১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডার্টি বোম ও শীত-অস্ত্র

ইউক্রেন যুদ্ধ - ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধে ডার্টি বোম পলিটিক্স ও চলমান শীতকে মস্কোর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার নিয়ে পুরো ইউরোপ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। ডার্টি বোম কী এবং শীতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে কী পরিবেশের সৃষ্টি হলো তা নিয়েই আজকের আলোচনা।

মস্কো দাবি করেছে, ইউক্রেন রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ডার্টি বোম বা নোঙরা বোমা তৈরি করছে। অনেকের কাছে ডার্টি বোম বিষয়টি নতুন। বিশ্ব জানতে চায় ডার্টি বোমা কী এবং এটি কিভাবে বানানো বা ব্যবহার করা যায়। মৌলিকভাবে, ডার্টি বোম একটি প্রচলিত বোমা যা তেজস্ক্রিয়তা, অর্গানিক ও কেমিক্যাল পদার্থের বিষাক্ত সংমিশ্রণ, যার বিস্ফোরণ সহজে ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু মানুষকে নিঃশেষ করে। বোমায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করে এক ধরনের রেডিওলজিক্যাল বিচ্ছুরণ ঘটানো হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ‘ডার্টি বোম’কে খারাপ কূটনীতি ও রাজনৈতিক ধান্ধার সাথেও তুলনা করেছেন, যে রাজনীতিতে ধাপ্পাবাজ, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং মিথ্যাচারের নেতৃত্ব রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে যখন কোনো ধাপ্পাবাজির ব্যবহার করা হয় তখন সেটিকে ‘ডার্টি বোম রাজনীতি’ বলা হচ্ছে। ইউক্রেনের ডার্টি বোমা ব্যবহার এবং রাশিয়ার পাল্টা ব্যবস্থাও ডার্টি বোম রাজনীতি!

বলা হচ্ছে, ডার্টি বোমা এখনো কেউ ব্যবহার করেনি। তবে সন্দেহ করা হয় যে, চরমপন্থীদের হাতে এই বোমা রয়েছে। ডার্টি বোমা পারমাণবিক বোমা বা হাইড্রোজেন বোমার মতো পারমাণবিক ডিভাইসের চেয়ে অনেক কম ধ্বংসাত্মক, যার ফিউশন প্রতিক্রিয়া বিস্তৃত পরিধিতে ধ্বংস করে। এই বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ক্ষমতা প্রয়োজন যা বেশির ভাগ দেশের নেই। ডার্টি বোম তৈরি করাও সহজ। যেহেতু এই বোমার কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়নি, তাই এটি অপ্রমাণিত অস্ত্র।

বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন যে, মারাত্মক কিছু না ঘটলে ইউক্রেন এই বোমা ব্যবহার করবে না। তাই বোঝা যায়, ইউক্রেন এই বোমা তৈরি করে রেখেছে। কেজিবি ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিকিরণ, রাসায়নিক ও জৈবিক সুরক্ষাবাহিনীর প্রধান ইগর কিরিলভ সবার কাছে আগাম সর্তকবার্তা পাঠিয়েছেন। এই বোমা ব্যবহারের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, সরাসরি গণহত্যার পরিবর্তে একটি জনসংখ্যার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। সোজা কথায় জীবন বিনাশ না করে ধুঁকে ধুঁকে মারা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক নিয়ন্ত্রণ কমিশন ডার্টি বোম সম্পর্কে বলেছে, বোমাটি গণবিধ্বংসী অস্ত্র নয়; বরং এটি একটি ‘গণবিঘ্ন সৃষ্টিকারী অস্ত্র’, যেখানে দূষণ ও উদ্বেগ সৃষ্টি প্রধান উদ্দেশ্য। এর মানে হলো, কেবল বিস্ফোরণ স্থলের লোকেরাই তাৎক্ষণিক বিকিরণের সংস্পর্শে আসবে ও গুরুতর অসুস্থতায় পড়বে। বলতে গেলে এলাকা থেকে পালানো ছাড়া রক্ষা পাওয়া দুষ্কর।

পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোকে বিশেষ করে যুক্তরাজ্যকে, ডার্টি বোমা তৈরিতে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ন্যাটো সহযোগীদের সাথে টেলিফোনে আলাপকালে জানান, জেলেনস্কি রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে ডার্টি বোম ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, এই অভিযোগ ‘মিথ্যা, বিপজ্জনক ও হাস্যকর।’ তিনি আরো জানান, ‘প্রথমত, ইউক্রেন একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এনপিটি সদস্য, আমাদের কাছে কোনো ডার্টি বোম নেই এবং অর্জনের পরিকল্পনাও নেই। দ্বিতীয়ত, রাশিয়ানরা প্রায়ই অন্যদের দোষারোপ করে যা তারা নিজেরাই পরিকল্পনা করে।’ ব্রিটিশ, ফরাসি ও তুর্কি সহযোগীদেরও ফোনে শোইগু ডার্টি বোম ব্যবহার করার ইউক্রেনের সম্ভাব্য উসকানি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাশিয়ার চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ তার মার্কিন সমকক্ষ জেনারেল মার্ক মিলির কাছেও বিষয়টি কয়েকবার তুলে ধরেন।

রাশিয়া শুরু থেকেই বলে আসছে, অবস্থা বিপজ্জনক হলে পরমাণু অস্ত্রও ব্যবহার করতে পারে। মস্কো বর্তমানে ইউক্রেনে মিসাইল হামলা চালিয়েছে। কিয়েভের মেয়র জানিয়েছেন, কিয়েভের ৩০ লাখ বাসিন্দার জন্য এখন এক অন্ধকার সময়, রাশিয়ার গোলাবর্ষণের ফলে শহরের জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংসের গোড়ায়। জার্মান সংবাদপত্র বিল্ড লিখেছে, এবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ শীতকাল শুরু। মেয়র মনে করেন, লোকজনকে বিভীষিকা থেকে বাঁচানোর জন্য রাজধানীর কিছু অংশ খালি করতে হবে। অনেককে রাজধানী থেকে সরিয়ে নিতে হবে। রাশিয়া শীতকে কাজে লাগিয়ে মানুষের মনে ভীতির সৃষ্টি করেছে। মনে হচ্ছে এটি ডার্টি বোমের বিপরীত অস্ত্র। কিয়েভ থেকে ১২০ কিলোমিটার পশ্চিমে, হামলার পর বিদ্যুৎ, পানি গরম করা ও মোবাইল ইন্টারনেট সব বন্ধ হয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউক্রেনের জাপোরিজ্জিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবারো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কারখানাটি এখন জরুরি ডিজেল জেনারেটরের ওপর নির্ভরশীল। জাপোরিজ্জিয়া ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, চলতি মাসে বারবার বাহ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রান্তিক দেশগুলো নানা সমস্যায় ভুগছে। বিভিন্ন দেশের কাছে ইউরোপীয়রা কিয়েভের জন্য সহায়তা চাওয়ার পর পাওয়ার গ্রিড আবারো প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করা হয়েছে।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি প্রতিষ্ঠান এনারগোটম বলছে, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর একাধিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো থেকে সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে ফ্রিকোয়েন্সি হ্রাসের কারণে শুধু জরুরি সুরক্ষা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ছাড়া সাধারণ সরবরাহ বন্ধ। মলদোভা বলেছে, প্রতিবেশী ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের অর্ধেক এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসকে কিয়েভ অভিযোগ করে যে, রাশিয়া ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে, ফলে একদিকে প্রচণ্ড শীত অন্য দিকে আলো, পানি, তাপ ও যোগাযোগ বঞ্চিত মানুষ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, ১৫ নভেম্বর রাশিয়া ইউক্রেনের শহরগুলোতে প্রায় ১০০টি মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, ফলে দেশের প্রায় অর্ধেক পাওয়ার সিস্টেম ধ্বংস হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে, ১৭ নভেম্বর ইউক্রেনে সামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোর লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। প্রতিরক্ষা ও শিল্প লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ‘ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্র’ও রয়েছে। এর মধ্যে ইউক্রেন ইইউর প্রতিশ্রুত ১৮.৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা পাওয়ায় মস্কো আক্রমণ কার্যক্রম জোরদার করেছে। রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ড্রোন, রকেট, ভারী আর্টিলারি ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে, ক্রুজ মিসাইল সাজিয়েছে।

সামনের দিনগুলোতে কিয়েভ সম্পূর্ণ শাটডাউন করতে সতর্ক করেছে, কেননা ‘সাবজিরো’ অর্থাৎ ১৮ ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রা দেশটিকে গ্রাস করছে।

রুশ বাহিনী বাখমুত শহর ও নিকটবর্তী সোলেদারসহ অন্যান্য শহরে গোলাবর্ষণ করেছে। মাইকোলাইভ ও খেরসন অঞ্চলের মধ্যবর্তী সীমান্তে অবস্থিত লুক গ্রাম রাশিয়ান গোলাবর্ষণে ভুতুরে শহরে পরিণত হয়েছে। এই সুন্দর পাবর্ত্য এলাকায় এক হাজার মানুষ বসবাস করত এখন মাত্র ৩৮ জন দুর্ভোগের প্রহর গুনছে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার খেরসন দখলের সময় মার্চ থেকে নভেম্বরের মধ্যে ২২৬ জন আটক বা নিখোঁজ হয়েছে।

জাপোরিজ্জিয়ার বিশাল অংশ এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। জাপোরিজ্জিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ডিনিপ্রো নদীর ওপারে অবস্থিত নিকোপোলে, ৪০টি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র বহুতল ভবন, ব্যক্তিগত বাড়ি এবং প্রধান বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জাপোরিজ্জিয়া ইউরোপের অন্যতম প্রধান বিদ্যুৎকেন্দ্র। ইউক্রেন ছাড়াও অন্যান্য পার্শ্ববতী দেশে এখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়।

জেলেনস্কি জার্মানিকে জরুরি ভিত্তিতে জেনারেটর, প্রতিরক্ষামূলক শীতবস্ত্র এবং দ্রুত মানবিক পণ্য পাঠাতে অনুরোধ জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশেষ করে পোল্যান্ড জার্মানিকে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। ইতালির ফ্লোরেন্স শহরের মেয়র দারিও নার্দেলা স্টোরেজে থাকা জেনারেট পাঠানোর জন্য মহাদেশের ২০০টি শহরের একটি গ্রুপকে সমন্বয় করার চেষ্টা করছেন। নার্দেলা বলেন, ‘আমরা কয়েক শ’, এমনকি শিল্প আকারের জেনারেটরও পাঠাতে পারি, এসব প্রচুর বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম।’

হিমশীতল তাপমাত্রার মধ্যে, দেশের ১০ মিলিয়ন মানুষ বিদ্যুৎ এবং তাপ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ১৮টি অঞ্চল ও কিয়েভে মানুষ ব্ল্যাকআউট ও বিভ্রাটের শিকার। ইউটিলিটি কর্মীরা বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় ইউটিলিটি পরিষেবার প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘সম্ভাব্য দীর্ঘ বিভ্রাটের জন্য প্রস্তুত থাকা দরকার।’ জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত থাকলে এই শীতে ওখানের লোকজন মারাত্মক মানবিক সঙ্কটে পড়বে।

ইইউ আইন প্রণেতারা ২৩ নভেম্বর এক রেজ্যুলুশনে রাশিয়াকে সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ইউক্রেন ও বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের দীর্ঘ দিনের নীতির অবসান ঘটাতে রাশিয়াকে অবশ্যই সব পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন হতে হবে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচটি দেশ- পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া- ইতোমধ্যে রাশিয়াকে সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণা দিয়ে আসলে কী করবে তার কোনো কর্মপদ্ধতি ইউরোপীয়দের নেই। তারা যেসব নিষেধাজ্ঞা অবরোধ দিয়েছে তার পাল্টা হিসেবে রাশিয়া তেল-বিদ্যুৎ-গ্যাস বন্ধ করে দিয়েছে। যেটি একমাত্র ভরসা সেই জাপোরিজ্জিয়াও প্রচণ্ড হামলায় পঙ্গু হয়েছে। ইউরোপ আরো অগ্রসর হলে মস্কো আবারো মিসাইল বা ক্রুজ হামলা চালাবে এটি নিশ্চিত।

ক্রেমলিন এখন সমাজকে সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১৯ অক্টোবর ইউক্রেনের চারটি অধিকৃত অঞ্চলে সামরিক আইন জারির পর পুতিন রাশিয়াজুড়ে নতুন করে ‘অ্যালার্ট লেভেল’ চালু করেছেন। এগুলো কর্তৃপক্ষকে নাগরিকদের গতিবিধি সীমাবদ্ধ বা বাধ্য করা, সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করা ও যোগাযোগ নিরীক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে। যদিও এটি ‘মার্শাল ল লাইট’-এর একটি ফর্মের অনুরূপ তবুও ক্রেমলিন যুদ্ধের বিচার করতে সহায়তা করার জন্য সামরিক আদালতের চেয়ে কম নয়।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মস্কো কেবল পশ্চিমা পারমাণবিক রাষ্ট্রগুলোকে ফোন করেছিল। স্পষ্টতই অপারমাণবিক জার্মানিকে ফোন করেনি, এই দেশটি পশ্চিমা জোটের সম্ভাব্য দুর্বল লিঙ্ক হিসেবে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার সেনারা জার্মানিতে ঢুকে পড়লে হিটলার সাম্রাজ্যের অবসান হয়। রাশিয়ানরা বলত জার্মানিরা ‘অপদার্থ, চাষবাসও সঠিকভাবে করতে জানে না।’ রাশিয়ান সেনাধ্যক্ষরা বলত যে এসব এলাকায় চাষ করে কৃষিব্যবস্থা পাল্টে দেবে। হিটলার রাশিয়ানদের হাতে পড়ার আগে বাঙ্কারের ভেতর পেট্রোল ঢেলে নিজেকে পুড়িয়ে দেন। তার আগে প্রেমিকা ইভাব্রাউন নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। এসব বিয়োগান্তক ঘটনা জার্মানরা ভোলেনি, রাশিয়ানরাও মনে রেখেছে।

রাশিয়া জানে যে, পারমাণবিক উত্তেজনাই পশ্চিমাদের সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন করে তোলে। জাপোরিজ্জিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে এর বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড চলতি মাসে প্রচণ্ড উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সেপ্টেম্বরেও পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগে যেকোনো ধরনের পারমাণবিক বা রেডিওলজিক্যাল বিস্ফোরণ শনাক্ত করার অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সিস্টেম রয়েছে। প্রয়োজনে কোড ২৪/৭ পদ্ধতির মাধ্যমে নিরীক্ষণ করে নিশ্চিত হতে পারে। রাশিয়া যদি নিজেই ডার্টি বোম ব্যবহার করে তবে পরিণতি শুভ হবে না। পেন্টাগন সতর্ক করেছে যাতে এমন না ঘটে। পদক্ষেপ নিলে, পরিণতির বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে রাশিয়াকে বলা হয়েছে। এতদসত্ত্বেও রাশিয়া এক হাজারের উপর পরমাণু ওয়্যার হেড প্রস্তুত রেখেছে। সম্প্রতি ইউক্রেনে যেসব মিসাইল হামলা হয়েছে সেখানে পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করা হয়। পেন্টাগন বলছে, এটি পরমাণু বোমা ব্যবহারের এক মহড়া। যুক্তরাষ্ট্র মিত্রদের কখনো পরিত্যাগ করবে না এবং ইন্দো-প্যাসিফিক থেকেও সরে যাবে না।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement
মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সকল