১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মোদি এবং ভারত বিভক্তির সমীকরণ

নরেন্দ্র মোদি - ফাইল ছবি

নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসার পর গত ১০ বছরে ভারতের রাজনৈতিক পটভূমি পাল্টে দিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা দলকে ছাড়িয়ে গেছে। সংসদীয় নির্বাচনের চেহারা বদলে ক্রমশ প্রেসিডেন্সিয়াল ধাঁচের নির্বাচনে পরিণত হয়েছে।

এর ফলে, বিজেপি ক্ষমতায় থাকার জন্য ক্রমশ মোদি ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করছে। এমনকি রাজ্য বিধান সভা নির্বাচনেও স্থানীয় নেতারা পেছনের সারিতে চলে যাচ্ছেন।

'মোদি শুধু প্রধান প্রচারকারী ছিলেন না, এই নির্বাচনে তিনি ছিলেন একমাত্র প্রচারকারী' বলছেন ইয়ামিনি আইয়ার, একজন জননীতি বিষয়ক গবেষক।

মোদির সমর্থকরা তাকে দেখেন একজন স্বনির্ভর, শক্তিশালী নেতা হিসেবে, যিনি বিশ্বে ভারতের অবস্থান উন্নত করেছেন। তারা মোদির ব্যবসা-বান্ধব নীতিকে দেশের অর্থনীতি বিশ্বের পঞ্চম-বৃহত্তম হওয়ার কারণ হিসেবে দেখেন।

কিন্তু একই সাথে, তার এক দশকের শাসন ভারতকে গভীরভাবে বিভক্ত করেছে। তার সমালোচকরা বলছেন, মোদির হিন্দু-ভিত্তিক রাজনীতি দেশে অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা ছড়িয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের ওপর, বিশেষ করে মুসলিমদের ওপর নির্লজ্জ আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলিম।

মোদির অধীনে ভারতের অর্থনীতিতে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এক দিকে স্টক মার্কেট রেকর্ড সৃষ্টি করছে এবং কোটিপতির সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে; অন্যদিকে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব ব্যাপকহারে বাড়ছে। ভারতের অল্প সংখ্যক মানুষ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে লাভবান হচ্ছেন।

মোদির সমালোচকরা বলছেন, তার সরকারের অধীনে দেশের গণতন্ত্র নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিরোধীদের দমিয়ে রাখার জন্য সরকার ক্রমশ শক্তি ব্যবহার করছে, স্বাধীন মিডিয়ার জায়গা সীমিত করে দিচ্ছে এবং ভিন্নমত দমন করছে। সরকার সমালোচকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, দেশ গণতন্ত্র বিকশিত হচ্ছে।

এপ্রিলের মাঝা-মাঝি সময়ে যখন ভোট গ্রহণ শুরু হয়, তখন বিজেপি তাদের প্রচারণায় 'মোদির গ্যারান্টির' ওপর জোর দেয়, এবং অর্থনীতি, দারিদ্র বিমোচন ও সমাজসেবায় তার দলের সাফল্যের কথা প্রচার করে। মোদি একের পর এক জনসভায় বার বার বলেন যে দেশের হাল তার হাতে থাকলে, 'ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।'

মুসলিমদের নিশানা

তবে প্রচারণা এক পর্যায়ে ক্রমশ হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠে, এবং মোদির মেরুকরণকারী বক্তৃতাবাজি সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিশানা করে। এই কৌশল তার মূল হিন্দু ভোটারদের মাঝে নতুন প্রাণ সঞ্চার করে বলে মনে করা হয়।

তার বিরোধীপক্ষ, কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোট, মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সমালোচনা করেছে। তারা অর্থনীতি নিয়ে অসন্তোষ থেকে লাভবান হবার আশা করছে, এবং বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি আর বৈষম্য ঘিরে তাদের প্রচারণা চালিয়েছে।

কিন্তু এক ডজনেরও বেশি বিরোধী দলের এই জোটের কাজ আদর্শগত পার্থক্যর জন্য ব্যাহত হয়েছে এবং বেশ কিছু নেতা দলত্যাগও করেছেন। এর ফলে, জোটের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বিরোধীদের জোট আরো দাবি করছে যে তাদেরকে অন্যায় ভাবে নিশানা করা হয়েছে। তারা বলছেন, তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো তল্লাশি, গ্রেফতার এবং দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত চালিয়েছে, যেগুলো তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করেন। সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement
জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই ব্যর্থ হবে : আমিরে জামায়াত অবসরে গেলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ জিয়াউল করিম জাতিসঙ্ঘের আরো জোরদার সহযোগিতার আহ্বান ঢাকার আওয়ামী লীগ একটি পাপিষ্ঠ দলের নাম : মাসুদ সাঈদী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা : কুলাউড়ায় আ’লীগ নেতা আজাদ গ্রেফতার খুনকে অপমৃত্যু হিসেবে রেকর্ড করলেই ওসি দায়ী : ডিএমপি কমিশনার সিরিয়াকে বশে রাখতে দামেস্কের কাছে নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইসরাইল ভারতের সাথে বিদ্যুৎ নিয়ে চুক্তিগুলো বাতিল সহজ নয় : রিজওয়ানা হাসান গৌরনদীতে মাদককারবারির কারাদণ্ড ভারতের আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ, ভৈরবে বিএনপির পথসভা ওমানে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে প্রবাসীর মৃত্যু

সকল