১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আরো ভয়াবহ হবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ

করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর সেবা করছেন চিকিৎসকরা - ছবি : সংগৃহীত

ভারতে দ্বিতীয় দফার করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে মৃত্যু কম হলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ভয়াবহভাবে বাড়বে। ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ায় শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশটির বড় বড় ২৩টি রাজ্য ও ইউনিয়ন টেরিটোরিতে ভাইরাস সংক্রমণের হার বিশ্লেষণ করে বিশ্লেষণের তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

সংক্রমণ বাড়ার হারকে ভিত্তি করে মহামারীর এই অবস্থাকে দুইটি বড় ধাপে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে গত বছরের জানুয়ারি থেকে সংক্রমণ শুরু হয়, যা সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে। পরে এই বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তা স্তিমিত হয়ে আসে।

দ্বিতীয় ধাপে ফেব্রুয়ারির পর থেকে বেশিরভাগ রাজ্যেই (মহারাষ্ট্র ও পাঞ্জাব) ভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতায় ঢিল পড়ার সাথে ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার সংযোগ রয়েছে। পাশাপাশি সংগৃহীত তথ্য নির্দেশ করছে, পাঁচটি বড় রাজ্য/ইউনিয়ন টেরিটোরি- মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ ও চণ্ডিগড়ে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় প্রথম দফার চেয়েও বেশি সংক্রমণ হচ্ছে।

মহারাষ্ট্রে করোনার প্রথম ধাক্কা লাগে ২০২০ সালে ৯ মার্চ এবং তা ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ২৮৮ দিনের এই সময়কালে ১৯ লাখ ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়। প্রতিদিনের গড় হিসেবে তা ছয় হাজার ছয় শ ছয়। ২২ ডিসেম্বরের পর থেকে এই রাজ্যে দ্বিতীয় দফা করোনা সংক্রমণ আঘাত হানে। এই বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ৯৯ দিনে সংক্রমণ হয় নয় লাখ ১০ হাজার। প্রতিদিনের গড় হিসেবে তা নয় হাজার এক শ ৯৭।

একইভাবে, পাঞ্জাবে প্রথম দফায় গড় ৫৩২ সংক্রমণের চেয়ে বেড়ে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ৬৯ করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। অপরদিকে গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ ও চণ্ডিগড়ে বর্তমানে গড় সংক্রমণের হার ৮৮৮, ৮২৮ ও ১২৮। প্রথম দফায় এই হার ছিল যথাক্রমে ৮০৫, ৭৮০ ও ৬৪।

তবে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও নাটকীয়ভাবে ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর হার কমে এসেছে। মহারাষ্ট্রে এই হার ৭৫ ভাগ, পাঞ্জাবে ৪১ ভাগ, গুজরাটে ৮৩২ ভাগ, মধ্য প্রদেশে ৭২ ভাগ এবং চণ্ডিগড়ে ৬৫ ভাগ কমে এসেছে ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু।

দিল্লি হলি ফ্যামেলি হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিনের প্রধান ডা. সুমিত রায় বলেন, 'বর্তমানে ভাইরাস সংক্রমণ কম প্রাণঘাতী হলেও তা আরো বেশি সংক্রামক। সারা ভারতে আগের তুলনায় ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমেছে।'

তিনি জানান, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ আগের বিভিন্ন ভাইরাসের মতোই টিকে থাকার জন্য করোনাভাইরাসের এই পরিবর্তন হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে তরুণরা বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন। প্রায় বয়োজেষ্ঠ্যরা টিকা নেয়ায় তারা কমই আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে অপেক্ষাকৃত তরুণরা আক্রান্ত হওয়ায় ও আগের তুলনায় যথার্থ যত্ন নেয়ায় মৃত্যু কম হচ্ছে।

প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, সংক্রমিত ২৩ রাজ্য ও ইউনিয়ন টেরিটোরির মধ্যে ২১টিতেই ৩০ দিনে ধারাবাহিকভাবে ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে। শুধু বিহার ও উড়িষ্যাই এই ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া


আরো সংবাদ



premium cement