ব্যাংক খাতে যা হবার তাই হয়েছে
- রিন্টু আনোয়ার
- ১৮ মে ২০২৪, ০৬:০৮
ব্যাংকগুলোতে কী হচ্ছে- এ নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন ঘুরছে গত কয়েক বছর ধরেই। জবাবের বদলে বলা হতো, হওয়ার আর কী বাকি আছে? দুই প্রশ্নেরই জবাব মিলছে এখন। কেবল ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, সাংবাদিক নয়, ব্যাংক বা অর্থনীতি না বোঝা মানুষের কাছেও সব পরিষ্কার। বিভিন্ন ব্যাংক একীভূত করার পর ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের টাকা তুলে নেয়ার হিড়িক ওঠে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পর কানাঘুষা আরো বাড়ে। বলাবলি হতে থাকে, সেখানে কিছু একটা ঘটেছে। কিন্তু সেটি কী? দেশীয় কোনো গণমাধ্যম এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারছিল না। খবর এলো ভারত থেকে। ভারতের ‘নর্থইস্ট নিউজ’ জানায়, ভারতীয় কিছু হ্যাকার বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা নীরবে তদন্ত চালাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করে খবরটি ভুয়া। নিউ ইয়র্ক ফেডের সাথে লেনদেনে নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে বর্তমানে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকে ছুটে যান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সাথে ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি। পিটার হাসের সেখানে ছুটে যাওয়া, গভর্নরের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ইনস অ্যান্ড আউট এখনো রহস্যাবৃত। স্মরণ করতেই হয়, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনা লুকিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রায় ৩৯ দিন ওই ভয়াবহ চুরির ঘটনা লুকিয়ে রেখে সে সময়ের গভর্নর ড. আতিউর রহমান দিল্লি যান একটি সেমিনারে অংশ নিতে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ভয়াবহ খবরটি আসে ফিলিপাইনের একটি গণমাধ্যমে। ওই খবরকেও মিথ্যা ও অসত্য বলে দাবি করার কয়েক দিন পর স্বীকার করা হয়, ঘটনা সত্য।
এবার এমন এক সময়ে নতুন করে রিজার্ভ চুরির খবর এসেছে যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। ডলারের দাম বাড়ানোয় নতুন করে অস্থিরতা তো আছেই। সেই সাথে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে চলছে নগদ অর্থের জন্য হাহাকার।
এমনিতেই ব্যাংক খাতে সমানে অরাজকতা চলছে। তারল্য সঙ্কট, গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে না পারা ঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাচার করা, মূলধন-প্রভিশন ঘাটতিকে অপপ্রচার বলে দাবি করা হচ্ছে। এর বিপরীতে শুভঙ্কর, এস কে সুরসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে গুরুতর পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করা এই সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তির নাম সামনে চলে আসছে। ২০১৬ সালে রিজার্ভ চুরির ঘটনা তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান ওই সময়ে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর পরামর্শে এক মাসের বেশি সময় ধরে গোপন রাখেন বলে প্রচারিত।
আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ভালো পরিমাণ রিজার্ভ থাকা জরুরি। এখন রিজার্ভ যে পর্যায়ে নেমেছে, তা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। ডলারের দামের যে পদ্ধতি চালু হয়েছে, তাকে ক্রলিং পেগ বলা হলেও তা ক্রল (ওঠানামা) করছে না। আর ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে এক ধরনের লুকোচুরি তো আছেই। গ্রাহকরা দিগবেদিক জ্ঞানহারা।
আমানতকারীদের টাকা যেন খোয়া না যায়, তা নিশ্চিতের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকেই চোরের উপদ্রব। উল্লেখ না করলেই নয়, দেশী ব্যাংকগুলোতে এ অরাজকতার সময় বেশ জোসে এগিয়ে যাচ্ছে বিদেশী ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ৯টি বিদেশী ব্যাংক। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসির ব্যবসায় ও কার্যক্রমই বেশি বিস্তৃত। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, যুক্তরাষ্ট্রের সিটিব্যাংক এনএ, দক্ষিণ কোরিয়ার উরি ব্যাংক ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ারও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কার্যক্রম রয়েছে। বিদেশী এ ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রেকর্ড দুই হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে এর আগে কোনো ব্যাংকই এ পরিমাণ নিট মুনাফা করতে পারেনি। ২০২২ সালেও বহুজাতিক ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছিল এক হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছর ব্যাংকটির নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪১ শতাংশ। নিট মুনাফায় ৭০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি পেয়েছে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি)। বহুজাতিক ব্যাংকটি ২০২৩ সালে ৯৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। এর আগের বছর এইচএসবিসির নিট মুনাফা ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদ না হলেও বোধগম্য যে, দেশী ব্যাংকগুলোর ব্যর্থতার কারণেই বিদেশী ব্যাংকের মুনাফা বাড়ছে। বিদেশী ব্যাংকগুলোর আমানত সংগ্রহ ব্যয় সর্বনিম্ন। তাদের হাতে এখন বিনিয়োগযোগ্য পর্যাপ্ত তারল্যও রয়েছে। এ অর্থ সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের মতো নিরাপদ বিনিয়োগ করলেও উচ্চ মুনাফা পাবে। কিন্তু দেশী ব্যাংকগুলোর সে অবস্থা নেই। তারল্য সঙ্কটের কারণে তাদের উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবার সুশাসনের ঘাটতি ও আস্থাহীনতার কারণে প্রথম প্রজন্মের অনেক ব্যাংকের অবস্থাও এখন নাজুক। উচ্চ সুদের প্রস্তাব দিয়েও তারা আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না।
ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংক খাতের কোমর ভেঙে দিয়েছে আরো আগেই। এর পরও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যে খারাপ সরকার তা মানতে নারাজ। অর্থমন্ত্রীর দাবি, উন্নয়নের ধারা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। অর্থনীতির সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী। অনিশ্চয়তা ও হতাশার কিছু নেই।
এক দিকে লাখ লাখ মানুষের দুর্গতি, দারিদ্র্যের তোড়ে যাচ্ছেতাই দশা। আরেক দিকে তাদের উন্নতির তথ্য, মাথাপিছু আয়ের খবর, বিশাল বাজেটের আয়োজন। প্রবাসীদের জান নিয়ে ফেরার বিপরীতে রেমিট্যান্স চুইয়ে পড়ার খবর। বাস্তবটা বড় নিদারুণ। অর্থনীতির সার্বিক শ্লথ গতির প্রভাব পড়ছে সব খাতে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস রফতানি খাতে কেবলই খরার টান। এ ধারার মধ্যে রাজস্ব আয় নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি লাগামহীন। মানুষের সামগ্রিক আয়ও কমছে। গড়ের অঙ্কে তা দেখানো হচ্ছে বেশি করে। জনজীবনের সাথে ব্যয় বাড়ছে সরকারেরও। অর্থবছরের শুরু থেকেই রাজস্ব আয়ে ঘাটতি থেকে গেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কৃচ্ছ্রতা সাধনের আহ্বানের পরও সরকারের ব্যয় মোটেই কমেনি। ফলে সরকারের ঋণ নেয়া বেড়েছে। কিন্তু সরকারের দিক থেকে শোনানো হচ্ছে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আবার মাঝে মধ্যে স্বীকার করলেও দেয়া হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্কটের দোহাই। সেই সাথে মুদ্রামান ধরে রাখা যাচ্ছে না। স্বাধীনতার পর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য মধ্যবর্তী মুদ্রা ছিল ব্রিটিশ পাউন্ড। ১৯৮৩ সালে পাউন্ডের পরিবর্তে মার্কিন ডলারকে বেছে নেয়া হয়। আর ২০০৩ সালের মে মাস থেকে বাংলাদেশী মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার চালু করা হয়।
এ সময় থেকেই চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে ডলার বিক্রি ও তদারকির মাধ্যমে বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কৃত্রিমভাবে ধরে রাখতে চেয়েছে টাকার মান। তাও আর পারা যাচ্ছে না। যা হওয়ার তাই ঘটে চলছে। এর সীমানা আরো কত দূর গড়াবে- এ প্রশ্নের জবাবও নেই কারো কাছে। রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধির তথ্য নেই।
ব্যাংকগুলো এখন কোনো গ্রাহক বা গ্রুপকে মোট মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ আকারে ও বাকি ১০ শতাংশ পরোক্ষ ঋণ হিসেবে যথা- এলসি খোলা, ব্যাংক গ্যারান্টিসহ নানা খাতে দিতে পারে। কিন্তু বর্তমানে অনেক গ্রুপের ঋণ ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। এতে ব্যাংকের ঋণ কোনো একক কোম্পানি বা গ্রুপের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। একই সাথে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি তৈরি করছে।
আমদানিতেও একই অবস্থা। তার ওপর আয় কমের কারণে সরকারের ঋণ প্রবণতা বাড়ছে।
বেসরকারি বিনিয়োগ বহু বছর ধরেই স্থবির। ঋণ আদায়ও কমছে। এভাবে প্রায় প্রতিটি খাতেই খাপছাড়া-সাংঘর্ষিক ক্রিয়াকর্ম। পারিপার্শ্বিক এই আজাব ও আজব অবস্থার মধ্যে চলছে বাজেট ঘোষণার প্রস্তুতি। মূলত কেবল ব্যাংক নয়, গোটা অর্থনীতিতেই আজ লুটপাটের খেলা চলছে। ক্ষমতার সবশেষ মেয়াদে লুটেপুটে খাওয়ার ভূমিকায় নেমেছে একটি চক্র। ক্ষমতাসীন ঘরানার এই চক্রকে নিয়ে অনেকটা আনডান অবস্থায় সরকার। একের পর এক হুঁশিয়ারি, ধরপাকড়সহ কিছু অ্যাকশনেও দমছে না এরা। পরিস্থিতির অনিবার্যতায় ক্ষমতার অপব্যবহারে বিশাল অর্থবিত্ত গড়াদের একটি গোপন তালিকার কথাও একবার শোনা গিয়েছিল। এই টাকা উদ্ধার করে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল বা বিশেষ কোনো ট্রাস্ট গঠন করে গচ্ছিত করার চিন্তাভাবনা করা হয়। সেই আলোকে একটি সাঁড়াশি অ্যাকশনের ছকও করা হয়। পরিকল্পনা নেয়া হয় একদম ঝটিকা বা কম সময়ে অ্যাকশনটি শেষ করার। কিন্তু অনিবার্য বাস্তবতায় সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে।
ফলে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে পরিকল্পিতভাবে লুটপাট চলছে। অর্থনীতিবিদের মতে, এটি কারো একার গাফিলতি বা না বোঝার কারণে হচ্ছে, তেমন নয়। রাজনৈতিক নেতা, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী- সবার যোগসাজশে লুটপাট হচ্ছে। এসব যোগসাজশের সাথে দেশের উন্নয়ন ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। সরকারি ব্যাংকের টাকা মেরে আজ বেসরকারি ব্যাংকের মালিক হয়েছেন অনেকেই।
গত ২০ বছরে যেসব নতুন ব্যাংক দেয়া হয়েছে, তার বিপক্ষে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, আইএমএফ ও অর্থনীতিবিদরা। তার পরও এসব ব্যাংক কেন দেয়া হলো তার উত্তর অজানা!
এ দেশে এখন কালো টাকা যাদের আছে তাদের কর কম দিতে হয়। আবার খেলাপিদেরও সুদহার কম। সরকার ঋণখোলাপিদের শাস্তি না দিয়ে সুবিধা দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে। এর ফলে খেলাপি ঋণ না কমে বরং বাড়ছে।
নিয়মবহির্ভূতভাবে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল না করলে খেলাপি ঋণ দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়াত। পাশাপাশি জবাবদিহিতা না থাকায় ব্যাংক ও আর্থিক খাতে পরিকল্পিতভাবে লুটপাট চলছে। কারো একার দুর্বলতায় ব্যাংক খাতে খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা নয়। পাকিস্তানের ২২ পরিবার দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করত। আর এখন তার চেয়ে কমসংখ্যক পরিবারের হাতে বেশি সম্পদ চলে গেছে।
এখানকার অর্থনীতির মূল সমস্যা রাজনৈতিক। বর্তমান সরকার ধনীদের সরকারে পরিণত হয়েছে। ফলে সরকার হয়েছে খেলাপিবান্ধব। যে কারণে ঋণখেলাপিদেরই নানা সুবিধা দেয়া হয়। গরিবরা তো ঋণই পায় না, সুতরাং খেলাপিও হয় না। তাই সুবিধা পাচ্ছে লুটেরা, ধনী, ব্যাংক ডাকাত ও ঋণখেলাপিরা।
সার্বিকভাবে বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাত অত্যন্ত নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে অর্থনৈতিক মন্দার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা