২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঐতিহাসিক ভবন বাতিল করে নতুন সংসদ ভবন করছে ভারত

ভারতের বর্তমান সংসদ ভবন - ছবি : বিবিসি

ভারতের ঐতিহাসিক সংসদ ভবনটি বাতিল হয়ে যাচ্ছে এবং তৈরি হতে যাচ্ছে নতুন সংসদ ভবন। রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রে ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার ব্যয়ে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ ২০২২ সালে শেষ হবে বলে জানানো হচ্ছে।

ভারতীয় স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির বছরকে সামনে রেখে এই প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।

দেশটির নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টাটাকে।

তবে সমালোচকরা বলেছেন, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ না করে, বরং সরকারের উচিত তা করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যয় করা।

ভারতে এখন শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং বিশ্বে আক্রান্তের তালিকায় ভারত এখন দু নম্বরে। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে দেশটিতে মারা গেছে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ।

কিন্তু সরকার যুক্তি দিয়েছে যে, দেশটিতে নতুন সংসদ ভবনের প্রয়োজন। কারণ বর্তমান ভবনটি তৈরি হয়েছিল ১৯২০-এর দশকে এবং ভবনটিতে ‘ক্ষয় ও অতি ব্যবহারের’ লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

সরকার বলছে, সংসদ সদস্য ও সংসদ কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে।

নতুন ভবনটি বর্তমান সংসদের চেয়ে বড় হবে এবং সেখানে ১৪০০ এমপির জন্য আসন থাকবে বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া।

খবরে বলা হচ্ছে নতুন ভবনটি হবে তিনতলা এবং ত্রিভুজাকৃতি।

দিল্লিতে ঔপনিবেশিক আমলের সরকারি ভবনগুলো আধুনিকায়নের জন্য সরকারের নেয়া ২০০ কোটি ডলারের এক প্রকল্পের অংশ হিসেবে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তবে গোটা প্রকল্পটি নিয়ে ইতোমধ্যেই বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রকল্পের সমালোচকরা এর খরচ এবং নতুন ভবনগুলোর নির্মাণশৈলীর নান্দনিকতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

দেশটিতে নতুন সংসদ ভবনের জন্য দাবি প্রায় এক দশকের পুরনো। নতুন একটি ভবন তৈরির প্রয়োজনীয়তার পক্ষে সংসদে গত এক দশক ধরে বক্তব্য দিয়ে এসেছেন বিভিন্ন স্পিকার।

ব্রিটিশ স্থপতি হারবার্ট বেকার ভারতের বর্তমান গোলাকৃতি সংসদ ভবনটির নকশা তৈরি করেছিলেন। এই সংসদ ভবনে বিশাল গম্বুজাকৃতি হল রয়েছে এবং নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল ১৯২৭ সালে।

ভারতীয় ঐতিহাসিক দিনিয়ার প্যাটেল এক নিবন্ধে লিখেছেন, বর্তমান সংসদ ভবনটি নির্মাণের পর এর গোলাকৃতি স্থাপত্য ও নকশা নিয়ে নানাধরনের সমালোচনাই যে শুধু হয়েছিল তাই নয়, তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজনীতিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী মহলে এই নকশা নিয়ে নানা ঠাট্টা মস্করাও করা হয়েছিল।

দিনিয়ার প্যাটেল বলছেন, সেসময় ব্রিটিশ সমাজের একজন পরিচিত ব্যক্তি ও রাজনীতিক ফিলিপ স্যাসুন বলেছিলেন, ‘এটা দেখতে গ্যাস মজুত রাখার গোল আধারের মতো - আসলেও এটা তাই!’

এমনকী স্থপতি বেকার নিজেও তার নকশার ত্রুটি স্বীকার করেছিলেন।

দিনিয়ার প্যাটেল তার নিবন্ধে লিখেছেন, বেকার স্বীকার করেছিলেন যে, কাউন্সিল হাউসের গোল মাথার ওপর গম্বুজটা দেখতে বেশ বেখাপ্পা- সেটা মানানসই হয়নি।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement