২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবেই, বাদ যাবে দু’কোটি : বিজেপি সভাপতি

দিলীপ ঘোষ - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) হবেই বলে মঙ্গলবার কলকাতায় দাবি করেছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বুধবার দিল্লিতে বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসার ঠিক আগে একই দাবি তুললেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নয়া দিল্লিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘সেভ বেঙ্গল’ নামে একটি আলোচনাসভায় তিনি বলেন, ‘‘অসমের ধাঁচে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে। তাতে প্রায় দু’কোটি মানুষ বাদ যাবে। বিদেশি নাগরিকেরা এসে রাজ্য তথা দেশের সম্পদ নষ্ট করছে। তা রুখতেই এনআরসি প্রয়োজন।’’

পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি রুখতে পথে নেমে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তা নিয়ে দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পুরনো অভ্যাস আছে কিছু হলেই রাস্তায় নেমে পড়া। বাড়ি থাকতে পারেন না। সেই অভ্যাস বজায় রাখতেই তিনি রাস্তায় নামছেন। ২০২১ সালের পরে তো রাস্তাতেই নামতে হবে। তবে যে-ই রাস্তায় নামুক, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবেই।’’

পশ্চিমবঙ্গে এখন পাখির চোখ বিজেপি সভাপতির। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে এ দিন তিনি পশ্চিমবঙ্গে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব ভুলে সকলকে এখন থেকেই ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছেন তিনি। জনসংযোগ বাড়াতে আসন্ন দুর্গাপুজোর মরসুমকে পুরো দস্তুর কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। খোদ সভাপতি অমিত পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন করতে পারেন। অমিতের আগে মহালয়ায় দলের কার্যকরী সভাপতি জেপি নড্ডা যেতে পারেন পশ্চিমবঙ্গে।

বৈঠকে অমিত রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের খতিয়ান নেন। লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহল ও উত্তরবঙ্গে ভালো ফল করলেও কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় ফল ভালো হয়নি বিজেপির। এখনো দেখা যাচ্ছে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়ায় সদস্য আশানুরূপভাবে বাড়ছে না। এই সমস্যা কাটাতে বিকল্প পথ খুঁজবে দল। প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজও দ্রুত শুরু করতে চায় দল। ঠিক হয়েছে, প্রতি মাসে রাজ্যে সাংগঠনিক প্রস্তুতির পর্যালোচনা হবে। রাজ্যে বিজেপির কর্মসূচির বিরুদ্ধে ‘পুলিশের দমননীতি’র কথা জানানো হয় অমিতকে।

বৈঠকে যোগ দিতে বুধবার সকালের বিমানে দিলীপ-মুকুল ছাড়াও দিল্লি যান রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, সহ-সাধারণ সম্পাদক কিশোর বর্মণ, রাহুল সিংহ। সন্ধ্যা সাতটার পরে শুরু হয় বৈঠক। ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। অমিতের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি ও পশ্চিমবঙ্গের সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন একপ্রস্ত কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের সঙ্গে। এর আগে জুলাইয়ে অমিতের সঙ্গে বৈঠকে হয়েছিল রাজ্য বিজেপি নেতাদের। অগস্টে বৈঠক হয়নি।

অমিতের সঙ্গে বৈঠকের আগে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘শোভন-বৈশাখী’ প্রসঙ্গ উঠবে কি না। দিলীপ বলেন ‘‘প্রাইভেট বিষয়।’’ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর ঘুরে গিয়েও ফের তৃণমূলে থেকে যাওয়া দেবশ্রী রায় প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি সদর দফতর এখন রাজনৈতিক পর্যটনের জায়গা। অনেকেই আসেন। ভবিষ্যতে আরো অনেকে আসবেন।’’ মুকুল রায়ের সঙ্গে তার তিক্ততার সম্পর্ক উড়িয়ে দিয়ে দিলীপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই তো দু’জনে বিমানে গল্প করতে-করতে এলাম। সব সংবাদমাধ্যমের মনগড়া কাহিনি।’’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement