২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনা : মৃত রোগীর অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি করছে বিপন্ন রোগীদের পরিবার!

মহারাষ্ট্রের নাসিকের ডা: জাকির হুসেন হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার হঠাৎ লিক হয়ে যায়। - ছবি : সংগৃহীত

একদিকে দৈনিক সংক্রমণের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলেছে ভারত। অন্যদিকে দেশটিতে অক্সিজেনের অভাব বেড়েই চলেছে। তার মধ্যে আবার মহারাষ্ট্রের নাসিকের ডা: জাকির হুসেন হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার লিক হয়ে কমপক্ষে ২২ জন করোনা রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন সঙ্কটের মধ্যে ট্যাঙ্কার লিক হওয়ায় হাহাকার আরো বেড়েছে।

এর মধ্যেই দেখা গেল আরো মর্মান্তিক দৃশ্য। নাসিকের ওই হাসপাতালে মৃতদের পাশ থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার খুলে এনে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মানুষজন। কারণ ট্যাঙ্কার লিক হয়ে যাওয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা করোনা রোগীরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। সত্যিই জীবন বাঁচাতে লাশ হাতরাচ্ছে মরণাপন্ন রোগীর পরিবার।

মৃতদের মধ্যে ছিলেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা সুগন্ধা থোরাট। তার নাতি ভিকি যাদব বলেছেন, ‘‌চোখের সামনে এক ঘণ্টার মধ্যে এত মানুষকে মরতে দেখলাম। তার পরের দৃশ্য আরো মর্মান্তিক। ওই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর জন্য বাকিরা লাশের পাশ থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার খুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমিও সেই চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সফল হইনি।’‌

ভিকির কথায়, ‘‌অক্সিজেন ট্যাঙ্কার লিক হয়ে যাওয়ায় চাঞ্চল্য শুরু হয়েছিল। আমার দাদি শ্বাসকষ্টে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন। হাসপাতাল কর্মীদের জানানোর পরেই গোটা বিষয়টি জানতে পারি। চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। রোগীর আত্মীয়রা মরিয়া হয়ে যান।’‌

অনেকেই পরিজনদের বাঁচাতে রিকশায় চাপিয়ে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কেউ প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন। কেউ পারেননি।

অক্সিজেনের অভাবে এক ভাই তার ভাইকে বাঁচাতে পারেননি। করোনা আক্রান্ত ভাই বেশ সুস্থই ছিলেন। কিন্তু অক্সিজেন ট্যাঙ্কার লিক হওয়াতেই যত বিপত্তি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রোগীদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে। অন্তত ১০০ রোগীকে বাঁচানো সম্ভবও হয়েছে। যাদের পরিজনরা মারা গেছেন, তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।

অক্সিজেনের হাহাকার চলছে। ছবিটা যে কতটা ভয়াবহ তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে দিল্লির মাতা চনন দেবী হাসপাতালের পরিস্থিতি দেখে। দুশ’র বেশি কোভিড রোগী ভর্তি রয়েছেন সেখানে। কিন্তু অক্সিজেন অপ্রতুল। খারাপ অবস্থা রাজধানীর বহু ছোট হাসপাতালেরও। সেখানেও জোগান নেই অক্সিজেনের। হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলোর ছোট বড় হাসপাতালেও অবস্থা একই।

সূত্র : আজকাল


আরো সংবাদ



premium cement