১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহারাষ্ট্রে আড়াই বছরের চেষ্টায় সফল বিজেপি

একনাথ শিন্ডের (ডানে) মাধ্যমে মহারাষ্ট্রে সফল হয়েছে বিজেপি। - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র মহারাষ্ট্র নিয়ে আড়াই বছরের চেষ্টা সফল হলো। রাজ্যটিতে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের জোট সরকারের পতন হলো। রাজ্যপালের নির্দেশ বহাল রেখে বুধবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, বৃহস্পতিবার সকালেই বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে উদ্ধব ঠাকরেকে।

সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অনলাইনে উদ্ধব জানিয়ে দেন, তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। তারপরই তিনি রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে যান। মুখ্যমন্ত্রীর পদ ও বিধান পরিষদের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে উদ্ধব ঠাকরে। মহারাষ্ট্রে এনসিপি ও কংগ্রেসকে সাথে নিয়ে জোট করে আড়াই বছর সরকার চালিয়েছেন তিনি। করোনাকালের পুরো সময়টা সামাল দিয়েছেন। ঠাকরে পরিবার থেকে এই প্রথম কেউ মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন। কার্যত প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাহীন ঠাকরে এতদিন ধরে জোটের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং সেখানে খুব বেশি সমস্যার মধ্যে পড়েননি।

ঠাকরে জানিয়েছেন, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করি। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ বুধবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, রাজ্যপালের নির্দেশমতো সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ ঠাকরেকে দিতে হবে। কিন্তু যে ১৬ জন বিধায়কের সদস্যপদ বাতিল করার আবেদন ডেপুটি স্পিকারের কাছে আছে, তা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিজেপি’র চেষ্টা সফল
ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিজেপি মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের জন্য চেষ্টা করে গেছে। তারা এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারসহ কয়েকজন বিধায়ককে নিজেদের দিকে এনে সরকার গঠনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তারপর থেকে তারা শিবসেনা ভাঙার চেষ্টা করে গেছে। শেষপর্যন্ত একনাথ শিন্ডের মাধ্যমে তারা সফল হয়েছে।

উদ্ধবের এখন এমনই অবস্থা হয়েছে যে তার সাথে মাত্র ১৫ জন বিধায়ক আছেন। বাকি সব শিন্ডের সাথে বিক্ষুব্ধ শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। ঠাকরের সাথে মাত্র তিনজন মন্ত্রী আছেন। বাকি ৯ মন্ত্রী শিন্ডের সাথে গিয়েছিলেন। এভাবেই শিবসেনা বিধায়কদের সাথে নিয়ে সরকার ভাঙার খেলায় সফল হয়েছে শিন্ডে ও বিজেপি।

বিজেপি নেতারা বলছেন, শিবসেনার মন্ত্রী, বিধায়করা ঠাকরের জোট নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে বিদ্রোহ করেছেন। আর শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতা পাওয়ার জন্য এই কাজ করেছে।

বালাসাহেবের সময় শিবসেনায় তার কথাই ছিল শেষ কথা। কিন্তু তার ছেলে উদ্ধবের সময় দেখা গেল, বিধায়করা ঠাকরে পরিবারের নির্দেশ মানছেন না। তবে সঞ্জয় রাউতদের দাবি, দলের বাকি নেতা ও কর্মীরা তাদের সাথে আছেন। পরবর্তী লড়াইয়ে সেটা স্পষ্ট হবে।

কিন্তু শিন্ডেরা দাবি করেছেন, তারাই প্রকৃত শিবসেনা ও বালাসাহেবের ভাবধারা তারাই এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।

সরকার গঠনের প্রস্তুতি
বুধবার রাত থেকেই মহারাষ্ট্র বিজেপিতে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসই সম্ভবত আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। শিন্ডে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। ফড়নবিস বলেছেন, বৃহস্পতিবার তারা বিস্তারিতভাবে তাদের পরিকল্পনার কথা জানাবেন।

মুম্বাইকে বলা হয় ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী। তাই ভারতের রাজনীতিতে মহারাষ্ট্রের আলাদা গুরুত্ব আছে। মুম্বাই পুরসভার আয় অনেক রাজ্যের বাজেটের থেকে বেশি। সেই রাজ্য আবার বিজেপি’র দখলে আসতে চলেছে। কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের পর মহারাষ্ট্রেও তারা দল ভেঙে সরকার গঠন করছে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement