১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হিন্দু প্রতিবেশীর শেষযাত্রায় লাশ কাঁধে মুসলিম পড়শিরা

হিন্দু প্রতিবেশীর শেষযাত্রায় লাশ কাঁধে মুসলিম পড়শিরা - প্রতীকী ছবি

লকডাউনের আবহেই সম্প্রীতির নজির গড়ল ভারতের মালদার কালিয়াচক। পরলোকগত বৃদ্ধের শেষযাত্রায় কাঁধ দিলেন মুসলিম যুবকরা। ১৫ কিমি হেঁটে শ্মশান পর্যন্ত বন্ধুর বাবার লাশ পৌঁছে দিলেন সেই মুসলিম যুবকেরা। মানবতার ওপর কোনো ধর্ম নয়, এই বার্তা দিয়েই সম্পন্ন হলো মৃত নবতিপর বৃদ্ধ বিনয় সাহার শেষকৃত্য । এহেন দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য কালিয়াচক-২ ব্লকের লওয়াইতলা গ্রামের প্রতি কৃতজ্ঞ মৃতের দুই ছেলে কমল ও শ্যামল সাহা।

জানা গেছে, লকডাউন এবং সংক্রমণের আবহে লাশের সৎকার কীভাবে হবে, এই নিয়ে সাহা পরিবারের উদ্বেগ বাড়ে। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে খবর পৌছলেই, বন্ধ পরিবহণ। ফলে সৎকার নিয়ে একটা অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হয়। লাশবাহী খাটের ওপরে সারা দিন পড়ে থাকে সেই লাশ। এরপর রাত বাড়লেই ধীরে ধীরে জমায়েত শুরু করেন পড়শিরা।

জানা গেছে, মুসলিম অধ্যুষিত ওই গ্রামে একমাত্র হিন্দু, সাহা পরিবার। গত ২০ বছর ধরে থাকছেন লওয়াইতলা গ্রামে। ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ থাকলেও, পড়শিদের সঙ্গে আত্মিক যোগ তৈরি হয় সেই পরিবারের। ফলে শেষযাত্রাতেও সেই ধর্মীয় বিভেদ ভুলে পড়শির পাশে এসে দাঁড়ায় গোটা গ্রাম। শুধু মানবিকতার খাতিরে! এমনটাই জানিয়েছেন সেই গ্রামের সাদ্দাম শেখ। তিনি বলেন, "আমরাই প্রথম বিনয় সাহার মৃত্যুর খবর পাই। তাই পড়শি হিসেবে নিজেদের কর্তব্য করতে এগিয়ে আসি। মানবতার ওপরে কোনো ধর্ম নেই। সেটাই আমরা বলতে চেয়েছি।" এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রাজিয়া বিবি। তিনি বলেছেন, "আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পৃথক হলেও, আমরা একসঙ্গেই আছি।"

মৃতের ছেলে শ্যামল সাহা বলেছেন, "বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগে মৃত্যু হয় বাবার। শেষকৃত্য নিয়ে আমরা বেশ উদ্বেগে পড়ি। লকডাউনের কোনও আত্মীয় আসতে পারবেন না। এটা ভেবে ভেব সময় পেরিয়ে যায়। তখনই পড়শিরা এগিয়ে আসেন আর রীতি মেনেই শেষকৃত্য করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।"
সূত্র : এনডিটিভি


আরো সংবাদ



premium cement