২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাশ্মিরে ৩৭০ ধারা রদ : গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন ধোনি!

কাশ্মিরে ৩৭০ ধারা রদ : গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন ধোনি! - ছবি : সংগৃহীত

জম্মু ও কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করার জন্য ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারা রদ করেছিল ভারত সরকার। এ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন এখানে প্রকাশ করা হলো।

‘টপ সিক্রেট’ সিদ্ধান্ত। এমনটা যে হতে চলেছে, তা জানতেন হাতেগোনা কয়েকজন। তাবড়-তাবড় অফিসারও কিছু জানতেন না। আর পাকিস্তান যাতে ঘুণাক্ষরেও টের না পায় যে বড় কিছু একটা হতে চলেছে, সেজন্য বিশেষ কৌশল নেয়া হয়েছিল। সেইসাথে আরো একটি ‘চাল’ দিয়েছিলেন চিনার কোরের তৎকালীন কোর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজেএস ধিঁলো। যা তিনি নিজেই ফাঁস করলেন। তিনি জানান, পাকিস্তান যাতে বুঝতে না পারে যে কাশ্মিরে বড় কিছু একটা হতে চলেছে, সেজন্য ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট বেশি ছুটোছুটি করেননি। বরং নিজের বাসভবনে মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথে চা পান করছিলেন। সকালে দেড় ঘণ্টা গল্প জুড়েছিলেন।

২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মির থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যে ঘোষণার আগে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। কাশ্মিরে শান্তি বজায় রাখাই ছিল মূল চ্যালেঞ্জ। তাই যারা উস্কানি দিয়ে ভূস্বর্গের পরিস্থিতি জটিল করে থাকে, তারা যাতে আগেভাগে বুঝতে না পারে যে বড় কিছু হতে চলেছে, সেটার উপরও বিশেষ জোর দেয়া হয়েছিল। পুরো বিষয়টি জানতেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তা। যে তালিকায় ছিলেন চিনার কোরের (চিনার কোর জম্মু ও কাশ্মিরে কাজ করে) তৎকালীন কোর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজেএস ধিঁলো।

সেই ৩৭০ ধারা রদের পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য লালনানটপে একটি সাক্ষাৎকারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ধিঁলো বলেন, ‘কাশ্মির থেকে ৩৭০ ধারা রদের যে পরিকল্পনা করা হতো, সেটা আমার (চিনার কোরের কোর কমান্ডার) ড্রয়িংরুম থেকে হতো। ইংরেজিতে আমি সবসময় বলি, মাত্র আড়াইজন জানতেন যে কাশ্মিরে কী হতে চলেছে (দু'জন পুরো পরিকল্পনা জানতেন, একজন অল্পবিস্তর জানতেন)। তাদের মধ্যে আমি একজন ছিলাম।’

তিনি আরো বলেন, ‘(যাবতীয় আলোচনা, পরিকল্পনা) হত চিনার কোরের কোর কমান্ডারের ড্রয়িংরুমে। বাকি দেড়জন ছিলেন, তারা সেখানেই যেতেন। ওখানেই আলোচনা করতেন। তারপর নিজেদের ব্রিফকেসে নথিপত্র রেখে দিয়ে লক করে দিতেন এবং আমার কাছে জমা দিয়ে চলে যেতেন। ওই চার দেয়ালের বাইরে কেউ ঘুণাক্ষরেও কেউ পাননি যে কী হতে চলেছে।’

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ধিঁলোর মতে, কাশ্মিরের মতো জায়গায় যখন কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডারদর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ থাকে। সেই পরিস্থিতিতে ‘অ্যাকশনের দিন’ কোনো কোর কমান্ডার যদি ‘রিল্যাক্স’ মুডে থাকেন, তখন বিপক্ষ ভাবতেও পারে না, কোনো বড় পদক্ষেপ করা হতে চলেছে। আর ঠিক সেই চালেই ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট মাত হয়েছিল পাকিস্তান।


ওই সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘এভাবেই গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছিল। বইয়ে (কিতনে গাজি আয়, কিতনে গাজি গ্যায়) লেখা আছে (বিষয়টা)। ৫ অগস্ট কাশ্মির থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ হতে চলেছে; কোর কমান্ডার কী করছেন, সেটা দেখে পাকিস্তানের মনে হত যে আজ কিছুই হবে না। কোর কমান্ডার যদি দিনভর বৈঠক করতেন, এদিকে ছুটে যেতেন, ওদিকে ছুটে যেতেন, কিছু খতিয়ে দেখতেন, ফোন করতেন, তাহলে ওদের মনে হতো যে আজ কিছু একটা হতে চলেছে।'

তাহলে সেদিন কী করেছিলেন? লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ধিঁলো বলেন, 'আমি ওই দিন সকালে ড্রয়িংরুমে বসে দেড় ঘণ্টা ধরে মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথে চা পান করছিলাম। রাতে আমার বাড়িতে নৈশভোজ সারছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের পর কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে শিবিরে কাটিয়েছিলেন টেরিটোরিয়াল আর্মির সদস্য ধোনি (লেফটেন্যান্ট কর্নেল ধোনি)। চালিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement