২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

`ক্ষুধার্ত মানুষকে লকডাউনে রাখা যায় না'

`ক্ষুধার্ত মানুষকে লকডাউনে রাখা যায় না' - ছবি - সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিন্ধ প্রদেশের সরকার আরোপিত পাকিস্তানের বাণিজ্য কেন্দ্র করাচিসহ সিন্ধের দক্ষিণ অংশে লকডাউনের সমালোচনা করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ‘ক্ষুধার্ত মানুষকে এভাবে লকডাউনে রাখা যায় না’।

টেলিফোনে সরাসরি প্রশ্নোত্তরের এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেছেন। করোনার পূর্ববর্তী তিনটি ঢেউয়ের সময় সরকারকে সহযোগিতা করায় দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলমান চতুর্থ ঢেউয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানান তিনি।

এরপর সিন্ধ প্রদেশের লকডাউন প্রসঙ্গ তুলে বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের কথা বিবেচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ায় শনিবার থেকে সিন্ধ প্রদেশে আংশিক লকডাউন বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

ইমরান খানের প্রশ্ন, ‘সিন্ধ সরকার লকডাউন চায়। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত এবং এতে ভাইরাসের বিস্তার কমবে। কিন্তু লকডাউনে কি অর্থনীতি বাঁচবে? এরমধ্যে রয়েছে ক্ষুধা। দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষ লকডাউন চলাকালে কীভাবে জীবন নির্বাহ করবে?’

আচমকা লকডাউন আরোপে ‘ভারতে বিপর্যয়’ তৈরির উদাহরণ টেনে সিন্ধ সরকারের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আগে আপনাদের কাছে এসব প্রশ্নের উত্তর থাকতে হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত কখনো লকডাউন করতে পারেন না।

পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (ভারতীয়) সরকার জনসাধারণের জন্য কিছু না ভেবেই একবারে লকডাউন জারি করেছে। তারা কেবল আমাদের মতো উচ্চবিত্ত এবং অভিজাতদের কথা ভেবেছিল। কিন্তু আমরা তো এভাবে ভাবতে পারি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘সিন্ধ সরকারের জানা উচিত যে, যখন আপনি লকডাউন চাপিয়ে দিচ্ছেন তখন আপনি অনেক মানুষকে ক্ষুধার মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। যদি তাদের খেতে দেয়ার সামর্থ্য না থাকে, তবে আপনি ক্ষুধার্ত মানুষকে লকডাউনের অধীনে রাখতে পারবেন না।’

গত শুক্রবার সিন্ধ প্রদেশে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি-শাহ বলেছেন, হঠাৎ কোভিড আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা দেয়ায় প্রাদেশিক রাজধানী শহর করাচির হাসপাতালগুলো রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে।

চলতি মাসে ইদুল আজহাসহ ব্যাপক হারে জনসমাগম হয় এমন নানা উৎসব-আয়োজনের কারণে বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শুধু করাচি কিংবা সিন্ধ প্রদেশ নয়, বরং পাকিস্তানজুড়ে করোনায় আক্রান্ত-মত্যু বাড়ছে।

সিন্ধ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি-শাহ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি জানি লকডাউন সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করলে মানুষজন খুশি হবে না। কিন্তু করোনার এমন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে হলে আমাদের লকডাউন জারি করা ছাড়াও কোনো উপায় নেই।’

এক শহর থেকে আরেক শহরে বাসসহ সব ধরনের গণপরিহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও ট্যাক্সি চলতে পারবে কিন্তু সর্বোচ্চ দু’জন যাত্রী নিয়ে। হোটেল খোলা থাকবে তবে বসে খাওয়া যাবে না। খাবার ডেলিভারি নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement