২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কলকাতায় সিআইএসএফ কমান্ডারের তাণ্ডব, গুলিতে জওয়ান নিহত

কলকাতায় সিআইএসএফ কমান্ডারের তাণ্ডব, গুলিতে জওয়ান নিহত - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের কলকাতায় পার্ক স্ট্রিটের অদূরে জাদুঘরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডারের গুলিতে এক জওয়ান নিহত হয়েছে। জাদুঘর চত্বরে সিআইএসএফ (কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী) ব্যারাক লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, কর্তব্যরত সহকর্মীদের নিশানা করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক কমান্ডার গুলি চালিয়েছেন। ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর। ওই সূত্র মারফতই জানা গিয়েছে, গুলি চালনার ঘটনায় আরো একজন আহত হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ট্রমা বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় দেড় ঘণ্টার অপারেশন শেষে আটক করা হয় হামলাকারীকে। পরে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

আটক জওয়ান সিআইএসএফের হেড কনস্টেবল। তবে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময়ও দেখা যায় তিনি কার্যত ভাবলেশহীন হয়ে হাত নাড়তে থাকেন।

স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কিট স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের উল্টা দিকে ভারতীয় জাদুঘর চত্বরে এই গুলি চলে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাত ৮টা নাগাদ ওই হামলাকারীকে নিরস্ত্র করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। হামলাকারীর নাম অক্ষয়কুমার মিশ্র। তিনি ওড়িশার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একে-৪৭ বন্দুক থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে। সহকর্মী জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। সূত্রের দাবি, ঘটনায় দু’জন আহত হলে তাদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে। নিহতের নাম রঞ্জিত সরঙ্গি। তিনিও ওড়িশার বাসিন্দা। আহত জওয়ানের নাম সুবীর ঘোষ।

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও আসেন। আসেন জয়েন্ট সিপি (অপরাধ) মুরলীধর শর্মাও।বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় সেখানে। এর পরেই বিশাল কমান্ডো বাহিনী ঢোকে জাদুঘরের ভিতরে। নিয়ে আসা হয় অ্যাম্বুল্যান্সও। সিপি বলেন, ‘একজন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এক জন আহত। অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি চলেছে। কমান্ডো এনে অপারেশন চালানো হয়েছে। হামলাকারীকে বুঝিয়ে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে। আটক করার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ব্যারাকের ভিতরেই ছিলেন হামলাকারী। যাতে উদ্বিগ্ন পুলিশের পদস্থ কর্তারা। কারণ, হামলার সময় ব্যারাকে শতাধিক জওয়ান ছিলেন। পুলিশ সূত্র জানান, অভিযুক্ত কনস্টেবল যাতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, সেই চেষ্টাই করা হয়েছে প্রথম থেকে। শেষমেশ দেড় ঘণ্টা পর ওই হামলাকারী জওয়ানকে আটক করে গ্রেফতার করা হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত অভিযুক্ত জওয়ানের ছুটি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পরে তিনি ছুটি পাননি বলে অভিয়োগ। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সামনেই ১৫ অগস্ট। সেক্ষেত্রে সুরক্ষা বাহিনীতে ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সময় কড়াকড়ি করা হয়। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার গ্রাউন্ডে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছুটি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে গোটা ব্যাপারটি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাকে সম্ভবত নানাভাবে সহকর্মীরা মজা করতেন বলেও অভিযোগ। তবে এ ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement