২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কাশ্মিরিদের ঘরে বন্দী রেখেই এবার ভারতীয়দের জমি কেনার অনুমতি দিলেন মোদি

- সংগৃহীত

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে যখন বিজেপি বাদে অন্য সকল বিরোধী দল জোট বাঁধছে, ঠিক তখনই নির্দেশিকা জারি করে ভারতের মোদি সরকার জানাল, এখন থেকে জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখে জমি কিনতে পারবেন যেকোনো ভারতীয়। সাধারণ জমি আইন মেনেই যে কেউ ভূস্বর্গে জমি কিনতে পারবেন। কাশ্মিরিদের রক্ষাকবচ ও মর্যাদা অর্থ্যাৎ ভারতীয় সংবিধান থেকে বিতর্কিত ভাবে ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করার মাধ্যমেই সাধারণ ভারতীয়দের এই সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এর আগে জম্মু-কাশ্মিরের স্থায়ী বাসিন্দা হলেই কেবল সে রাজ্যে জমি কেনা যেত। কিন্তু এখন থেকে আর সেই বাধ্যবাধ্যকতা থাকছে না।

ভারতের কেন্দ্রীয় মোদি সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইউনিয়ন টেরিটরি অফ জম্মু অ্যান্ড কাশ্মির রিঅর্গানাইজেশন (অ্যাডপশন অফ সেন্ট্রাল ল) থার্ড অর্ডার, ২০২০ অনুযায়ী সেখানে জমি কিনতে পারবেন যে কোনো ভারতীয়। অর্থাৎ কাশ্মির উপত্যকায় জমি কেনার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা রইল না।

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই নির্দেশ সংশোধন হওয়ার পর থেকেই কার্যকর করা হবে। শুধু তাই নয়, ভারতের যে কোনো জায়গায় জমি কিনতে গেলে যে আইন মানতে হয়, কাশ্মিরেও তার কোনো অন্যথা হবে না। এই নির্দেশের ব্যাখ্যা হিসেবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জেনারেল ক্লসেস অ্যাক্ট, ১৮৯৭-এর উল্লেখ করেছে বলে খবর। ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া তথা কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বিলুপ্ত করার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মিরে জমি কেনা ইস্যু নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এবার আইনের করেই বিতর্কিত সেই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করে দিল মোদি সরকার।

উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারা বিলোপ করার কিছু দিনের মধ্যেই দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মিরে জমি কেনার জন্য সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ, বিএসএফের মতো সামরিক এবং আধাসামরিক বাহিনীগুলোকে এখন থেকে আর 'নো অবজেকশন সার্টিফিকেট' (এনওসি) নিতে হবে না। ১৯৭১ সালে জারি এই সংক্রান্ত একটি সার্কুলার প্রত্যাহার করে নিয়েছিল জম্মু-কাশ্মির প্রশাসন।

'রাইট টু ফেয়ার কমপেনসেশন অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি ইন ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন' - ২০১৩ সালের এই জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত আইন জম্মু-কাশ্মিরেও কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছিল বছর খানেক আগে থেকেই। কেন্দ্রীয় এই আইন অনুযায়ী, ভারতের জাতীয় বা রাজ্য স্তরের কোনো নিরাপত্তা সংস্থা চাইলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের যে কোনো এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করতে পারে। এর জন্য কোনো সরকার বা প্রশাসনের অনুমতি তাদের নিতে হবে না। কিন্তু সেই আইন কাশ্মিরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না। কারণ ১৯৭১ সালে জারি হওয়া সার্কুলারটিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী কিংবা সিআরপিএফকে জম্মু-কাশ্মিরে জমি অধিগ্রহণ করতে হলে কিংবা কিনতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু আগেই সেই বাধা তুলে নেয়া হয়েছিল। আর এবার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সাধারণ ভারতীয়দের জন্যও কাশ্মিরে জমি কেনার সুযোগ করে দিল মোদি সরকার। ভারতীয় সংবিধান থেকে নিজেদের বিশেষ মর্যাদা হারানোর পর মোদি সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্ত কাশ্মিরিদের পিঠে যেন আরো একবার ছুরিকাঘাত।


আরো সংবাদ



premium cement