২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

লাদাখে দখল করে নেয়া জমি কবে ছাড়বে চীন, উত্তর নেই ভারতের কাছে

- সংগৃহীত

লাদাখে হঠাৎ সফরে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেনাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেও মূল প্রশ্ন এড়াতে পারছেন না দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তা হল, লাদাখে দখল করা এলাকা থেকে চীনকে সরানো যাবে কবে, কী ভাবে?

কংগ্রেস নেতা শশী থারুর শনিবার ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিং এবং নরেন্দ্র মোদির লে এবং সিয়াচেন সফরের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন করেছেন,‘১৯৭১-এ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানকে দু’টুকরো করে দেয়ার আগে লে-তে গিয়েছিলেন। ২০০৫-এ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সিয়াচেনে গিয়েছিলেন। সেটাই ছিল প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সিয়াচেন সফর। তার ফল হল, সিয়াচেন হিমবাহ এখনও ভারতের নিয়ন্ত্রণে। ২০২০-তে ভারত কী আশা করবে? নিজেদের এলাকা ধরে রাখতে কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত কি দেখা যাবে?’

ভারতের সরকারি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মোদির আচমকা লে সফরের পিছনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মস্তিষ্ক কাজ করেছে। মোদি কাল নীমুতে পৌঁছে সিন্ধু দর্শন পুজো করেন। তার পর সেনা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর সেনা জওয়ানদের কথা বলে মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা চীনের সমর-কৌশলী সুন জু-র ‘দ্য আর্ট অফ ওয়ার’-এর মন্ত্র মেনেই হয়েছে বলে বিজেপির দাবি।

রাম মাধবের যুক্তি,‘সুন জু বলেছিলেন, সেনা জওয়ানদের নিজের সন্তান ভাবতে হবে। তা হলে তারা গভীর উপত্যকাতেও তোমাকে অনুসরণ করবে। তাদের প্রিয় পুত্রের মতো দেখবে। তা হলে মৃত্যু পর্যন্ত তোমার পাশে থাকবে।’

তা শুনে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের কটাক্ষ,‘জওহরলাল নেহরু,  ইন্দিরা গান্ধী, লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মতো ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীরা কি সেনার মনোবল বাড়াতে সীমান্তবর্তী এলাকায় যাননি? কিন্তু বর্তমান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদি তো সীমান্ত থেকে ২৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লাদাখের রাজধানী লে শহরের নীমু নামক জায়গায় আটকে রইলেন!’

বিজেপি নেতারা বলছেন, ৬৯ বছর বয়সী মোদির ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় গিয়ে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলাও চাট্টিখানি কথা নয়। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০০৫-এ মনমোহন সিং ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় সিয়াচেন হিমবাহে গিয়েছিলেন ৭৩ বছর বয়সে, বাইপাস সার্জারির পরে।

কংগ্রেসের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী মোদি কি এখনও চীন লাদাখে ভারতের জমি দখল করে রেখেছে বলে অস্বীকার করছেন? তা হলে চীনের নাম না করে সম্প্রসারণবাদীই বা বললেন কেন? শুক্রবার রাহুল গান্ধী একটি ভিডিওতে দেখিয়েছিলেন, লাদাখিরাই বলছে যে চীন সেখানকার জমি দখল করে রেখেছে। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের দাবি, ওই ভিডিওতে যাদের সাধারণ লাদাখি বলে দেখানো হয়েছে, তাদের অনেকেই কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা-কর্মী। কংগ্রেসের পাল্টা যুক্তি, লাদাখের বিজেপি সংসদ সদস্য জেমিয়াং শেরিং নামগিল, লে-র বিজেপির জেলা সভাপতি দোরজি আংচুক, লাদাখে স্বায়ত্তশাসিত পার্বত্য জেলা পরিষদের ডেপুটি মেয়র, বিজেপি নেতা কনচোক স্ট্যানজিন, লে-র নিয়োমা ব্লক উন্নয়ন পরিষদের বিজেপি নেত্রী উরগেই চদন এক সুরে বলেছেন, লাদাখে চীন জমি দখল করেছে। রাহুলের যুক্তি,‘দেশপ্রেমী লাদাখিরা চীনের অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। তাতে কান না দিলে মূল্য দিতে হবে।’

কংগ্রেসের কপিল সিব্বল গত ২২ মে ও ২৩ জুন প্যাংগং লেকের উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি তুলে ধরে মোদিকে প্রশ্ন ছুড়েছেন, চীন ফিঙ্গার-ফোর পর্যন্ত এলাকা দখল করে রেখেছে কিনা? গালওয়ান উপত্যকার জমি, হট স্প্রিংস এলাকায় জমি চীন দখল করেছে কি না? সিব্বলের বক্তব্য,‘মোদির এখন একমাত্র রাজধর্ম, চীনের চোখে চোখ রেখে বলুন, দখল করে রাখা ভারতীয় জমি ছাড়তে হবে।’ সূত্র : আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement