২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাহুল গান্ধীর ফোনেও পেগাসাস ছিল!

রাহুল গান্ধী - ছবি : সংগৃহীত

গত বছর স্পাইওয়্যার 'পেগাসাস' বিতর্ক নিয়ে উত্তাল হয়েছিল ভারতের রাজনীতি। তবে ওই বিতর্কের আগুন এখন আর সেভাবে জ্বলছে না ভারতে। তবে এবার বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ফের একবার পেগাসাস ইস্যু নিয়ে সরব হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় গণতন্ত্র প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাহুল বলেন, 'আমার ফোনেও পেগাসাস ছিল।' তিনি অভিযোগ করেন, ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামোর ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।’

রাহুল দাবি করেন, এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাকে এই বিষয়ে সতর্ক করেন। রাহুলের কথায়, তাকে ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন যে ফোনে রাহুলের সব কথা রেকর্ড করা হচ্ছে। এদিকে কেমব্রিজে 'ভারতীয় গণতন্ত্রে উপর আক্রমণে'র মতো ইস্যু ছাড়াও রাহুল গান্ধী বিশ্বের গণতন্ত্র নিয়েও কথা বলেন। পাশাপাশি নিজের সাম্প্রতিক ভারত জোড়ো যাত্রার বিষয়ও তুলে ধরেন রাহুল।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ভারতীয় পার্লামেন্টের 'বাদল' অধিবেশনের আগে প্রকাশ্যে এসেছিল পেগাসাস ইস্যুটি। এই ঘটনা সামনে আসার পর প্রায় দেড় বছর কেটে গেছে। বিগত দিনে এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল ভারতজুড়ে। এখনো মাঝে মাঝে বিরোধীরা এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ভারত সরকারকে নিশানা করে আক্রমণ শানায়।

এদিকে পার্লামেন্টে ঝড় ওঠার পাশাপাশি পেগাসাস ইস্যুতে মামলা গড়িয়েছিল শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। এরপরই ঘটনা খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্ট একটি টেকনিকাল কমিটি গঠন করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল। পেগাসাস ‘আক্রান্ত’দের ফোন নিয়ে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা ছিল এই প্যানেলর কাজ। গতবছর সেই সেই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা গঠিত কমিটি নিজেদের রিপোর্টে জানায়, যে ২৯টি ফোন জমা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে পাঁচটি ফোনে ম্যালওয়ার পাওয়া গিয়েছে। তবে সেই ম্যালওয়ার আদৌও পেগাসাস কিনা, সে বিষয়ে অকাট্য কোনো প্রমাণ মেলেনি। এদিকে কমিটির অভিযোগ ছিল, তদন্তে ভারত সরকার তাদের সাহায্য করেনি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ২০১৭ সালে ভারত এবং ইসরাইলের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র এবং গোয়েন্দা সংক্রান্ত দু'বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি হয়েছিল। যে চুক্তির ‘কেন্দ্রবিন্দু’ ছিল পেগাসাস স্পাইওয়ার এবং ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছিল কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো। অভিযোগ উঠেছিল যে রাহুল গান্ধী, অভিষেক ব্যানার্জিসহ ভারতের বিভিন্ন বিরোধী রাজনীতিকদের ফোন হ্যাক করা হয় পেগাসাস দিয়ে। একটি রিপোর্টে দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল যেখানে সম্ভাব্য পেগাসাস ‘আক্রান্তদের’ নাম ছিল।

অভিযোগ উঠেছিল, ‘মিলিটারি গ্রেড’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা সাংবাদিক, সমাজকর্মীদের ফোন হ্যাক করেছে সরকার। ফ্রান্স-ভিত্তিক সাংবাদিকদের একটি কনসোর্টিয়াম গত বছর ৫০ হাজার নম্বরের একটি তালিকা ফাঁস করেছিল। দাবি করা হয়েছিল, এই ৫০ হাজার ব্যক্তির উপর এনএসও গ্রুপ নজরদারির চালিয়েছিল তাদের ক্লায়েন্টদের জন্য। সেই তালিকাতেই ছিল বহু ভারতীয়র নাম। যাদের ফোনে পেগাসাস ইনস্টল করে নজরদারি চালানো হয়েছিল বলে তালিকায় দাবি করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ভারতের টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবেরও নাম ছিল। রাহুলের দাবি, সেই তালিকায় তিনিও ছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের কমিটির কাছে নিজের ফোন জমা করেননি রাহুল।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

 


আরো সংবাদ



premium cement