১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘শর্ট পজিশন' : যে কৌশলে বিপুল অর্থ হাতিয়েছে আদানি

গৌতম আদানি - ছবি : সংগৃহীত

এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যে ধসের সৃষ্টি হয়েছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ নামে যুক্তরাষ্ট্রের লগ্নি-সংক্রান্ত গবেষণাকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মাত্র একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার ফলে। গত তিন দিনে তাদের লোকসান হয়েছে ৬৫ বিলিয়ন ডলার।

এই বিপর্যয়ের সাথে সাথে একটি পরিভাষা ব্যাপকভাবে সামনে এসেছে। সেটি হলো 'শর্ট পজিশন।'

শর্ট পজিশন এমন একটি কৌশল, যেখন একজন বিনিয়োগকারী আগে থেকেই অনুমান করে ফেলেন যে কোনো নির্দিষ্ট স্টকের দাম কমবে। আর সেটা কাজে লাগিয়েই মুনাফা করেন। বিশ্লেষণ কাজে লাগিয়ে এই ধরনের বিনিয়োগকারীরা আন্দাজ করেন। বুঝে যান যে সম্ভবত আগামী কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যেই সেই শেয়ারের দামে পতন হতে পারে।

এরপর বিনিয়োগকারী কোনো ইনভেস্টমেন্ট ফার্মের থেকে সেই শেয়ারগুলো ধার করেন- অন্য কাউকে তা বিক্রি করার জন্য। অর্থাৎ শেয়ার না কিনেই বিক্রি!

এই ধরনের ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম বা বিনিয়োগ সংস্থার হাতে সাধারণত অনেক পরিমাণে স্টকের ভাণ্ডার থাকে। অথবা অনেক সময়ে তারা ঋণ দেয়ার জন্য অন্য ফার্ম থেকেও স্টক ধার করে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারী স্টক ফেরত দেবেন। কিন্তু তার জন্য কিছুটা সময় পাবেন তারা।

এবার ধরুন কোনো শেয়ার ধার নিলেন যখন, তার দাম ছিল ১০০ টাকা করে। আপনি জানেন সেই কোম্পানির অবস্থা ভালো নয়। আগামী দু'সপ্তাহে শেয়ার দর অনেক কমতে পারে। ওই আন্দাজ/হিসাবের ভিত্তিতে আপনি শর্ট পজিশনে শেয়ার নিলেন।

দু'সপ্তাহ পর সত্যিই ওই শেয়ারের দাম কমে ৬০ টাকা হয়ে গেল। এবার ওই শেয়ার যখন বেচা হবে, আপনি ৪০ টাকা লাভ করবেন। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক।

ধরুন আপনাদের পাড়ায় কারো একটি জমি রয়েছে। ১৫ লাখ টাকা দাম। আপনি আন্দাজ করলেন, ‘এই জমির দাম মোটেও এত বেশি নয়। ভ্যালুয়েশন করালেই কমবে।’ সেই বুঝে আপনি জমি মালিককে বললেন এক সপ্তাহ সময় দিতে।

এরপর কোনো ক্রেতা খুঁজে তাকে জমি দেখালেন। বললেন আপনি ১৫ লাখ টাকায় একটি জমি বেচবেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে সেই জমি হস্তান্তর করবেন। আপাতত ১৫ লাখ টাকার ওই জমির দাম হিসাবে ১০ লাখ টাকা দিলেই হবে। ডেলিভারির দিন, তখন পাঁচ লাখ দিলেই হবে। তিনি চুক্তিতে রাজি হয়ে গেলেন।

এক সপ্তাহ পর দেখা গেল জমির আসল ভ্যালুয়েশন সত্যিই কম, ১০ লাখ টাকা। এদিকে আপনার কাছে তো ওই ক্রেতার দেয়া ১০ লাখ টাকা আছেই। আপনি সেটা দিয়েই জমি মালিকের থেকে জমিটা কিনে নিলেন। এদিকে সেই অতিরিক্ত পাঁচ লাখ টাকাও ক্রেতার থেকে পেয়ে গেলেন। সেটি পেতে তার হাতে জমিটি তুলে দিলেন। অর্থাৎ আপনার মুনাফা হলো পাঁচ লাখ টাকা। আপনার পকেট থেকে টাকা বিনিয়োগ না করেই মুনাফা করলেন।

আদানি নিয়ে রিপোর্ট

চলতি জানুয়ারি মাসে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে তারা জানায়, আদানি গ্রুপে শর্ট পজিশনে বাজি ধরেছে তারা। তাদের দাবি, আদানি গ্রুপের ঘাড়ে বিপুল পরিমাণে ঋণের বোঝা রয়েছে। এদিকে অ্যাকাউন্টিং ঠিক নেই বলেও উল্লেখ করেছে তারা। এর পাশাপাশি তারা দাবি করেছে, আদানি গ্রুপ 'কয়েক দশক ধরেই নির্লজ্জের মতো স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতিতে জড়িত।'

রিপোর্ট প্রকাশের প্রায় সাথে সাথেই আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে বিশাল পতন হয়। আদানি গ্রুপ যদিও এই রিপোর্ট 'ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে উল্লেখ করেছে। এদিকে হিন্ডেনবার্গ তার প্রেক্ষাপটে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, 'রিপোর্ট যদি সত্যিই ভুল হয়, আদানি গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতে তা প্রমাণ করুক।'

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement
নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবে আইসিসি! ঢাকায় কাতারের আমিরের নামে সড়ক ও পার্ক তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি : ইরানি কমান্ডার ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘কেন্দ্র’ ইসফাহান : সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মিয়ানমারের বিজিপির আরো ১৩ সদস্য বাংলাদেশে রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের সেই ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি দুবাইয়ে বন্যা অব্য়াহত, বিমানবন্দর আংশিক খোলা ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’

সকল