২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মোদির মন্ত্রিসভা থেকে হরসিমরতের পদত্যাগ

মোদির মন্ত্রিসভা থেকে হরসিমরতের পদত্যাগ - ছবি : সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। ওই দিনই তার সরকারের কৃষিবিষয়ক দুটি বিলের প্রতিবাদে মন্ত্রী হরসিমরত কাউর পদত্যাগ করেছেন।

মোদি সরকারের শরিক হয়েও কৃষি সংক্রান্ত দুটি বিলের তীব্র বিরোধিতা করলেন শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিং বাদল। শুধু তাই নয়। সকলকে চমকে দিয়ে লোকসভায় তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আমার স্ত্রী হরসিমরত কাউর বাদল এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। সেই মতো মন্ত্রিসভা থেকে হরসিমরত বৃহস্পতিবার রাতেই ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি ছিলেন কেন্দ্রের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের পূর্ণ মন্ত্রী।

ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, কৃষক বিরোধী অর্ডিন্যান্স ও আইনের প্রতিবাদে আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছি। কৃষকদের কন্যা ও বোন হিসেবে আমি গর্বিত। কৃষিপ্রধান পাঞ্জাবের রাজনীতির কথা মাথায় রেখেই মোদি সরকারের বিতর্কিত কৃষি বিলকে সমর্থন করতে নারাজ শিরোমণি অকালি দল। যদিও কৃষক ও কৃষি সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স দুটি যখন গত জুন মাসে মন্ত্রিসভার সম্মতি আদায় করেছিল, তখন কিন্তু হরসিমরত তার বিরোধিতা করেননি। তাহলে আজ হঠাৎ বিরোধিতা করে ইস্তফা কেন? প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে শরিক অকালি দলের মন্ত্রীর এই আচমকা ইস্তফায় বড় ধাক্কা খেল মোদি সরকার।

কৃষি ও কৃষক সংক্রান্ত দুটি বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে আগাগোড়া সরব ছিল বিরোধীরা। গান্ধী মূর্তির সামনে বিলের কপি পোড়ায় কংগ্রেস। মোদি সরকারকে ‘বাহুবলী’ বলে তোপ দেগে কৃষির ইতিহাসে এই বিলকে এক কালো অধ্যায় বলেই সমালোচনা করে সোনিয়া গান্ধীর দল। বিল পাশের সময় লোকসভায় দলের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর নেতৃত্বে ওয়াক আউটও করে কংগ্রেস। সঙ্গে ছিল ডিএমকে। বিদেশ থেকে ট্যুইট করে সমালোচনার সুর চড়ান রাহুল গান্ধীও। বললেন, কৃষকদের উপার্জন বাড়াবেন বলেছিলেন মোদিজি। কিন্তু এখন কালা কানুন এনে আর্থিক দিক দিয়ে শোষণ করতে চাইছেন। এটা জমিদারিরই নতুন রূপ বলে তোপ দাগেন তিনি।

পৃথকভাবে সরব হন তৃণমূলের এমপিরাও। বিল দুটিকে অসংসদীয় আখ্যা দেন তৃণমূলের লোকসভার মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্যই হলো সব কিছু বেচে দেওয়া। ফসলের উপর এবার থেকে কৃষকদের আর কোনও অধিকারই থাকবে না, দাবি করে নীল চাষ প্রসঙ্গও টেনে আনেন কল্যাণবাবু। তৃণমূলের অন্য বক্তা মহুয়া মৈত্রও সরব ছিলেন। তিনি বলেন, এতে করে রাজ্যের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই বিল দুটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়া হোক।

যদিও এসবের পরেও দীর্ঘ আলোচনা শেষে ধ্বনিভোটেই পাশ হয়ে যায় ‘দ্য ফামার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন’ এবং ‘দ্য ফামার্স এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যাসিওরেন্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস বিল ২০২০।’ কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জবাবে জানিয়ে দিলেন, এই দুটি বিলে আদৌ কৃষকদের কোনো বিপদ হবে না। উল্টা সুরাহাই হবে। ফসল বিক্রির নিরাপত্তা বাড়বে। অথচ বিরোধীরা অহেতুক দেশকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।

সূত্র : বর্তমান


আরো সংবাদ



premium cement