২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ভারতে ভয়াবহ করোনা সঙ্কট : মহামারীর ধাক্কায় মোদি ব্র্যান্ডের কতটা ক্ষতি হলো

ভারতে ভয়াবহ করোনা সঙ্কট : মহামারীর ধাক্কায় মোদি ব্র্যান্ডের কতটা ক্ষতি হলো -

ভারতের ভয়াবহ করোনা সঙ্কট নিয়ে ব্রিটেনের সানডে টাইমস এক সাম্প্রতিক শিরোনামে লিখেছে, ‘ভারতকে লকডাউন থেকে বের করে এক কোভিড কেয়ামতের দিকে নিয়ে গেছেন মোদি । ‘

একটি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদপত্র এ ধরনেরই এক খবর পুনঃপ্রকাশ করেছে সাথে এক কঠোর সারমর্ম জুড়ে দিয়ে : ‘দম্ভ, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতা মিলে ভারতে তৈরি হয়েছে এমন এক বিরাট সঙ্কট, যখন দেশটির নাগরিকদের সত্যি সত্যি দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম, আর তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী জনতার ভিড়ে আত্মপ্রসাদে মগ্ন।’

এসব খবর আর শিরোনাম অবশ্য ভারতে তিরস্কৃত হয়েছে। কিন্তু এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সযত্ন লালিত ভাবমূর্তিতে করোনা সঙ্কট বেশ বাজেভাবে আঘাত হেনেছে।

ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনাম আর সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইন দখল করে আছে: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা বিভাগের বেড কিংবা চিকিৎসার জন্য অপেক্ষায় থাকতে থাকতে কিভাবে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে, শ্বাস নেয়ার জন্য সংগ্রাম করছে; পরিবারগুলো কিভাবে মরিয়া হয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট- সবকিছুর জন্য হন্যে হয়ে ছুটছে; কিভাবে আরো বেশি সংখ্যায় আসা মৃতদেহ দাহ করার জন্য গণ-দাহের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে, এমনকি কার পার্ককেও চিতায় পরিণত করতে হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এসবের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে মিস্টার মোদিকেই দোষারোপ করা হচ্ছে- যিনি কিনা প্রায়শই নিজেকে একজন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে তুলে ধরেন, কোনো খুঁটিনাটি যার চোখ এড়ায় না। কিন্তু ভারতে প্রতিদিনই সংক্রমণ সংখ্যা যখন নতুন রেকর্ড গড়ছে, তখন মিস্টার মোদির এ ভাবমূর্তি ভেঙে পড়ার উপক্রম।

‘মুখোশে ফাটল ধরেছে'

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মিলন বৈষ্ণব বলেন, ‘দক্ষতাকে যদি তার প্রধান গুণ বলে দাবি করা হয়, অনেক মানুষই কিন্তু এখন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সমস্যা মোকাবেলায় সরকার যে কেবল অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বা কিছুই করেনি শুধু তা নয়, একইসাথে তারা সংকটকে আরো গুরুতর দিকে নিয়ে যেতে ভূমিকা রেখেছে।’

মিলন বৈষ্ণব বলছেন, মোদিই একমাত্র নেতা নন যিনি কোভিড সঙ্কট মোকাবেলা করতে গিয়ে সব তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির পতনটা ঘটেছে অনেক সশব্দে, অনেক সুস্পষ্টভাবে। কারণ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারোর মতো তিনি কোভিডকে অস্বীকার করেন না। কিন্তু তারপরও মোদি এ সঙ্কটের অনেক আগাম সতর্কতা অস্বীকার করে এটি প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন।

মোদি গঙ্গা নদীর তীরে এক পবিত্র হিন্দু ধর্মীয় উৎসব করতে দিয়েছেন। সেখানে লাখ লাখ মানুষ কয়েক সপ্তাহ ধরে সমবেত হয়েছে পুণ্য-স্নানের জন্য। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এক মাস ধরে নির্বাচন করতে জেদ ধরেছিলেন। তারপর ওই নির্বাচনের সময় মাস্ক না পরেই বিরাট বিরাট সব জনসভায় যোগ দিয়েছেন, এসব জনসভায় বিপুল মানুষের জনসমাগম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

দ্য ইকনোমিস্টের ভারত সংবাদদাতা অ্যালেক্স ট্র্যাভেলি এ সম্পর্কে বলেন, ‘বিশ্বের যেসব জায়গায় সম্প্রতি লকডাউন জারি করা হয়েছে, সেসব জায়গার মানুষ ভারতে এরকম অসাবধানতা আর অবজ্ঞার প্রদর্শন দেখে হতবাক হয়েছেন।’

এসব দৃশ্য অবশ্য মোদির ব্র্যান্ডটিকেই মনে করিয়ে দিয়েছে। তিনি নিজেকে দেখাতে চান হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশের একজন শক্তিশালী ও জনপ্রিয় নেতা হিসেবে। গত জানুয়ারিতে তিনি এমনকি ভারতকে একটি ব্যতিক্রমী দেশ বলেও বিশ্বের সামনে বড়াই করেছিলেন।

‘তার জাতীয়তাবাদী ঝোঁকের সাথে একধরনের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনার একটি ছবি সবসময় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সামনে তুলে ধরা হতো। কিন্তু কোভিড সঙ্কটে এ সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা একেবারেই অনুপস্থিত ছিল; বলছেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্লারি।

একজন জনতোষণকারী রাজনীতিক ও অতন্দ্র প্রশাসক হিসেবে মোদি নিজের যে খ্যাতি তৈরি করেছিলেন। সেটা ক্ষয় হতে শুরু করে ২০১৭ সালে। ওই বছর তিনি ভারতীয় রূপির নোট বাতিল করে বিপর্যয় ডেকে আনেন, কারণ ভারতে কোটি কোটি মানুষ নগদ অর্থ দিয়েই লেন-দেন করে। এরপর গত বছর তিনি কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে রাতারাতি লকডাউন জারি করেন। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ কাজ হারায়, অনেকের জীবন যায়। ভারতের অর্থনীতি এখনো এ লকডাউনের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি।

মোদির যুক্তি ছিল, তিনি বড় কোন কল্যাণের জন্য এরকম পদক্ষেপ নিয়েছেন, অর্থনীতি থেকে কালো টাকা বের করে দেয়া কিংবা কোভিডকে পরাস্ত করা।

‘কিন্তু তার সর্বশেষ ভুল পদক্ষেপগুলোকে তিনি এ যুক্তি দিয়ে সহজে রক্ষা পাবেন না; বলছেন ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের রবি আগরওয়াল।

‘আপনি জিডিপি'র মতো সংখ্যার একটা ব্যাখ্যা দিতে পারেন। কিন্তু একজনের ভাই কেন মারা গেল সেটা তো ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। ভারতীয়রা সবসময় বিশ্বাস করেছিল মোদি যদিও ভুল করেন, তারপরও তিনি তাদের জন্যই লড়াই করেন, তিনি তাদের ওপর আস্থা রাখেন।’

রবি আগরওয়াল বলেন, ‘এবার মানুষ মোদির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। একটা ফাটল তৈরি হয়েছে, মোদির ভাবমূর্তিতে এ ফাটল বেশ দৃশ্যমান।’

যেভাবে মোদি ব্রান্ড তৈরি হলো এবং যেভাবে এর পতন

২০০২ সালে ভারতের গুজরাট রাজ্যে এক দাঙ্গায় নিহত হন প্রায় এক হাজার মানুষ, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। একটি ট্রেনে আগুনে ৬০ জন হিন্দু মারা যাওয়ার পর এ দাঙ্গা শুরু হয়। নরেন্দ্র মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং এ দাঙ্গা তিনি লাগাতে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এ থেকে তিনি গায়ে কোনো আঁচড় ছাড়াই বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।

২০১২ সাল নাগাদ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী তার সমর্থকদের কাছে সুশাসন আর কার্যকর প্রশাসকের এক উৎকৃষ্ট ও আদর্শ প্রতীক হয়ে উঠেন।

কোনো কোনো গণমাধ্যমে তাকে একজন 'নিঃসঙ্গ স্বৈরাচারী' বলেও বর্ণনা করা হচ্ছিল। তবে একইসাথে প্রশংসা করা হচ্ছিল এ বলে যে, তার শাসনে গুজরাটের অর্থনীতি বিকশিত হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে।

১৩ বছর গুজরাটের নেতৃত্ব দেয়ার পর তিনি যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য লড়লেন, তখন এটাকে অনেকে দেখলেন ভারতের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার এক সুযোগ হিসেবে। তার মতো একজন 'বিভাজন সৃষ্টিকারী' ব্যক্তিকে বেছে নিয়ে বিজেপি হয়তো ঝুঁকি নিচ্ছিল, কিন্তু একজন 'সোজা-সাপ্টা প্রশাসক' হিসেবে মানুষের কাছে তার একটা ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল।

মোদির জীবনী-লেখক ও সাংবাদিক নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যেভাবে তিনি গুজরাট পরিচালনা করেছিলেন, সেটা সহজে অনেকের মন জয় করেছিল।’

গুজরাটে নতুন নতুন সব রাস্তা, বিদ্যুতের লাইন, আমলাতান্ত্রিক লাল-ফিতার ঝামেলা কমিয়ে আনা এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো। এসব দেখে মুগ্ধ হন মধ্যবিত্ত ও ধনী ভোটাররা।

কিন্তু নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, একটি সমৃদ্ধ ও কম জনসংখ্যার রাজ্যে এগুলো অর্জন করা সেরকম বড় কোনো ব্যাপার নয়। আর গুজরাটের সামাজিক খাতে কিন্তু সেরকম বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি।

‘মোদির দ্যুতি দেখে সবাই মোহিত হয়ে গেলেন। আমি নিজেও এ ভুল করেছি। তিনি একবার বলেছিলেন, আমাদের এখানে কোনো লাল ফিতা নেই, আছে লাল কার্পেট। এখন যে ত্রাণসামগ্রী এসে পৌঁছাচ্ছে, তার জন্য লাল কার্পেট কোথায় বিছানো আছে?" (কিছু কিছু খবরে বলা হচ্ছে, এসব ত্রাণসামগ্রী এক শুল্ক বিভাগে আটকে পড়েছে)।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মোদির বর্মতে যে আসলে অনেক ছিদ্র, সেটা এ সঙ্কটে প্রকাশ পেয়ে গেছে। তারা বলছেন, যে ধরনের এক কেন্দ্রিক স্টাইলে তিনি দেশ চালান, সেটা হয়তো গত বছর সবাইকে আশ্বস্ত করেছে, কিন্তু এবার কিন্তু সেটা বেশ ফাঁপা বলে মনে হচ্ছে। এখন তিনি ব্যর্থতায় দায় চাপাচ্ছেন রাজ্যগুলোর ওপর। যেভাবে তিনি উদারহস্তে বিভিন্ন দেশে টিকা দান করার ঘোষণা দিচ্ছিলেন, সেটা এখন নিজেকে মহৎ বানানোর একটা লোকদেখানো অসাবধানী কৌশল বলেই মনে হচ্ছে। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী দেশ ভারতকে এখন ওই অঙ্গীকার ভঙ্গ করতে হচ্ছে। আর তিনি যেরকম সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সবকিছু চালান, যদিও অনেক ভোটার পছন্দ করে, সেটি সঙ্কট সমাধানের জন্য অন্য রাজনৈতিক দলের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

রবি আগরওয়াল বলেন, ‘তিনি সবকিছু্তেই তার নাম ও তার ছাপ রাখতে চান। কাজেই যখন কোনো ভুল হয়, সেটার দায়ও তাকে নিতে হয়। গাছেরটাও খাবেন, তলারটাও কুড়াবেন, সেটা তো হয় না।’

মোদি বিদেশেও তার এক বিরাট ব্রান্ড গড়ে তুলেছিলেন। একটি সংবাদপত্র লিখেছিল, ‘তার সেরাটা তিনি দেখাতে পারেন ভারতের বাইরে।’ নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেন্সে তাকে দেখে জনতা বিপুল হর্ষ-ধ্বনি দেয়। টেক্সাসে 'হাউডি, মোদি!' বলে যে সমাবেশে তিনি যোগ দেন, সেখানে এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যেন তার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাচ্ছিলেন।

রবি আগরওয়াল বলেন, ‘নিজের ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য তিনি যেরকম মরিয়া চেষ্টা চালান, তাকে সেজন্যে ‘ভারতের সবচেয়ে লোকদেখানো নেতা’ নেতা বলেও বর্ণনা করা হয়।

তার পেশিশক্তি-সর্বস্ব জাতীয়তাবাদ দেশে-বিদেশে ভারতীয়দের জন্য যেন এক ধরণের মলম হিসেবে কাজ করেছে। তিনি ভারতকে একটি পরাশক্তিতে পরিণত করার অঙ্গীকার করেছেন। রবি আগরওয়াল বলেন, কিন্তু এখন ভারতীয়দের মনে জ্বালা ধরে যাচ্ছে যখন তারা দেখছে থাইল্যাণ্ড, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মতো দেশও কোভিডের বিরুদ্ধে অনেক ভালোভাবে লড়াই করছে।

‘বিদেশে থাকা ভারতীয়রা এখন খুবই বিব্রত। বন্ধুদের কাছে যে দেশটিকে তারা এক উদীয়মান শক্তি বলে তুলে ধরেছিলেন, ওই দেশটিকে এখন যেভাবে দেখানো হচ্ছে সেটা নিয়ে তারা বিব্রত।’

মোদি কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন?

বৈষ্ণব অবশ্য বলছেন, নরেন্দ্র মোদি এটা বার বার প্রমাণ করেছেন যে তিনি খুবই ব্যতিক্রমী এক রাজনীতিক, যিনি সব প্রতিকূলতার মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।

‘অতীতে অনেক অবিশ্বাস্য খারাপ অবস্থা থেকে তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন, কাজেই এটা আবার যে ঘটবে না, সেটা আমি বলতে চাই না; বলছেন ট্রাভেলি।

সরকার এরই মধ্যে তাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের কাজে লেগে গেছে। যেসব গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবর যাচ্ছে, তাদের ওপর সরকার ক্ষুব্ধ। বিরোধী নেতাদের সাথে সরকার বিবাদে জড়িয়েছে এবং কোভিড মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থ বলে যারা টুইটারে সমালোচনা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সরকার দাবি করছে, ভারতকে হেয় করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। যেসব টুইট সরকার পছন্দ করছে না, সেগুলো সরিয়ে নিতে বলেছে টুইটারকে। এরপর সরকার সমর্থকরা এ টুইটারেই মিস্টার মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করে এবং তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করা শুরু করেছেন।


কিন্তু এত কাণ্ড যখন ঘটছে, তখন মোদি যে সবকিছুতে অনুপস্থিত, সেটা কিন্তু বেশ ভালোভাবেই ধরা পড়ছে। গত ২০ এপ্রিল তাকে কেবল একবার ভাষণ দিতে দেখা গেছে।

‘মহামারির শুরুতে মোদি জানতেন, ভারতকে ও নিজেকে তিনি কিভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চান। তিনি নিজেকে একজন জেনারেল হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন, যিনি তার জনগণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু এখন সেরকম কোনো ভূমিকা তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। কোনো ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া কিংবা সাহায্যের আবেদন জানানোর কোনো আগ্রহ তার নেই,’ বলছেন মিস্টার ট্রাভেলি।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মোদি হাতে গোনা কয়েকবার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি কখনো কোনো সংবাদ সম্মেলন করেননি, এমনকি কোভিডের সময়ও নয়।

নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চান না।’

কিন্তু ভারতে সবার মনে এখন এ প্রশ্ন ছাড়া আর কিছু নেই। ভারতের দরিদ্র মানুষ, শোকে স্তব্ধ মধ্যবিত্ত, এমনকি ধনী লোকেরা, যাদের কেউই ভারতের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় যে বিরাট ফাঁক রয়ে গেছে, সেটা থেকে পালাতে পারেননি। তারা কেউই বুঝতে পারছেন না, কিভাবে প্রধানমন্ত্রী এরকমটা ঘটতে দিতে পারলেন।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement