২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পেলে সবসময় রাজাই থাকবেন

পেলে সবসময় রাজাই থাকবেন - ছবি : সংগৃহীত

ফুটবল বিশ্বের সবচে জনপ্রিয় খেলা। এত মাতামাতি আর কোনো খেলা নিয়ে হয় না। মাত্র ক’দিন আগে কাতার বিশ্বকাপ শেষ হলো। এর আনন্দের রেশ এখনো রয়ে গেছে। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ শুধু আর্জেন্টিনাতেই নয়, বাংলাদেশও ছিল মাতোয়ারা। ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা কতটা তার উদাহরণ হচ্ছে, ঢাকার উপকণ্ঠ ধামরাইয়ে আর্জেন্টিনা ও মেসির সমর্থকরা ৩৬ ডেকচি বিরানি দিয়ে জয় উৎসব পালন করেছে।

ফুটবল নিয়ে এই যে উন্মাদনা সেটি এমনি এমনি হয়নি। এক সময় ফুটবল নিছক একটা খেলাই ছিল। কিন্তু একে অসাধারণ করেছেন পেলে। তার পায়ের জাদুকরী ছোঁয়ায় বদলে যায় ফুটবল। এই ফুটবল কিংবদন্তি পেলের কারণেই ব্রাজিল আজ বিখ্যাত। ব্রাজিলে তিনি ‘কালো মানিক’ হিসেবে খ্যাত।

ফুটবলের রাজা পেলে আর নেই। মর্ত্যলোক থেকে তিনি বিদায় নিয়েছেন। বিদায়ী বছরের ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই ফুটবল কিংবদন্তি। তার মৃত্যুতে ফুটবল দুনিয়া শোকাভিভ‚ত। ফুটবলারই শুধু নয়, সাধারণ মানুষ এবং সর্বপর্যায়ের তারকারাও শোক পালন করছেন পেলের জন্য।

পেলে সমাহিত হবেন জন্মস্থান সাও পাওলোয়। তার শেষ ইচ্ছা ছিল তাকে যেন প্রিয় ক্লাব সান্তোসের প্রাঙ্গণে ঘরের স্টেডিয়ামে নেয়া হয়। তার সেই ইচ্ছাটাই পূরণ করছে ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ। আলবার্ট হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ সোমবার ও মঙ্গলবার সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয় সান্তোসের ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে। এই স্টেডিয়ামেই গোলের পর গোল করেছেন পেলে। এরপর শবযাত্রা করে পেলে সমাহিত হচ্ছেন ১৪ তলাবিশিষ্ট মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকাতে।

পেলে সর্বকালের সেরা ফুটবলার। এ নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। ম্যারাডোনাও বলে গেছেন ফুটবলে পেলেই সর্বকালের সেরা। সাও পাওলোর এক দারিদ্র্যপীড়িত বস্তিতে তার জন্ম। একটি ফুটবল কেনার সামর্থ্যও ছিল না। সেখানকার রাস্তায় মোজা মুড়িয়ে বল বানিয়ে কিংবা জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলতেন তিনি। কিন্তু ১৫ বছর বয়সে এই কিশোরই সান্তোসের মূল দলে গোলের পর গোল করেছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ব্রাজিলের জাতীয় দলে স্থান করে নিয়েছেন। আর ১৭ বছর বয়সে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে চার ম্যাচে ৬ গোল করে ব্রাজিলকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ। তিনিই বিশ্বকাপজয়ী সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়।

ব্রাজিলের কোচ সালাদানাকে এক ক্রীড়ালেখক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ব্রাজিলের সেরা গোলকিপার কে? সালাদানা বলেছিলেন, ‘পেলে’। ক্রীড়া লেখকের আবার প্রশ্ন, সেরা রাইটব্যাক কে? এবারো উত্তর ‘পেলে’। মোটামুটি দলের অর্ধেক পজিশনে পেলের নাম বলার পর সালাদানা খানিক হেসে বলে ফেলেন, ‘পেলে যেকেনো পজিশনেই বিশ্বের সেরা ফুটবলার।’ এখন পর্যন্ত তিনবার বিশ্বকাপজয়ী একমাত্র ফুটবলার পেলে। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে সান্তোস জানিয়েছে ১০ নম্বর জার্সি তারা পেলের নামে রেখে দেয়ার চিন্তা করছেন। এটা পেলের জার্সি হিসেবেই সংরক্ষিত থাকবে। যদিও ব্রাজিলের সাদা পেলে হিসেবে পরিচিত ফুটবলার জিকোর মতে এটা করা ঠিক হবে না। কারণ যেসব খেলোয়াড় ১০ নম্বর জার্সি গায়ে জড়িয়ে খেলবেন, তারা সবাই পেলে হতে চাইবেন। এটাও তো তার প্রতি সম্মান। কী সিদ্ধান্ত নেয় সান্তোস ক্লাব এটাই এখন দেখার বিষয়।

শৈশব-কৈশোরে ফুটবল খেলেছি। ফুটবলের প্রতি রয়েছে বাড়তি টান। দৈনিক বাংলায় সাংবাদিকতার চাকরিতে আমার অভিষেক হয় খেলার রিপোর্ট বিশেষ করে ফুটবলের রিপোর্ট দিয়ে। সেই সুবাদে ক্রীড়া সাংবাদিকতার পথিকৃৎ প্রখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ভাইয়ের সাথে পরিচয়। কাজ শেষে তার ডেস্কে আড্ডা দিয়েছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। খেলার বিভিন্ন বিষয় জেনেছি। সেখানেই পেলে সম্পর্কে আমার যত জানা। কামরুজ্জামান ভাই পেলের ভক্ত ছিলেন। তেমনি প্রখ্যাত ক্রীড়া ভাষ্যকার তওফিক আজিজ খানও ছিলেন পেলের ভক্ত। তারা পেলে সম্পর্কে মজার মজার ঘটনা ও গল্প বলতেন। তেমনি বলতেন পেলের সাথে যারা খেলেছেন, বিখ্যাত ফুটবলার গ্যারিঞ্চা, স্টেফানো, ক্রুইফ, বেকেনবাওয়ার প্লাতিনিদের কথা। তাদের কাছেই জেনেছি পেলে কেমন করে পেলে হলেন। পেলের মা এখন হাসপাতালে শয্যাশায়ী। পেলের মৃত্যুর খবর এখনো তাকে জানানো হয়নি। পেলের নাম মা দিয়েছিলেন ‘ডিকো’। এই নামেই পরিবার এবং প্রতিবেশীরা ডাকতেন তাকে। পেলে নামটা এসেছে স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ভাস্কো দা-গামার গোলরক্ষক ‘বিলে’ ছিলেন পেলের প্রিয় খেলোয়াড়। কিন্তু মুখের জড়তার কারণে ‘বিলেকে’ ‘পেলে’ বলতেন। বন্ধুরা এ থেকেই তাকে ‘পেলে’ ডাকতে শুরু করেন। সেই থেকে তিনি পেলে। সেই পেলেই বিশ্বে গড়েছেন ফুটবলের অসাধারণ সব কীর্তি। অশ্রুজলে আজ বিশ্ব তাকে জানাচ্ছে শেষ বিদায়। বিদায় ফুটবলের রাজা পেলে।

রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের ১৯ বছর বয়সী কিলিয়ান এমবাপ্পে পেলের অনেক রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন। পেলে তাকে আরো উৎসাহিত করতে আদর করে টুইট করেন ‘কিলিয়ান যদি এভাবে আমার একের পর এক রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলতে শুরু করে তাহলে আমাকে হয়তো আবার বুটজোরার ধুলো মুছে নামতে হবে।’ এমবাপ্পে পেলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিরতি টুইট করেন, ‘রাজা সব সময় রাজাই থাকবেন।’ খুব সত্য কথা। ফুটবলে পেলে সব সময় রাজাই থাকবেন। ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর পেলে বলেছিলেন, ‘স্বর্গে আমরা একসাথে ফুটবল খেলবো।’ সেই সুদূরে ম্যারাডোনার কাছেই চলে গেলেন পেলে।

বিশ্ব ফুটবলের অহঙ্কার
ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের সাথে যে ব্রাজিলীয় খেলোয়াড়ের পক্ষে ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার’ হওয়ার গৌরব জোটে তার নাম পেলে। টিমের সবচেয়ে কম বয়সী ও সবচেয়ে আন্ডার রেটের খেলোয়াড় পেলের ভাগ্যে তখন এ সম্মান ছিল অভাবনীয় ও অপ্রত্যাশিত। চিতা বাঘের মতো তেজোদীপ্ত শরীরের অধিকারী পেলের আসল নামÑ এডসন অ্যারান্টেস ডো নাসিমান্টো। সেবার বিশ্বকাপে প্রথম দু’ম্যাচে বসে থাকার পর সতীর্থ মাজালোর স্থানে খেলতে নেমে পেলে সে সময়ে বিশ্বকাপের সবচেয়ে কম বয়সী গোলদাতা ও হ্যাটট্রিক অর্জনকারী খেলোয়াড় ছাড়াও ফাইনালে দলের ৫-২ গোলে জয়লাভ করেন। ফাইনালে তার দু’টি গোল পেলেকে এই অভাবিত সম্মানের অধিকারী করে। স্বাগতিক সুইডেনের বিরুদ্ধে তার দু’টি গোলের প্রথমটি অনিন্দ্য সুন্দর ও শিল্পের ছাপ থাকায় তা ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড মিলারকে মোহাবিষ্ট ও চমৎকৃত করে। তার রিপোর্টেই পেলেকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসাবে অভিহিত করা হয় যা পরে সারা বিশ্ব মেনে নিতে দ্বিধা করেনি। পেলে মোট চারটি বিশ্বকাপ খেলে তিনটিতে জয়ী হয়ে জুলে রিমে বিশ্বকাপ নিজেদের করে নেন।

আসলে প্রতি চার বছর অন্তর বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট জয় তাদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ। ১৯৫০ সালে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল পাগল দেশ ব্রাজিল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে। তাদের ছন্দ ও আনন্দময় খেলা ব্রাজিলের ফাইনাল জয় আনুষ্ঠানিক হিসাবে মনে করা হয়। অথচ নিজ মাঠ (মারকানা স্টেডিয়াম) ও নিজ দেশের রেকর্ড সমর্থকদের সামনে ১৯৫০ সালে প্রতিবেশী উরুগুয়ের কাছে ফাইনালের ০-১ গোলের অপ্রত্যাশিত ও নাটকীয় হার ব্রাজিলকে শোকসাগরে ডুবিয়ে দেয়। নিজের দেশ ও দর্শককের সামনে তারা যা পারেনি, ভিনদেশ সুইডেনের মাটিতে স্বাগতিক দেশকে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করে ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয় ছিল অনেক আশার প্রতিফলনও বটে।

গ্যারিঞ্চা, ভিডি, ভাভা, পেলে ও জাগালো-ব্রাজিলের এই পাঁচ ফরোয়ার্ডের মধ্যে পেলে সবচেয়ে কম বয়সীই শুধু নয়, কম খ্যাত হয়ে হঠাৎ করে বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের পাওয়া সম্মান তাকে এমনভাবে প্রদীপ্ত করে তোলে, ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনীয় ডিয়েগো ম্যারাডোনার আবির্ভাবের সময় পর্যন্ত তা অক্ষুণœ থাকে। ফরোয়ার্ডে লেফট-ইনের খেলোয়াড় পেলের অসামান্য প্রতিভা ও সামর্থ্যরে ছাপ দেখা গিয়েছিল ’৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে। সতীর্থ নিলটন স্যান্টোসের কাছ থেকে পাওয়া বল প্রতিপক্ষ পার্লিংয়ের মাথার ওপর দিয়ে লব করে তা মাটিতে পড়ার আগেই দুরন্ত ভলিতে দর্শনীয় গোল পেলেকে হঠাৎ করেই এক ‘ফুটবল জাদুকরে’ পরিণত করে।

১৯৫৮-র পর চিলিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ব্রাজিলের টানা বিশ্বকাপ জয়েও পেলের সৌকর্যময় নৈপুণ্য ও গোল করার সাবলীলতা দীপ্যমান হয়ে ওঠে- যদিও ইনজুরির জন্য ফাইনাল সবশেষ দু’টি ম্যাচে তিনি ছিলেন অনুপস্থিত।

১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ব্রাজিল দল তেমন শক্তিশালী না থাকায় পেলে বা ব্রাজিল কারো ঔজ্জ্বল্য তেমন প্রতিভাত হয়নি। মেক্সিকোয় ১৯৭০ সালে ব্রাজিল তাদের বিশ্বকাপের সেরা দল পাঠিয়ে যে ফুটবল পরাক্রম দেখায় তা শুধু ঐতিহাসিকই নয়, নৈপুণ্যের ঝলকে ভুবন মোহিনীও বটে। ইউরোপের শ্রেষ্ঠ টিম ইতালিকে ফাইনালে ৪-১ গোলে হারিয়ে যে সৌকর্যের ছাপ ফেলে তাতে সাম্বা নাচিয়ে ব্রাজিলীয় দলের শ্রেষ্ঠত্ব সম্বন্ধে কারো দ্বিমত থাকে না। ফুটবলের দেশ ব্রাজিল ও তার খেলোয়াড় পেলেকে ফুটবলের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞাপন হিসেবে মেনে নিতে কেউ কসুর করেনি।

তার সুদীর্ঘ ও বর্ণিল খেলোয়াড়ি জীবনে কত অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা জিতেছেন- যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের ‘গোল্ডেন বল-১৯৭০’, ওয়ার্ল্ড সকারে বিংশ শতকের সেরা খেলোয়াড়-১৯৯৯ ও তার মনোনীত সর্বকালের সেরা একাদশের খেলোয়াড় সম্মাননা। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড়ের সিলভার বল-১৯৫৮। বিংশ শতাব্দীর সেরা দল-১৯৯৮। বিশ্ব খেলাধুলার সবচেয়ে বড় পুরস্কার-লরীয়াস ক্রীড়া পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা-২০০০। ফিফার শতাব্দী সেরা ফুটবলার (ম্যারাডোনার সাথে যুগ্মভাবে)-২০০০ সালে।

ফিফা অর্ডার অফ মেরিট ১৯৮৪। বিবিসির বর্ষসেরা ক্রীড়া ব্যক্তির আজীবন সম্মাননা-২০০৫। সাথে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (১৯৯৯), রয়টার্স (১৯৯৯), ইউনিসেফ (১৯৯৯) ও লেইকুইপের শতাব্দী সেরা (১৯৮১) পুরস্কার। ব্রাজিলের হয়ে চারটি (১৯৫৮-৭০) বিশ্বকাপে খেলে তিনটিতে (৫৮,৬২,৭০) শিরোপা জয় ছাড়াও আরো বহু কাপ ট্রফি বা সম্মাননা লাভ করেন।

স্যান্টোস ক্লাব তার সময়েই বিশ্বসেরা ফুটবল ক্লাবের গৌরব পাওয়ায় স্যান্টোস ও পেলের নাম সমার্থক হয়ে গেছে। স্যান্টোসের হয়ে পেলে কোপা লিবার টোডেরেস কাপ দু’বার (১৯৬২-৬৩) দু’বার ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ (১৯৬২-৬৩), একবার ব্রাজিলীয় সুপার কাপ (১৯৬৮), ছয়বার ব্রাজিলীয় লিগ (১৯৬১-৬৫ ও ১৯৬৮), ১০ বার ক্যাম্পেওনাতো পলিস্টা ১৯৫৮, ১৯৬০-৬৫, ১৯৬৭-৬৯ ও ১৯৬৩) জয় করেন। পেলের আরো দু’টি ঘটনা ফুটবল ইতিহাসের স্মরণীয় মাইলফলক হিসাবে গণ্য হয়ে আছে। তার হাজার গোলের তালিকায় পৌঁছানো এক অসাধারণ কীর্তি। ফুটবলের ইতিহাসে হাজার গোলের তালিকায় পৌঁছানো তিনি ছিলেন দ্বিতীয় ফুটবলার। ব্রাজিলের জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৯২টি ম্যাচে ৭৭টি গোল করেছেন। অফিসিয়াল ও নন অফিসিয়াল মিলে ১৩৬৩টি ম্যাচ খেলে ১২৮১টি গোল করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ফুটবল খেলাকে আমেরিকায় জনপ্রিয় করার জন্য আমেরিকান ফুটবল লিগে তার অংশগ্রহণ। ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে বিশ্বখ্যাত ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে যুক্তরাষ্ট্র হারালেও সেখানে খেলা হিসাবে ফুটবল কখনো জনপ্রিয়তা পায়নি। পেলে তার খেলোয়াড়ি জীবন শেষে যুক্তরাষ্ট্রে এ খেলাকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক কসমোস টিম পেলেকে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে সেখানকার লিগে খেলায়।

পেলেকে দেখার জন্য দর্শকের ভিড় হলেও যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল খেলা জনপ্রিয় করার আশা তেমন পূরণ হয়নি। পেলের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রে আনন্দদায়ক হয়েছিল তার অপার নৈপুণ্য ও অভিজ্ঞতার জন্য। ১৯৭৪ সালে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল থেকে বিদায় নেয়ার পর তিন বছর অবসর ভেঙে নিউ ইয়র্ক কসমসের হয়ে খেলার সময় তার নৈপুণ্যের দীপ্তি তেমন না কমায় পেলের এ ফুটবল সফর বেশ সফলই হয়। পরে জাতিসঙ্ঘের দূত হিসেবে তার সম্মান পেলের নাম আরো দীপ্তিময় করে তোলে।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব
abdal62@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement