তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি আসন্ন
- ড. এ কে এম মাকসুদুল হক
- ০৪ মে ২০২৪, ০৮:২৬
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের ফিলিস্তিনি নিধন অভিযানের যে কথিত যুদ্ধ চলছে তা এখন নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত করে এই চলমান সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। গাজায় ইসরাইলের একতরফা ধ্বংসযজ্ঞের এই পর্যায়ে এখন ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে রূপ নিতে যাচ্ছে। অনেকভাবে এই যুদ্ধ পৃথিবীকে প্রভাবিত করতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য দ্বিতীয় আরব বসন্ত থেকে শুরু করে তৃতীয় বিশ^যুদ্ধ পর্যন্ত যে কোনো দিকেই মোড় নিতে পারে এই ঘটনাপ্রবাহ। তবে এর গতিবিধি নির্ভর করবে খেলোয়াড়ের পিছনের খেলোয়াড় আমেরিকার অভ্যন্তরীণ এবং ভূরাজনৈতিক স্বার্থের ওপর।
সমস্যার গোড়ার কথা : মূলত মধ্যপ্রাচ্যের এই সঙ্ঘাতের জন্মদাতা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তত্ত্বাবধানে ১৯৪৮ সালে অবৈধ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের গঠন। পরবর্তীতে তিন তিনটি পূর্ণমাত্রার আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইলকে মার্কিনিরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে টিকিয়ে রেখেছে। আর ইসরাইল আমেরিকা নামক বড় ত্রাণকর্তা সাথে পেয়ে গত সাত দশক যাবৎ ফিলিস্তিনিদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতিস্থাপন করতে থাকে। আর ফিলিস্তিনি শিশুদের ইট-পাথর নিক্ষেপের জবাবে নির্বিচারে পশ্চিমতীর ও গাজায় বিমান হামলা করে হাজার হাজার নারী-শিশুকে হত্যা করে চলছে। এমনকি ফিলিস্তিনিদের প্রাণের স্পন্দন ‘মসজিদে আকসা’কে বারবার অপবিত্র করেছে। অন্যদিকে আমেরিকা ইসরাইলের এই সন্ত্রাসী হামলাগুলোকে ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার বলে জায়েজ করে দিচ্ছে। এভাবে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান দেয়ালের কিনারে চলে গেলে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার প্রতীক ‘হামাস’ ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের ১২ শ’ জনের মতো সামরিক বেসামরিক মানুষকে হত্যা এবং হাজারখানেক মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে ফেরে। প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলি সশস্ত্রবাহিনী ফিলিস্তিনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে গাজা, পশ্চিমতীর এবং রাফা এলাকায় আকাশ ও স্থলপথে নির্বিচারে গত ছয় মাস যাবৎ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ সমর্থন ও সামরিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ফলে গত ছয় মাসের ফিলিস্তিনি নিধনযজ্ঞে প্রায় ৪০ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয় যেখানে ১৩ হাজার শিশু এবং ১২ হাজার নারী রয়েছে। গাজার স্কুল, কলেজ হাসপাতালসহ বেশির ভাগ অঞ্চল ধুলায় পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে ইসরাইল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলা চালিয়ে ইরানের দু’জন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাসহ সাতজনকে হত্যা করে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ছায়াযুদ্ধ দ্রুতই ইরান-ইসরাইল সর্বাত্মক যুদ্ধের রূপ নেয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইসরাইল কেন ইরানের দূতাবাসে হামলা করল : বিশ্লেষকরা নানান ধরনের ব্যাখ্যা ও যৌক্তিকতা তুলে ধরছেন ইসরাইলের উসকানির কারণ হিসেবে। প্রথমত ফিলিস্তিনি গণহত্যার কারণে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘরে বাইরে সর্বত্র ভয়ানক অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছেন। তার ক্ষমতার ভঙ্গুর পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যই মূলত তিনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে গাজা ও রাফায় ছয় মাস যাবৎ আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে নিহতের প্রায় ৯৫ শতাংশই বেসামরিক পুরুষ, নারী, শিশু, বৃদ্ধ হওয়ায় গোটা বিশ^জনমত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় তিনি তার অভ্যন্তরীণ ক্যারিয়ার রক্ষা এবং বিশে^র নজর থেকে গাজা পরিস্থিতি আড়াল করার উদ্দেশ্যে ইরানকে যুদ্ধে টেনে আনতে চাইলেন। দ্বিতীয়ত নেতানিয়াহু একই সাথে ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া এবং ইরানি ফ্রন্টে যুদ্ধ চালানোর সামর্থ্য জানাতে চেয়েছেন ইরানকে। তা ছাড়া হিজবুল্লাহ, হুতি, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সবাই ইসরাইলকে ঘিরে ইরানের পক্ষে প্রক্সিযুদ্ধ চালাচ্ছে। ইরানের ‘আল কুদস’ বাহিনী এই প্রক্সিযুদ্ধটিকে সমন্বয় করে চলছে। ফলে ‘কুদস’ বাহিনী প্রধানকে দূতাবাসে হামলার মাধ্যমে হত্যা করে নেতানিয়াহু নিজ দেশে হিরো হতে চেয়েছিলেন এবং ইরানকে সতর্কবার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ইরানের প্রতিক্রিয়া বা সামর্থ্য যাচাই করাও একটি উদ্দেশ্য ছিল বলে অনেকে মনে করেন। এমনও হতে পারে মার্কিনিরাও ইরানের সামর্থ্যরে ব্যাপারে তাদের ডাটা বা তথ্য হালনাগাদ করার প্রয়াস পেয়েছে ইরানের পাল্টা হামলার মাধ্যমে। আর ইরানের প্রক্সি বাহিনীগুলোর বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কাজেই ‘কুদস’ ফোর্স কমান্ডাররা সাধারণত মার্কিনিদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকে। একই সাথে ইসরাইলে প্রতিরক্ষা ছাদ তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক কৌশলের কার্যকারিতা পরীক্ষা করাও ইসরাইলের সিরিয়াস্থ ইরানি দূতাবাসে হামলার আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল।
ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা : আন্তর্জাতিক আইনে যেকোনো দেশের দূতাবাসে হামলা ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলার শামিল। ফলে এই হামলা ইরানের সম্মান ও গৌরবে আঘাত করে। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কমান্ডারকে ড্রোন হামলা করে হত্যা করেছিল ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরে। সেই হামলায় ইরান ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটাতে আমেরিকা ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেনি। ফলে ইসরাইলের এই হামলা কোনোভাবেই হজম করা সম্ভব ছিল না। তা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শক্তিমত্তার গৌরবে আঘাত, অঞ্চলজুড়ে ইরানের প্রক্সি বাহিনী হিজবুল্লাহ, হুতি, সিরিয়ার আসাদের সরকারি বাহিনী ইত্যাদি গোষ্ঠীগুলোর মনোবল চাঙ্গা রাখা এবং পাল্টা আঘাত না করলে ইসরাইলের পুনঃআক্রমণের সম্ভাবনা ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে ইরান পাল্টা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তাদের এই প্রতিশোধমূলক আক্রমণ ছিল অত্যন্ত সতর্কতাসুলভ হিসাবসম্মত। তারা হুট করে পাল্টা আক্রমণ না করে বিশ্ব শক্তিগুলোর মনোভাব পর্যবেক্ষণ করে। ‘সাপ মারবে তবে লাঠি ভাঙবে না’ নীতি ইরান অনুসরণ করে। ইসরাইলকে তারা যথেষ্ট সময় দেয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য যেন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়। এমনকি হামলার দিন-ক্ষণের বিষয়টিও তারা প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। হামলার জন্য তারা ইসরাইলের একটি গোয়েন্দা স্থাপনাকে টার্গেট হিসেবে বেছে নেয় যেন লোকক্ষয় কম হয় কিন্তু ইসরাইলের গোয়েন্দা সামর্থ্য খর্ব করা যায়। তবে গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ইরান নিজ ভূমি ব্যবহার করে ইসরাইলে সাহসী হামলা চালিয়েছে। এতে ইরান মনে করে তাদের জাতীয় কৌশল পুরোপুরি সফল হয়েছে। ইসরাইল এই আক্রমণ আশঙ্কায় সত্যিকারার্থেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল। আর বিনা উসকানিতে ইরানি দূতাবাসে ইসরাইলের হামলাতে নীরব থাকলেও পশ্চিমা বিশ্ব ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা মানবাধিকারের পূজারি বলে নিজেদের প্রমাণ করতে চাইলেও ফিলিস্তিন ইস্যুতে তারা পুরোপুরি বর্ণবাদী আচরণ করছে।
ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণ : ইরানের প্রতিশোধমূলক আক্রমণ ইসরাইলের একা প্রতিহত করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। দি নিউ ইয়র্ক টাইমসের বর্ণনা মতে, ইরান যে এত শক্তি প্রয়োগ করবে সেটা ইসরাইল আন্দাজ করতে পারেনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বেশ কিছু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় যোগ দিয়েছিল। এই আক্রমণ ইসরাইলের অহমিকায় চপেটাঘাত করে। তারা ইরানে পাল্টা আক্রমণের জন্য লম্ফঝম্ফ শুরু করে। কিন্তু মার্কিনিরা আবেগতাড়িত না হয়ে বরং বাস্তবতা অনুধাবন করে যে, ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলবে। এতে ইসরাইল অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়তে পারে। তখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়ে থাকতে পারবে না। আর যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধে জড়ানো বাইডেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্ব নিঃশেষ করে দিতে পারে। কাজেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র বাহ্যিকভাবে ইসরাইলকে পাল্টা হামলার জন্য নিরুৎসাহিত করলেও গোপনে ইরানের সাথেও সমন্বয় করে যেন ইসরাইলকে মুখ রক্ষার সুযোগ দেয়া হয়। ফলে ইসরাইলের হামলার ধার একেবারে কমিয়ে দেয়া হয় এবং ইরানকে সেই হামলা প্রতিহত করার সুযোগও করে দেয়া হয়। ইরান তার সমরাস্ত্র সমৃদ্ধ সামরিক শহর ইস্ফাহানের আকাশে কয়েকটি ড্রোন ধ্বংস করে এবং প্রচার করে যে, এগুলো অনুপ্রবেশকারীদের ড্রোন হামলার চেষ্টা ছিল। অপরদিকে ইসরাইল ড্রোন হামলার পক্ষ-বিপক্ষ কোনো দিকেই অবস্থান নিতে অস্বীকার করে। কাজেই ধারণা করা হচ্ছে মার্কিনি মধ্যস্থতায় আপাতত ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ স্তিমিত হলো।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূমিকা : মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সহযোগিতা করেছে। সৌদি আরব ইরানের আক্রমণের তথ্য সরবরাহ করেছে ইসরাইলকে। জর্দান সরাসরি ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষায় অংশ নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের আকাশসীমা ইরানের জন্য বন্ধ করে রেখেছিল। মিসর নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে। ভূরাজনীতি, আধিপত্য ইত্যাদি যেকোনো কারণেই হোক ইসরাইল ইস্যুতে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর ইরানবিরোধী এবং সরাসরি ইসরাইলকে সহযোগিতার যে ঐক্য প্রদর্শিত হয়েছে তা বিস্ময়কর না হলেও গভীর বেদনার!
ফলআউট বা প্রভাব : বিশ্লেষকদের মতে, চলমান এই উত্তেজনার সংক্ষিপ্ত বা সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। মূলত বিশে্বর সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে এই উত্তেজনার গতিবিধি কী হবে! যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনপ্রক্রিয়াটিই নির্ধারিত করতে পারে এই সঙ্ঘাতের গতি। এই মুহূর্তে মার্কিনিরা মধ্যপ্রাচ্যে বড় কোনো সঙ্ঘাত দেখতে চাচ্ছে না। বড় যুদ্ধ বাধলে তাদের জড়িত হতেই হবে যেটা বাইডেনের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। এমনিতেই তার মুসলিম জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায়। তদুপরি মার্কিন ইহুদিদের একটি বড় অংশ যুদ্ধবিরোধী। এদিকে ইসরাইলের গাজা গণহত্যার বিরুদ্ধে ধীরে হলেও জেগে উঠছে পশ্চিমা বিশ্ব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ চল্লিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
তা ছাড়া ফ্রান্স, কানাডা এবং সুইডেনেও ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ইসরাইলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রবিক্রির ব্যবসায় করা হয়ে গেছে এবং ইসরাইলকে সরাসরি সমর্থন করে মার্কিন ইহুদি সম্প্রদায়ের অধিকাংশের কাছে প্রিয় হয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কাজেই এ মুহূর্তে মনে হচ্ছে তার বড় যুদ্ধ কাম্য নয়। তা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো বড় যুদ্ধ ইউক্রেনে রাশিয়ার জয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে যা হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিশাল পরাজয়। তবে আপাতত বড় যুদ্ধ না বাধলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন দেশ দুটির মধ্যে সীমিত আকারের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলমান থাকতে পারে। সেই সাথে ইরানের প্রক্সি বাহিনীগুলো তাদের আক্রমণের প্রবলতা বাড়াতে পারে ইসরাইলকে আরো ব্যতিব্যস্ত করে রাখার জন্য।
কিন্তু অনেকে মনে করেন, নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার টিকিয়ে রাখার জন্য ইরানে বড় ধরনের আক্রমণ করে বসতে পারে। সেই ক্ষেত্রে প্রশ্ন দাঁড়াবে ইরান কি বসে থাকবে? আর ইরান তার শক্তিমত্তা নিয়ে নামলে ইসরাইলের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়তে পারে যা যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে ডেকে আনবে। এই বড় যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে রাশিয়া সুযোগ নেবে। চীনও মার্কিনিদের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে আটকে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে যতটা সম্ভব দুর্বল করার চেষ্টা করবে। অন্যদিকে ইসরাইলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র দাঁড়ালে ইরানও চেষ্টা করবে চীন ও রাশিয়ার সরাসরি সহযোগিতা পেতে। অতিসম্প্রতি ইরান-রাশিয়া নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ফলে এ ধরনের পরিস্থিতি কি আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বারুদে আগুন দেবে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আরো সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে তার আগেই বিশ্বসমাজের উচিত ইসরাইল নামক সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটিকে থামানো এবং গাজায় তাদের যুদ্ধাপরাধের জন্য বিচারের সম্মুখীন করা। তবে পশ্চিমা বর্ণবাদী সরকারগুলোর কাছে এসব আশা করা বোকামি। কাজেই মুসলমানদের এগিয়ে আসতে হবে। ইসরাইলকে আক্রমণের জন্য নয় বরং আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করার জন্য। শিয়া-সুন্নি মতানৈক্য ভুলে এক মুসলিম উম্মাহর পতাকাতলে আসতে হবে। নইলে শতধাবিভক্ত মুসলিমরা সারা বিশ্বে মার খেতেই থাকবে।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: [email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা