১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মুসলিমদের ‘ওবিসি’ সংরক্ষণ বাতিলকে ঘিরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি

আদালতের রায় প্রকাশ্যে আসার পরই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। - ছবি : নয়া দিগন্ত

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ২০১০ সালের পর জারি করা অন্য অনগ্রসর শ্রেণি বা ‘ওবিসি’-দের শংসাপত্র বাতিলের রায়কে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতি।

বুধবার (২২ মে) দেশে ষষ্ঠ দফা ভোটের আগেই কলকাতা হাইকোর্ট তার রায়ে ২০১০ সালের পর থেকে জারি করা রাজ্যের সমস্ত ‘অন্য অনগ্রসর শ্রেণি’ বা ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে বাতিল হয়ে গিয়েছে পাঁচ লাখ ওবিসি সার্টিফিকেট, যার অধিকাংই মুসলিম সম্প্রদায়ের।

এই তালিকায় রয়েছে মোট ৭৭টি শ্রেণিকে দেয়া অন্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) শংসাপত্র, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম।

উল্লেখ্য, রাজ্যে মুসলিমদের ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়েছিল বামফ্রন্ট জমানায়। এরপর পশ্চিমবঙ্গে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার।

রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে আদালত জানিয়েছে, মূলত ‘নির্বাচনি মুনাফার’ জন্য ওই ৭৭টি শ্রেণিকে ওবিসি তালিকায় যোগ করা হয়েছিল। যা শুধুমাত্র সংবিধানের লঙ্ঘনই নয়, মুসলিমদের অবমাননাও।

তবে আদালতের তরফে জানানো হয়েছে ২০১০ সালের পর থেকে জারি করা ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হলেও সেটা ব্যবহার করে যারা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন, চাকরি করছেন, পদোন্নতি হয়েছে বা অন্য সুবিধা পেয়েছেন তাদের ওপর এই রায়ের কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ তার রায়ে ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনগ্রসর জাতি সংক্রান্ত বিধিকে বাতিল করেছে। ওই বিধির ১৬ নম্বর ধারা রাজ্য সরকারকে অনগ্রসর শ্রেণি সংক্রান্ত তফসিল ‘সংযোজন, সংশোধন বা পরিবর্তন’ করার অনুমতি দেয়।

ওই বিধি মেনে যে ৩৭টি শ্রেণিকে অন্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় যোগ করেছিল রাজ্য সরকার, তাও বাতিল করেছে আদালত। কারণ তা ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ করা হয়েছিল বলে তারা বলছে।

এই রায়ের পর পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল বলছে, মুসলিমদের সংরক্ষণ কেড়ে নিতে চায় বিজেপি সরকার।

আবার বামেদের অভিযোগ, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নের জন্য যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল তার ‘অপব্যবহার’ করেছে তৃণমূল। ভোটের কথা মাথায় রেখে নিয়ম না মেনেই জারি করা হয়েছে ওবিসি শংসাপত্র।

অন্য দিকে হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মতে, ‘ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে ‘তোষণের রাজনীতি’ করছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস- যা বন্ধ হওয়া দরকার।’

আদালতের নির্দেশে কী বলা হয়েছে?
পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি (তফসিলি জাতি ও উপজাতি ব্যতীত, চাকরি ও পদগুলোতে শূন্যপদ সংরক্ষণ) আইন, ২০১২-র বিধানগুলোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলারই রায় বুধবার ঘোষিত হয়েছে।

আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, অনগ্রসর জাতির তালিকায় নতুনভাবে কয়েকটি সম্প্রদায়কে অন্তুর্ভুক্ত করা এবং ওবিসি শংসাপত্র জারি করার ক্ষেত্রে অনগ্রসর জাতি সংরক্ষণ আইন মানা হয়নি।

নিয়মমাফিক জাতিগত সমীক্ষা হয়নি, খসড়া তালিকা সামনে আসেনি, কোনো রিপোর্টের ভিত্তিতে এই সংরক্ষণ তাও জানানো হয়নি। কেন কয়েকটি শ্রেণিকে ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হল, সে বিষয়েও সঠিক তথ্য পেশ করতে পারেনি রাজ্য সরকার।

ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে ২০১০ সালের বাম জমানায় সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। ওই বছর মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ১০ ভাগ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর জন্য তখন ক্ষমতায় থাকা বামপন্থীরা ‘ওবিসি-এ’ ক্যাটাগরি তৈরি করেছিল।

সে সময় অনগ্রসর জাতি কমিশনের তরফে অন্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় ৪২টি শ্রেণিকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ জানানো হয়। এর মধ্যে ৪১টি ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্গত।

মমতা ব্যানার্জীর সরকার ক্ষমতায় এলে ওবিসি-এ এবং ওবিসি-বি ক্যাটাগরি মিলিয়ে আরও ৩৭টি শ্রেণিকে ওই তালিকায় যোগ করে। এই পদক্ষেপ নেয়া হয় ২০১২ সালে।

কিন্তু যেভাবে ওবিসি তালিকা তৈরি হয়েছিল, তার তীব্র সমালোচনা করেছে আদালত।

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ‘নির্বাচনি মুনাফার’ জন্য এই অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে, যা ‘সংবিধান বিরোধী’। একইসাথে এটিকে বৈষম্যমূলক আচরণ বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।

বিচারপতিরা বলেন, ‘আদালত এ বিষয়ে সন্দেহমুক্ত নয় যে উল্লিখিত সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশে পণ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। ঘটনাপরম্পরা থেকে এটা বোঝা যায় যে ৭৭টি শ্রেণির অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং তাদের ওবিসি হিসাবে বিবেচনা করা তাদের ভোট ব্যাংক হিসাবে বিবেচনা করার জন্যেই।’

ডিভিশন বেঞ্চ আরো জানিয়েছে, ২০১০ সালের আগে রাজ্য সরকার যে ৬৬টি শ্রেণির ওবিসি নথিভুক্ত করেছিল তাতে হস্তক্ষেপ করছে না আদালত। এর কারণ, হাইকোর্টে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় তা চ্যালেঞ্জ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে সাবেক বিচারপতি রাজিন্দর সাচারের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের সাচার কমিটি ভারতের মুসলমানদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে।

তাদের রিপোর্টে জানানো হয় শিক্ষা, চাকরি-সহ আরো কয়েকটি ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

তা ছাড়া রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের রিপোর্টেও একই কথা উঠে এসেছিল।

কমিশনগুলোর সুপারিশ মেনে মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য তাদের সংরক্ষণের কথা ভাবা হয়েছিল।

এদিকে আদালতের রায় প্রকাশ্যে আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী জানিয়েছেন, এই রায় তিনি মানেন না।

উল্লেখ্য, এর আগে এপ্রিল মাসে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলাতেও হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেছিল রাজ্য সরকার।

২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর ফলে ওই প্যানেলে নিয়োগ করা ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে।

নিয়মবহির্ভূতভাবে যে শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল, তাদের সুদসহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। সুপ্রিম কোর্ট আপাতত ওই রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে কলকাতা হাইকোর্টের ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

তিনি বলেছেন, ‘এই রায় আমি মানি না। ২৬ হাজার চাকরি ওরা বাতিল করেছিল, তখনও আমি সেই রায় মানিনি...আমরা মানি না। ওবিসি সংরক্ষণ চলছে, চলবে।’

শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের রায় নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে একই সুরে কথা বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ ‘বিরোধীদের গালে একটা সপাটে চড়।’

সাম্প্রতিককালে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের, বিশেষত কংগ্রেস এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।

অভিযোগ তুলেছিলেন, তফসিলি জাতির সরক্ষণ কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের দিয়ে দিতে চায় কংগ্রেস। তৃণমূলের বিরুদ্ধেও মুসলিম ভোটকে নিশানা করে তোষণের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

মমতা ব্যানার্জীর চ্যালেঞ্জ
আদালতের রায় প্রকাশ্যে আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, এই রায় তিনি মানবেন না।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন ধরে বলে বেড়াচ্ছেন, সংরক্ষণ কেড়ে নেবেন। সেটা কখনো হয়? তা হলে তো সংবিধান ভেঙে দিতে হয়। এটা হতে পারে না। এই রায় আমি মানি না। যতদূর যেতে হয় যাব।’

সরাসরি বিজেপিকে নিশানায় নেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে আরো একবার ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তোলেন।

তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘দেশে কখনো ভাগাভাগি হয় না। এটা বাংলার কলঙ্কিত অধ্যায়। হিন্দুকে বাদ দিলাম, মুসলিমকে রাখলাম এটা কখনো হতে পারে? এদের স্পর্ধা তো কম নয়!’

একইসাথে তার দাবি, সমস্ত নিয়ম মেনেই তার জমানায় ওবিসি তালিকা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সমীক্ষাও করা হয়েছিল।

সে প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা সমীক্ষা করেছিলাম। উপেন বিশ্বাস চেয়ারম্যান ছিলেন। কোর্টে তখনো কেস হয়েছিল। বিজেপি হেরে গিয়েছিল। এই বারেও তাই হবে।’

অন্য দিকে, তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জীও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপিকে। তার যুক্তি, নরেন্দ্র মোদীর সরকার তৃতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগেই ‘সংরক্ষণ কেড়ে নিচ্ছে’।

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার আগেই এই রূপ, আসার পরে কী হবে, তা হলে ভাবুন! কুড়মি, ওঁরাও, সাঁওতাল, সবাইকে সাবধান করছি, বিজেপিকে ভোট দিলে খারাপ সময় আসবে। বিজেপি ওবিসিদের সংরক্ষণ কেড়ে নিতে চাইছে।’

প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ
ওদিকে আদালতের রায়কে হাতিয়ার করে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটকে বিঁধতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‘হাইকোর্টের রায় ইন্ডিয়া মঞ্চের কাছে একটা সপাটে চড়। আদালত ২০১০-এর পর জারি হওয়া সমস্ত শংসাপত্র বাতিল করে দিয়েছে। এটা কেন হল? কারণ ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মুসলিমদের যেমন তেমনভাবে হোক ওবিসি বানানোর জন্য শংসাপত্র দিয়ে দিয়েছিল।’

অন্য দিকে, মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ছাড়েননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।

তিনি বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জী যে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে, সেটা ফাঁস করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তিনি অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে মুসলসমানদের দিয়ে দিয়েছেন।’

মুখ্যমন্ত্রী যে ওই রায় ‘মানবেন না’ বলে জানিয়েছেন, সে বিষয়েও মন্তব্য করেছেন শাহ।

তার কথায়, ‘উনি (মমতা ব্যানার্জী) সব কিছুই মানব না বলেন। আবার আদালতের রায় না মানার কথা বলার অর্থ কিন্তু আদালতকে অবমাননা করা।’

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গে জাতীয় অনগ্রসর কমিশনের প্রধান হংসরাজ গঙ্গারাম আহির বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘২০২৩ সালে রিভিউ করার সময় আমরা লক্ষ্য করি ২০১০ সালের পর ৬৫টি মুসলিম এবং ছয়টি হিন্দু বর্ণকে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে আমরা সংশ্লিষ্ট তথ্য জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা দেননি।’

তিনি বলেন, ‘আদালতের রায় একদম সঠিক এবং আমরা একে স্বাগত জানাই।’

এই প্রসঙ্গে তিনি কর্ণাটকের কথাও টেনে এনেছেন। আহির বলেন, ‘কর্ণাটকেও মুসলিমদের ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেখানেও এই একই জিনিস (কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে ইঙ্গিত করে) হবে। আমরা অন্য অনগ্রসর শ্রেণির বিরুদ্ধে নই। আমরা চাই যারা আসলেই ওই শ্রেণির মধ্যে পড়েন তারা যেন তাদের অধিকার ফিরে পান।’

বামেরা কী বলছেন ?
এই রায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এএনআইকে বলেন, ‘আদালতের রায় বিশদে পড়ে দেখতে হবে। এ বিষয়ে তারপর মন্তব্য করতে পারব।’

নরেন্দ্র মোদীর ‘আবকি বার ৪০০ পার’ এই স্লোগানের প্রসঙ্গ তুলে তিনি আরো বলেছেন, ‘বিজেপি ৪০০-র বেশি আসনের কথা বলে থাকে কারণ তারা সংবিধান বদল করতে চায়। সংবিধান রক্ষা করতে হলে কিন্তু ক্ষমতায় আসা থেকে ওদের রুখতে হবে।’

অন্য দিকে, সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিমের দাবি, মুসলিমদের উন্নয়নের কথা ভেবে তারাই প্রথম ওবিসি সংরক্ষণের কথা বলেছিলেন। আদালতের রায়ে বামেদের সেই পদক্ষেপ মান্যতা পেয়েছে। ২০১০ সালের আগের তৈরি তালিকা কলকাতা হাইকোর্ট বজায় রেখেছে।

সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের সুপারিশ মেনে আমরাই ওবিসি সংরক্ষণ ১৭ ভাগ করেছিলাম। ওই সুপারিশ অনুযায়ী সংখ্যালঘু, মূলত মুসলিমদের সম্প্রদায়ের শিক্ষা, চাকরি এবং অন্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য এই অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল। হাইকোর্ট কিন্তু ২০১০ সালের আগের সেই তালিকা বজায় রেখেছে।’

কিন্তু বর্তমান তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘বেনিয়ম’ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

সেলিম বলেন, ‘জনপ্রিয় হয়ে ওঠার জন্য খোলামকুচির মতো শংসাপত্র বিলি করা হয়েছে কমিশন এবং সংবিধান না মেনে। রাজনৈতিক স্বার্থেই তা করা হয়েছে।’

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement