২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিষ খেয়ে আত্মহত্যা : লাশ নিতে হাজির ৭ স্ত্রী

বিষ খেয়ে আত্মহত্যা : লাশ নিতে হাজির ৭ স্ত্রী - ছবি : সংগৃহীত

সাংসারিক টানাপোড়েনে বেঁচে থাকার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন বছর ৪০-এর পবন কুমার। জীবন যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্তই নেন পেশায় গাড়িচালক ওই ব্যক্তি। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রোববার বিষও খেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পবনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রী। কিন্তু, সেখানে ভরতি করার কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। আর তারপরই শুরু হয় বিপত্তি। একের পর এক মহিলা এসে পবনকে নিজের স্বামী বলে দাবি করতে থাকেন। পরিস্থিতি দেখে চোখ কপালে ওঠে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের। বহু চেষ্টার পরে পবন কুমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও এই মীমাংসা হয়নি ঘটনাটির। জানা যায়নি পবন কুমারের আসল স্ত্রীর পরিচয়ও। অভূতপূর্ব এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের সঙ্গে হরিদ্বারের রবিদাস বস্তি এলাকা বসবাস করতেন পেশায় গাড়িচালক পবন কুমার। গত রোববার সন্ধ্যায় সময় বাড়িতে ফিরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কিছুক্ষণ বাদে স্বামীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রী। খবর দেন স্থানীয় থানাতেও। সেই খবরের ভিত্তিতে হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছায় পুলিশ।

এদিকে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় পবনের। এরপরই তাঁর স্ত্রীকে জেরা করেন পুলিশকর্মীরা। পবন কুমার কেন আত্মহত্যা করলেন তার কারণ জানতে চান। এর উত্তরে তার স্ত্রী জানান, চেনাশোনা মানুষদের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন তার স্বামী। পাওনাদাররা ধার শোধের জন্য চাপ দিতেই চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। কীভাবে টাকা শোধ করবেন তা নিয়ে পরিকল্পনা করছিলেন। এর মাঝেই রোববার আচমকা বিষ খেয়ে নেন। দেনা মেটাতে না পারার জন্য তিনি আত্মহত্যা করেছেন। একথা শুনে আর কিছু না বলে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান তদন্তকারীরা। তার রিপোর্টেও পাকস্থলীতে বিষ থাকার প্রমাণ মেলে।

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পবন কুমার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে বলেই জানায় পুলিশ। আর তারপর মর্গ থেকে তার লাশটি পরিবারের হাতে তুলে দেয়া সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, মর্গ থেকে লাশটি বের করে পরিবারের হাতে তুলে দেয়ার সময়ই বাধে গন্ডগোল। আচমকা আরো চার মহিলা এসে পবন কুমার তাদের স্বামী বলে দাবি করতে থাকেন।

বিষয়টি দেখে হতম্ভব হয়ে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। ওই মহিলাগুলিকে জেরা করে পবন কুমারের সম্পর্কে অনেক কথা জানা যায়। তবে কোনো মহিলাই পবন কুমারের সঙ্গে যে অন্য মহিলাদের সম্পর্ক ছিল তা জানতেন না বলে দাবি করেন। একে অপরকে চেনেন না বলেও জানান। এরপর পরের দিন আরো দু’জন মহিলা হাসপাতালে এসে পবন তাদের স্বামী বলে দাবি করেন। এর জেরে আরো সমস্যায় পড়ে যান তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পবনের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। এতদিন যে ভাড়াবাড়িতে থাকত তার ভাড়াও মেটাতে পারেননি তিনি। হতে পারে তিনি এতগুলো মেয়েকে বিয়ে করে প্রচণ্ড চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। তাই আত্মহত্যা করেছেন।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

 


আরো সংবাদ



premium cement