১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রের প্রতিবাদে এবার ‘অখণ্ড নেপাল’

ভারতের পার্লামেন্ট ভবনে ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনে স্থাপন করা ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রের প্রতিবাদে নেপালের কাঠমান্ডু শহরের মেয়র বলেন্দ্র শাহর অফিসে স্থাপন করা হয়েছে ‘অখণ্ড নেপালের’ মানচিত্র। ফলে ‘অখণ্ড ভারত’ নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল।

‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রে নেপাল, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে ভারতের মানচিত্রে সন্নিবেশন করে দেখানো হয়েছে।

ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনে ওই মানচিত্র বা ম্যুরালটি ভারতের সংসদবিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি ‘অখণ্ড ভারত’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

ভারতের ওই ম্যুরালটি একটি হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী ধারণার উপর ভিত্তি করে গঠন করা হয়েছে। সেখানে প্রতিবেশী আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে ভারতের অংশ ভাবা হয়।

এদিকে, ‘অখণ্ড নেপালের’ সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে, নেপাল সাম্রাজ্য পূর্ব হিমালয়ের তিস্তা নদী থেকে পশ্চিমে সুতলেজ নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু ১৮১৬ সালে নেপাল সুগৌলি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরে উভয় অঞ্চলই ভারতের অধীনে চলে যায়। বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

নেপালের রাজনৈতিক নেতারা গত সপ্তাহে ম্যুরালটি সম্পর্কে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কারণ এতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনিকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। নেপালিদের কাছে লুম্বিনী এক পবিত্র স্থান ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটা তাদের এক অনন্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। দেশের পর্যটন মানচিত্রে অন্যতম প্রধান আকর্ষণও।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচন্ড বুধবার পার্লামেন্টে জানিয়েছেন, তারা ম্যুরালটি নিয়ে ভারতের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু ভারত বলেছে, এটি কোনো রাজনৈতিক মানচিত্র নয়; এটি একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মানচিত্র।

এর পরদিন বৃহস্পতিবার মেয়র বলেন্দ্র শাহ তার অফিসে ‘অখণ্ড নেপাল’ মানচিত্র স্থাপন করেন।

বলেন্দ্র শাহ ছাড়াও নেপালের সরকারি ও বিরোধী দলের অনেক নেতা ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ম্যুরালটিতে অশোকান সাম্রাজ্যের বিস্তারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

ভারতের এ মানচিত্র নিয়ে ইতোমধ্যে প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও জানিয়েছেন, ভারত সরকারের কাছে এর ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ২৮ মে নতুন পার্লামেন্ট ভবনটির উদ্বোধন করেন, যেখানে স্থাপন করা হয়েছে ওই ম্যুরালটি।

সূত্র : কাঠমান্ডু পোস্ট, স্ক্রোল ডট ইন


আরো সংবাদ



premium cement