১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গাজায় হামাসের জয় হচ্ছে!

গাজায় হামাসের জয় হচ্ছে! - ফাইল ছবি

ইসরাইলের গাজা যুদ্ধে কে জয়ী হচ্ছে- এ নিয়ে ধোঁয়াশা ক্রমেই কেটে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকী বলেছে, এই লড়াইয়ে আসলে জয় হচ্ছে হামাসের। অন্যদিকে গত শুক্রবার সম্প্রচারিত এক ইসরাইলি টেলিভিশন জরিপে বলা হয়েছে, দেশটির ৫১ শতাংশ মানুষ বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে তেলআবিবের ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ অসম্ভব। আর এ সময়ে নেতানিয়াহুর গাজা যুদ্ধের বিষয়ে খোদ ইসরাইলেই জনমত তার বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। এ সময়ে তার পক্ষে রয়েছেন মাত্র ২৮ শতাংশ ইসরাইলি। ৬৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নেতানিয়াহু যেভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেথের সাবেক প্রধান ডিসকিন বলেছেন, নেতানিয়াহু হলেন ইসরাইলের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বাজে প্রধানমন্ত্রী। এতে স্পষ্ট নেতানিয়াহু এই যুদ্ধে জয় পাচ্ছেন না।

হামাস এখন আরো শক্তিশালী!
আমেরিকান ম্যাগাজিন ফরেন অ্যাফেয়ার্স নিশ্চিত করেছে যে হামাস আন্দোলন ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং ফিলিস্তিনিরা যে কারণ বা উদ্দেশ্যে লড়াই করছে সেটি আরো জনপ্রিয় ও গ্রহণীয় হয়ে উঠেছে। ম্যাগাজিনটি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ‘গাজা উপত্যকায় ৯ মাস ইসরাইলি যুদ্ধাভিযানের পর, হামাস পরাজিত হয়নি, এমনকি তারা পরাজয়ের ধারেকাছেও নয়।’

এতে উল্লেখ করা হয়, ইসরাইল ৪০ হাজার সৈন্য নিয়ে গাজা উপত্যকায় আক্রমণ করে এর জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে বাস্তুচ্যুত করেছে, ৩৭ হাজারেররও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, উপত্যকায় কমপক্ষে ৭০ হাজার টন বোমা ফেলেছে, গাজার অর্ধেকেরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং উপত্যকায় সীমিত প্রবেশাধিকারে অঞ্চলটি পানি, খাদ্য ও বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত, যা সমগ্র জনসংখ্যাকে অনাহারের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।

আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রবার্ট পেপ ফরেন অ্যাফেয়ার্সের এই প্রতিবেদনে স্পষ্টতই বলেছেন, হামাসের জয় হয়েছে এবং ইসরাইলের কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, ইসরাইলি নেতারা ক্রমাগত দাবি করেছেন যে তারা হামাসকে পরাজিত করার এবং এর ক্ষমতা দুর্বল করার কাছাকাছি, কিন্তু এখন যা স্পষ্ট হয়েছে তা হলো হামাসের শক্তি আসলে বাড়ছে। ইসরাইলের কৌশলের মূল ভুলটি কৌশলের ব্যর্থতা নয়; বরং বিপর্যয়কর ব্যর্থতা ছিল হামাসের শক্তির উৎস সম্পর্কে একটি গুরুতর ভুল ধারণা যা ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। গাজার ওপর যে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ ইসরাইল চাপিয়েছে তা তারা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা আসলে কেবল প্রতিরোধের শক্তি বাড়িয়েছে। এর নানাবিধ ক্ষতি সত্ত্বেও, হামাস এখনো গাজা উপত্যকার বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে, যেখানে বেসামরিক লোকজন এখন কেন্দ্রীভূত। সাম্প্রতিক ইসরাইলি মূল্যায়ন অনুসারে, হামাসের এখন গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে প্রচুরসংখ্যক যোদ্ধা রয়েছে, তারা জেনেছিল যে এই অঞ্চলগুলো গত শরতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী দখল করেছিল।

রবার্ট পেপ উল্লেখ করেছেন যে, হামাস এখনো ইসরাইলে আঘাত হানতে সক্ষম এবং সম্ভবত এর ১৫ হাজারের বেশি সজ্জিত যোদ্ধা রয়েছে এবং তার ভূগর্ভস্থ টানেলের ৮০ শতাংশের বেশি নেটওয়ার্ক এখনো পরিকল্পনা, অস্ত্র সংরক্ষণ ও পরিবহনের ব্যবহারের উপযুক্ত। গাজায় হামাসের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বও অক্ষত।

রবার্ট পেপ বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বোমাবর্ষণ এবং স্থল আক্রমণ ফিলিস্তিনিদের জনসমর্থন কমায়নি বরং প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন আগের চেয়ে বেড়েছে, বিশেষ করে পশ্চিম তীরে, যা ইঙ্গিত দেয় যে হামাস ফিলিস্তিনি সমাজের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
একজন আমেরিকান কর্মকর্তাও সিবিএসকে নিশ্চিত করেছেন যে, গাজা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ের জন্য ইসরাইলের কোনো পরিকল্পনা না থাকায় তারা ‘হামাসকে ধ্বংস করার’ লক্ষ্য অর্জনের কাছাকাছি নেই। এর আগে, ইসরাইলি দখলদার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছিলেন যে, হামাস আন্দোলনকে ধ্বংস করার বিষয়ে আলোচনায় ‘ছাইয়ের বিচ্ছুরণ’ যোগ করেছেন। হাগারি বলেছেন, ফিলিস্তিনি সরকার যদি হামাসের বিকল্প খুঁজে না পায় তবে এই আন্দোলন থাকবে।

আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্যাখ্যা করেছেন যে, হামাসের মতো আন্দোলনের শক্তিমত্তা অর্থনীতির আকার, সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত বিকাশ, বিদেশী শক্তির সহযোগিতার মতো সাধারণ বস্তুগত উৎসগুলো থেকে আসে না যা বিশ্লেষকরা রাষ্ট্রের শক্তি বিচার করার জন্য ব্যবহার করেন। এই আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো এতে নতুন সংযুক্তির ক্ষমতা, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের যোদ্ধা এবং অপারেটিভদের আকৃষ্ট করার ক্ষমতা, যারা মারাত্মকভাবে মোটিভেটেড এবং তারা এর জন্য জীবন দিতে চায়। শেষ পর্যন্ত এটি আসে যে আদর্শ বা উদ্দেশ্যের জন্য তারা লড়াই করে তার প্রতি সেই জনগোষ্ঠীর সমর্থনের ব্যাপকতার ওপর। বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, হামাসের প্রতি এ সমর্থন বাড়ছে। শুধু গাজাতেই নয় পশ্চিম তীরেও।

পরাজিত করা সম্ভব নয়
পেপ বলেছেন, ৯ মাসের কঠিন যুদ্ধের পর, কঠোর বাস্তবতা স্বীকার করার সময় এসেছে। শুধু সামরিক পদ্ধতি হামাসকে পরাজিত করতে পারবে না। হামাস একটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক আন্দোলন যাতে পরাজয় নেই এবং শিগগিরই এটি অদৃশ্য হয়ে যাবে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এটি ৭ অক্টোবরের আগের চেয়ে আরো বেশি জনপ্রিয় এবং এর আবেদন আরো বেড়েছে।

হামাসের গতিশীলতা ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে হামাসের টিকে থাকার শক্তি জোগায়। ফিলিস্তিনি মতামতের সমীক্ষা হামাসের জন্য সম্প্রদায়ের সমর্থনের পরিমাণ মূল্যায়ন করতে সহায়তা করতে পারে। ৭ অক্টোবর থেকে গাজার জনসংখ্যা জরিপে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় দেখা যায়। অসলো চুক্তির পরে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি পোলিং সংস্থা প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চ (পিএসআর) ফিলিস্তিনিদের ওপর বিভিন্ন সময় জরিপ চালায়। ২০২৩ সালের জুন থেকে সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে পাঁচটি পিএসআর সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এতে দেখা যায়, ৭ অক্টোবরের আগের তুলনায় এখন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাসের প্রতি রাজনৈতিক সমর্থন তার প্রতিযোগীদের তুলনায় বেড়েছে। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাস ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহর প্রতি ২০২৩ সালের জুনে প্রায় কাছাকাছি সমর্থন ছিল। আর ২০২৪ সালের জুনে দ্বিগুণ ফিলিস্তিনি হামাসকে সমর্থন করে (ফাতাহের জন্য ২০ শতাংশের তুলনায় ৪০ শতাংশ)।

ইসরাইলি আক্রমণ ফিলিস্তিনিদের হামাসের প্রতি বিরূপ করেনি। গাজায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণ এবং স্থল আগ্রাসন ইসরাইলের অভ্যন্তরে ইসরাইলি বেসামরিকদের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য ফিলিস্তিনিদের সমর্থন কমিয়ে দেয়নি অথবা ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য স্পষ্টতই হতাশাজনকভাবে সমর্থন হ্রাস করেনি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে, ৭৩ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেন যে, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা চালানো সঠিক ছিল। এই সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। এমনকি ৫৩ শতাংশ ফিলিস্তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরাইলি বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণকে সমর্থন করে।

৭ অক্টোবরের আগে, হামাস একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থানশীল অবস্থায় ছিল না। বিস্তৃতভাবে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা, আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা এই হতাশাজনক অবস্থার কারণ হতে পারে। ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অভিযানের আগে, হামাসের সামনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। ফিলিস্তিনিদের সামনে দলটিকে সমর্থন করার কারণও ছিল কম। ৭ অক্টোবরের পর, হামাসের প্রতি ফিলিস্তিনিদের সমর্থন বিস্ময়করভাবে বেড়েছে, যা ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য মোটেই ইতিবাচক নয়। হ্যাঁ, ইসরাইল গাজায় হাজার হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের যোদ্ধাদের এই ক্ষয়ক্ষতিগুলো ইতোমধ্যেই হামাসের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করেছে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে আরো ভালোভাবে এর প্রতি আকৃষ্ট করছে। নতুন প্রবাহ কার্যকরভাবে আসার আগ পর্যন্ত সব লক্ষণ ইঙ্গিত দেয় যে, হামাসের বর্তমান যোদ্ধারা সম্ভবত যেকোনো ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী গেরিলা যুদ্ধ চালাতে তারা আগের চেয়ে বেশি সক্ষম।

আদর্শগত বার্তার শক্তি
ইসরাইল গাজায় ফিলিস্তিনিদের যে ভয়ঙ্কর শাস্তি নামিয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই অনেক ফিলিস্তিনিকে ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতি আরো বেপরোয়া হওয়ার দিকে চালিত করছে। এই প্রতিক্রিয়ায় কেন লাভবান হচ্ছে হামাস। ইসরাইলিরা গাজার বিশাল অংশকে সমতল করে দিয়েছে এবং অনেক লোককে হত্যা করেছে, যা প্রতিরোধের জন্য একটি অনুকূল ব্যাখ্যা তৈরি করে এবং হামাসকে আরো সমর্থন পেতে সাহায্য করে।

আমেরিকান মনোবিশ্লেষক এডওয়ার্ড বার্নেস উল্লেখ করেন, প্রোপাগান্ডা, ভয় ও ক্ষোভ তৈরি ততটা কাজ করে না যতটা এই আবেগগুলোকে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলোর দিকে পুনঃনির্দেশিত করে ফল লাভ করা যায়। হামাসের প্রচেষ্টা এই কৌশলের একটি প্রধান উদাহরণ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা ও ফিলিস্তিনি জনগণের গ্রহণযোগ্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অনুপস্থিতি ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের দিকে নিয়ে গেছে বৃহত্তর সংখ্যায়।
ইসরাইলি নেতারা ৭ অক্টোবরের আগে যেমন একটি কার্যকর রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অনিচ্ছুক ছিল এখনো তার বিপরীত কিছু দেখা যাচ্ছে না। এতে মনে হতে পারে যুদ্ধ চলতেই থাকবে, আরো বেশি ফিলিস্তিনি মারা যাবে। আর এটি ইসরাইলের অস্তিত্বের প্রতি হুমকিই কেবল বাড়াবে।

গাজায় ইসরাইলের ব্যর্থতার কথা শুধু বাইরের বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমন নয়। একই বক্তব্য আসছে ইসরাইলের ভিতর থেকেও। টাইমস অব ইসরাইলের কলামিস্ট জে ফ্রান্টজম্যানের সুরও অভিন্ন। চ্যানেল ১৩ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইডিএফের প্রধান মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারিও বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে যাচ্ছি এটা বলা মানুষের চোখে বালি ফেলা। আমরা যদি একটি বিকল্প প্রদান না করি, তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সামনে কেবল হামাসই থাকবে।’

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল হারজি হালেভি, গত মাসে অনুরূপ কথাই বলেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা এখন আবার জাবালিয়াতে কাজ করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত হামাস নয় এমন একটি গভর্নিং বডি গড়ে তোলার জন্য ছিটমহলে কোনো কূটনৈতিক প্রক্রিয়া না হচ্ছে, হামাসের অবকাঠামো ভেঙে ফেলার জন্য আমাদের একটার পর একটা জায়গায় বারবার অভিযান চালাতে থাকতে হবে।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ও সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ উভয়েই গাজার জন্য একটি কৌশলের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসরাইলকে সম্ভবত এ মাসের শেষের দিকে রাফাহ যুদ্ধ শেষ করতে হবে। সেখানকার বাস্তবতা কী হবে এই প্রশ্নের একটি কার্যকর উত্তর প্রাসঙ্গিকভাবে সামনে আসবে। যদি আইডিএফ রাফাহ শহর থেকে সরে যায় তাহলে ইসরাইলের হাত থেকে গাজার নেটজারিম ও ফিলাডেলফি এই দু’টি করিডোরের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে।

ইসরাইল দৃশ্যত সেই নীতিগুলো পরিত্যাগ করেছে যেগুলো তার নেতারা যুদ্ধের শুরুতে ‘হামাস হলো আইএসআইএস’ এবং ‘হামাস আর থাকবে না’ যে কথা বলত তা এখন আর সেভাবে বলে না। ইসরাইলের সামনে এখন যুদ্ধ বন্ধ করার কোনো বিকল্প নেই। দেশটি গাজার একটি ফ্রন্টে যুদ্ধ শুরু করেছিল। এখন সেই যুদ্ধ বহু ফ্রন্টে ছড়িয়ে পড়েছে। পশ্চিম তীরে প্রতিরোধ জোরালো হয়ে উঠছে। উত্তর ফ্রন্টে হিজবুল্লাহর সাথে যে কোনো সময় যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুতি নিয়েও ভয় ভর করেছে তেলআবিবের ওপর। হুতি এবং ইরানের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোও তাদের প্রতিরোধ বজায় রেখেছে। এ অবস্থায় ইসরাইলের গাজা যুদ্ধেই ব্যর্থতার আশঙ্কা তৈরি হয়নি সেই সাথে বৃহত্তর যে ইসরাইলের স্বপ্ন বাস্তবায়নে জায়োনিস্টরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল সেটিও পিছলে পড়ে পা ভাঙা অবস্থা তৈরি হয়েছে।

এ কারণেই বলা হচ্ছে গাজা যুদ্ধে হামাসেরই জয় হয়েছে, ইসরাইলের নয়। গাজাকে সমান করার চেষ্টা করেও জয় পাবে না ইহুদি রাষ্ট্রটি; বরং সেটি অষ্টম দশকে এসে চিরাচরিত বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে ইসরাইলকে। এই উপলব্ধি পশ্চিমে যেমন জোরদার হচ্ছে, তেমনি ছড়িয়ে পড়ছে ইসরাইলেও।

[email protected]

 


আরো সংবাদ



premium cement