ছোট ভাই সাদেকুল ইসলাম মোজাম্মেল তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে।

বাবা কদর হোসেন বলেন, আমার বড় ছেলে রাকিবের ফলাফলে আমি ভীষণ খুশি, যা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ছেলেটা গরীব বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমি বিভিন্ন ডোবা-নালায়, খালে-বিলে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। কখনো-কখনো কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। আমার বড় ছেলে রাকিব ও সংসার চলানোর জন্যে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে। আমি আমার ছেলেকে ডাক্তার বানাতে চাই। তবে আমার তো আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। কীভাবে কী করবো বুঝে উঠতে পারছি না।

এদিকে ছেলে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আনন্দের মাঝেও বারবার ভাবছেন কীভাবে ছেলেকে কলেজে ভর্তি করবেন? ভর্তির টাকা কোথায় পাবেন?

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, মফস্বলের স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া এত সহজ কথা নয়। আরিফুল ইসলাম রাকিব খুবই মেধাবী একজন ছাত্র, সে আমাদের স্কুলের গর্ব। ভবিষ্যতে সে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। আরিফুল ইসলাম রাকিব স্বপ্ন পূরণের পথে কেবল মাত্র প্রথম ধাপ পেরিয়েছে। সফলতার সাথে পাড়ি দিতে হবে আরো অনেক পথ। সব বাধা পেরিয়ে রাকিবের উচ্চ শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়ার জন্য দরকার সবার দোয়া ও সহযোগিতা, না হলে অকালেই ঝড়ে পড়বে রাকিবদের মত মেধাবীরা।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, নিজের ইচ্ছা শক্তি আর পরিশ্রম করলে ভালো রেজাল্ট করা যায়, রাকিব তার উজ্জল দৃষ্টান্ত। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বাবার সাথে বিভিন্ন কাজে সহযোগীতা করেও রাকিব জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভবিষ্যতে রাকিবের পড়াশোনার জন্য আমি তার পাশে থাকবো।


আরো সংবাদ



premium cement