এমআই-১৭ কপ্টার ভেঙে রাওয়াতের মতো সস্ত্রীক নিহত হয়েছিল আরেক ভারতীয় জেনারেল

তিন দশক আগে এমআই-১৭ কপ্টার ভেঙে রাওয়াতের মতো সস্ত্রীক নিহত হয়েছিলেন আরেক ভারতীয় জেনারেল। ১৯৯৩ সালে রুশ এমআই-১৭ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সস্ত্রীক নিহত হয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জামিল মাহমুদ।

১৯৯৩ সালের মে মাসে ডিমাপুরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩ নম্বর কোরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ভুটান সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে ভেঙে পড়েছিল জামিলের কপ্টার। তদন্তে জানা যায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। রাশিয়ার সংস্থা ‘কাজান হেলিকপ্টার প্লান্টের’ তৈরি এমআই-১৭ কপ্টার দুর্গম অঞ্চলে সেনা অভিযান বা উদ্ধার কাজে দক্ষ হলেও এ চপার ভিআইপি পরিবহণের কাজে কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল ওই সময়।

পরেও অনেকবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এমআই-১৭। কিন্তু বিভিন্ন ভারতীয় বাহিনীতে রুশ কপ্টারটির অন্তর্ভুক্তির ধারা বন্ধ হয়নি। এমআই-১৭-র ১-ভি সংস্করণের পাশাপাশি ২০১১ সালে আসে রাতে ওড়ার ক্ষমতা সম্পন্ন ভি-৫ সংস্করণও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উদ্ধারকাজ, মাওবাদী দমনের পাশাপাশি উচ্চপদস্থ সেনাকর্তাদের যাতায়াতে ব্যাবহৃত হয় এ কপ্টার।

গত দু’দশকে একাধিকবার দুর্ঘটনায় পড়েছে রাশিয়া থেকে আমদানি করা এ হেলিকপ্টার। বিভিন্ন সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তরাখণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীরে মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা। প্রতিকূল আবহাওয়া, চালকের ভুল সিদ্ধান্তের পাশাপাশি, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে যান্ত্রিক ত্রুটির কথাও।

ভারতের পাশাপাশি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর জন্য ব্যবহৃত ওই রুশ কপ্টারগুলো বহুবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এমআই-১৭ গুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নততর ভি-৫ সংস্করণও। বুধবার এমন একটি হেলিকপ্টারেই ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়াত।

ভারতের পাশাপাশি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনী ব্যবহৃত ওই রুশ কপ্টারও বহুবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এমআই-১৭ গুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নততর ভি-৫ সংস্করণও। ঘটনাচক্রমে, বুধবার সেই কপ্টারেই ছিলেন সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়ত।

বারবার দুর্ঘটনার শিকার রুশ যুদ্ধবিমান মিগ-২১ একসময় ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছিল। প্রয়োজনীয় আধুনিকীকরণের কাজ না হলে অদূর ভবিষ্যতে রুশ কপ্টারগুলোর ক্ষেত্রেও এমন তকমা জুটতে পারে বলে মনে করছেন প্রাক্তন সেনাকর্তাদের অনেকেই।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা