২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

এডওয়ার্ড গিবনের ইসলামদৃষ্টি

ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ এডওয়ার্ড গিবন - ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ এডওয়ার্ড গিবন (১৭৩৭-১৭৯৪) আধুনিকতার ভোরবেলায় ইতিহাস বয়ানকে মোচড় দেন প্রবলভাবে। তার বিখ্যাত গ্রন্থ The History of the Decline and Fall of the Roman Empire একটি কালজয়ী ইতিহাসকর্ম নয় শুধু; বরং ইতিহাস বয়ানে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সুনির্দিষ্ট গবেষণাভিত্তির নমুনা হয়ে ওঠে এ বই। রোমান সাম্রাজ্যের চিত্র ও চরিত্র; দারিদ্র্য ও সমৃদ্ধি, ভোগ ও ক্ষুধা, শোষণ ও শাসন, আলো ও অন্ধকার, জরা ও অবক্ষয় তার দীপিত দৃষ্টিতে এত স্পষ্ট ও অন্তরঙ্গভাবে ধরা দেয় যা প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতাকেও যেন অতিক্রম করে।

একটি সাম্রাজ্যের রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি যখন তার কলমে ভাষা পাচ্ছে, তখন একটি মোমবাতি রাখার ভুল ও সঠিকতা তার নজর এড়াচ্ছে না। একটি গৃহপালিত পশুর দীর্ঘশ্বাসও তিনি শুনতে পাচ্ছেন। ইতোপূর্বে যখন ঐতিহাসিকদের কাজগুলো সাহিত্যের ওপর নির্ভরশীল অনুন্নত বর্ণনায় স্থির ছিল, তখন গিবন ইতিহাসের বয়ানকে দিলেন সেই মুক্তি, যার প্রাথমিক প্রস্তাবনা বহু শতক আগে ইবনে খালদুনের মনস্বী পৃষ্ঠাগুলোতে জ্বলে উঠেছিল।

সরকার, সংস্কৃতি ও সমাজের বিভিন্ন দিক, পুণ্য ও পাপ, সুদ ও লোভ, কৃষি ও দাসত্ব, চার্চ ও দুর্নীতি, বীরত্ব ও বিশ্বাসহত্যা, চিন্তা ও ভাব, বিনোদন ও প্রবৃত্তি, কটাক্ষ ও হাস্যরস একই সাথে করতালি দেয় তার বয়ানে। জীবন ও মৃত্যুর দাপাদাপি আর ঈশ্বর ও শয়তান জীবনের মত্ততার ভেতর হাজির হন গিবনের আয়নায়।

ঘটনাপঞ্জি বা সারসংক্ষেপ, সবিস্তার বয়ান বা ঘটনার তালাশ, পরিস্থিতির আত্মায় নিহিত উপাদানগুলোর দাবি ও প্রকৃতি, ইতিহাসের যা কিছু উপেক্ষিত, তার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা তার হাত ধরে ঐতিহাসিকতার সেই ঐতিহ্য তৈরি করল, যেখানে ইতিহাসকে শুধু ভূমির উপরে নয়, মাটির চাপাপড়া তলায়ও দেখা যায়! গিবনের ভাষ্যে নিহিত ছিল আধুনিক প্রতœতাত্ত্বিক আবিষ্কারের প্রকল্পও।

ইতিহাসের বয়ানে তিনি ছিলেন ঋজু, দৃঢ়চেতা, স্পষ্টবাক। তখনকার বাস্তবতায় খ্রিষ্ট দুনিয়ায় নিন্দার সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও তিনি লিখেন- ‘খ্রিষ্ট ধর্ম পৌত্তলিকতাকে জয় করেছে, এটি সত্য। আবার এটিও সত্য যে, এ ধর্ম পথভ্রষ্ট হয়েছে পৌত্তলিকতার মাধ্যমে।’

ইহুদিদের নৃশংসতা সম্পর্কে তার বিবরণ জড়তাহীন। গিবন লিখেন, ‘ইহুদিদের বীভৎস নৃশংসতার বিবরণ শুনে মানবতা মর্মাহত ও শোকাহত হয়। তারা মিসরে, সাইপ্রাসে ও সাইরেনের শহরগুলোতে যে বর্বরতার ঝড় হয়ে তুলেছিল, তা তাদের নির্মমতার অংশমাত্র। এসব শহরে ইতোপূর্বে তারা বসবাস করত স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে বন্ধুত্বের ভান করে।’

‘কেবল সাইরেনে ইহুদিরা হত্যা করেছিল দুই লাখ গ্রিককে। সাইপ্রাসে হত্যা করেছিল দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষকে। মিসরেও তারা হত্যা করেছিল অগণিত প্রাণ। বিজয়-মদমত্ত ইহুদিরা খেয়েছে মানুষের মাংস, চুষেছে রক্ত ও মানুষের নাড়িভুঁড়ি মালার মতো করে শরীরে ঝুলিয়েছে।’

দৃপ্ত ও ধারালো রচনাভঙ্গি ছিল গিবনের। কিন্তু ব্যক্তি তিনি ভঙ্গুর শরীর ও অসুস্থতার হাতে নাজেহাল থাকতেন নিয়মিত। ছয় ভাইবোন ছিল তার; (পাঁচ ভাই, এক বোন) তাদের সবাই মারা গেলেন শৈশবে। যদিও তার দাদা ও বাবা ছিলেন যথেষ্ট সম্পদের অধিকারী এবং তার এক দাদী, ক্যাথরিন অ্যাক্টন ছিলেন স্যার ওয়াল্টার অ্যাক্টন, দ্বিতীয় ব্যারোনেটের বংশধর।

৯ বছর বয়সে মা-বাবা তাকে পাঠান কিংস্টন আপন টেমসে (বর্তমানে কিংস্টন গ্রামার স্কুল) ডক্টর ওয়াডেসনের স্কুলে। এর কয়েক দিন পরই মারা গেলেন গিবনের মা। ১৭৪৭ থেকে ১৭৫১ সাল তিনি কাটিয়েছেন বুরিটনে পারিবারিক বাড়িতে। এ সময়ে তার অধ্যয়ন বহুমাত্রিকতা লাভ করে।

কৈশোর থেকেই তার মনের খাবার ছিল ইতিহাস। প্রাচীন ইতিহাসের বিরতিহীন পরিক্রমায় হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে অসুস্থতাকে অতিক্রমের যে স্বাদ তার চিত্তলোকে ছিল, তিনি তা কখনো হারাননি। ১৭৫২ সালে অক্সফোর্ডের ম্যাগডালান কলেজে যখন ভর্তি হলেন, বয়স তখন ১৫ বছর। এখানে অতিবাহিত ১৪ মাসকে তিনি আখ্যা দেন জীবনের সবচেয়ে অলস ও অলাভজনক সময় হিসেবে।

ক্যাথলিক চার্চের ধর্মীয় বিতর্ক ও বিভ্রান্তি তাকে ক্লান্ত করছিল। অক্সফোর্ডের নিস্তেজ বায়ুমণ্ডলে ধর্মবিশ্বাসের ধারা ও ধরন নিয়ে তর্কে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। ডেইস্ট বা যুক্তিবাদী ধর্মতাত্ত্বিক কনিয়ার মিডলটনের (১৬৮৩-১৭৫০) মন্ত্রে প্রভাবিত হন এবং অচিরেই ১৭৫৩ সালের ৮ জুন প্রোটেস্টান্ট মত ত্যাগ করে রোমান ক্যাথলিক ধর্মে দীক্ষা লাভ করেন।

ধর্মান্তরিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাকে অক্সফোর্ড থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং সুইজারল্যান্ডের লুসানের সংস্কারপন্থী যাজক ড্যানিয়েল প্যাভিলার্ডের যত্ন ও তত্ত্বাবধানে বসবাসের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখানে, তিনি তৈরি করেন দুর্দান্ত কিছু বন্ধুত্ব। তারুণ্যের প্রথম প্রহর থেকেই গির্জা, বাইবেল, প্রোটেস্টান্ট-ক্যাথলিক মতবাদ ও পরে রাজনীতি ইত্যাদি গিবনের জীবনে গভীরভাবে যুক্ত থেকেছে। ডক্টর জনসনের সাহিত্য ক্লাবসহ আরো ভালো সামাজিক ক্লাবগুলোতে সম্পৃক্ততা, রয়্যাল একাডেমিতে প্রাচীন ইতিহাসের অধ্যাপনা, ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার গ্র্যান্ড লজের ফ্রিম্যাসন হিসেবে দীক্ষা গ্রহণ, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যপদ ইত্যাদি তার ব্যাপ্তির নানা দিক। কিন্তু তার কালোত্তীর্ণ সত্তাটি নির্মাণ করে দিয়েছে সাহিত্য, বিশেষ অর্থে ইতিহাস!

বিচিত্র মাত্রায়ও তার মন মগ্ন ছিল প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাসের ওপর সুদৃঢ় কাজের প্রস্তুতিতে! ইংরেজ, আরব, পারসিয়ান, তুর্কি, মোগল ইত্যাদি ঘরানার ইতিহাসের প্রধান সঞ্চয়গুলো পাঠ করে চীনের দিকে হাত বাড়ান গিবন। অব্যাহত ভ্রমণ, ল্যাতিন সাহিত্য পাঠ, আইন অধ্যয়ন, হুগো গ্রোটিয়াস, স্যামুয়েল ভন পুফেনডর্ফ, জন লক, পিয়ের বেইল ও বেইস প্যাসকেলের আত্মীকরণ তাকে দেয় বহুদর্শিতা। আপন প্রখরতায় তিনি প্রদীপ্ত হয়ে ওঠেন, The History of the Decline and Fall of the Roman Empire-এর মধ্য দিয়ে। ছয় খণ্ডে প্রকাশিত হয় এ বই (প্রথম খণ্ড ১৭৭৬ সালে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড ১৭৮১ সালে, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ খণ্ড ১৭৮৮ সালে)। বইটির ৫০তম অধ্যায় ‘মুহাম্মাদ সা: ও ইসলামের আবির্ভাব’ শিরোনামে পৃথকভাবে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। এতে গিবনের ইসলামদৃষ্টি ও ইসলাম-অধ্যয়নের সারাৎসার বিবৃত। যার গুরুত্ব ও আবেদন আজো প্রাসঙ্গিক। শত্রু ইসলাম ধারণার বাইরে এসে মহানবী সা:-এর জীবনী ও ইসলামের ইতিহাসের প্রারম্ভিক পর্যায়গুলো নিয়ে প্রভাবক আলোকপাত করেন তিনি।

ক্রুসেডের উত্তরাধিকার নিয়ে পশ্চিমা চিন্তার সিলসিলা মহানবীকে নিকৃষ্ট চরিত্রে চিত্রায়ণ করছিল। তিনি একজন মিথ্যাবাদী, এই সিদ্ধান্ত ছিল পূর্বস্থির। ভাষ্যগুলোর শুরু হচ্ছিল এই সিদ্ধান্তকে রটনার জন্য। হীন ও হেয় অবয়বে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা ছিল চলমান। নতুন গবেষণা এই চিত্রায়ণে ছিল ক্লান্ত। গিবন এই ক্লান্তি থেকে বেরিয়ে আসার ভালো নমুনা হয়ে উঠলেন আপন সময়ে।

তিনি দেখান খ্রিষ্টানরা মুহাম্মদ সা: সম্পর্কে অশোভন কথা বলেছেন ও তাঁকে নীচ বা হীন বলে আখ্যা দিয়েছে, এতে সন্দেহ নেই। এটি তারা করেছে তাঁকে শত্রু স্থির করে। এ প্রক্রিয়ায় শত্রুর মর্যাদা ও গুরুত্ব কমাতে গিয়ে তারা বরং তাঁর মর্যাদা ও সম্মান বাড়িয়ে দিয়েছে। গিবন ব্যাখ্যা করেন মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের মতের অমিল। কিন্তু মিলের জায়গা ছিল কেন্দ্রে। হজরত আদম থেকে কুরআন নাজিল হওয়ার সময় পর্যন্ত যত নবী এসেছেন তাঁদেরকে নির্ভরযোগ্য ও সত্যিকারের নবী মনে করতেন মুহাম্মদ।

গির্জা ও তার নিয়োগী প্রচারকরা যে বিষাক্ত বিদ্বেষের বিস্তার করেছে এতকাল, এর বুনিয়াদ ছিল একটি মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। সেটি হলো মুহাম্মদ সা: যিশু খ্রিষ্টের বিপজ্জনক শত্রু। কিন্তু আসলেই কি তাই? গিবন দেখান, শুধু ঈসা মসিহ নয়, সব নবী-রাসূলের প্রতি সম্মান ইসলামী বিশ্বাসের সাথে জড়িত। মুসলিমরা বাধ্য কোনো নবীর সাথে শত্রুতা না করতে। তিনি লিখেন- ‘মুসলমানদের কাছে বেড়েছে নবীদের মহিমা, রাসূলদের সম্মান। মহানবী সা: তাদেরকে শিখিয়েছেন ভালোবাসতে; যিশু খ্রিষ্টকে ভালোবাসা ও সম্মানের শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। মুসলমানদের এই সম্মান প্রদর্শনের মধ্যে নিহিত আছে রহস্য। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- ‘যখন ফেরেশতারা বলল, হে মারইয়াম আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন তাঁর এক বাণীর এক সম্মানিত অস্তিত্বের, -যার নাম হলো মসিহ তথা মারইয়াম-তনয় ঈসা, ইহ ও পরকালে তিনি মহাসম্মানের অধিকারী ও আল্লাহর ঘনিষ্ঠদের একজন।’

মহানবী সা: যেমন ঈসা মসিহের সত্যায়ন করেছেন, ঈসা মসিহ কিংবা বাইবেলে বর্ণিত মোসেজ (মুসা আ:) কি হজরত মুহাম্মদের সত্যায়ন করে যাননি? গিবন দেখান সেই সত্যায়নের চিত্র। লিখেন, ‘মুসা ও ঈসা ভালোবাসতেন। তাদের ভালোবাসা ছিল ধর্মে। তাঁরা ছিলেন আধ্যাত্মিক সাধক ও সংযমী। তারা নিশ্চিত ছিলেন এমন একজন নবীর আবির্ভাবের প্রশ্নে, যিনি হবেন তাদের চেয়ে উত্তম ও বেশি মহিম। তাঁরা এই নিশ্চিত বিশ্বাসের ওপর ছিলেন প্রফুল্ল, সন্তুষ্ট।... মুহাম্মদও ইসলাম ধর্মের বুনিয়াদকে প্রতিষ্ঠিত করেন এ দুই ধর্মের তথা খ্রিষ্ট ও ইহুদি ধর্মের সেই সত্যতার ভিত্তিতে, যা ইসলামের আগে ওহি হিসেবে এসেছিল মুসা আ:-এর কাছে, ঈসার আ: সকাশে। মুহাম্মদ সা: এ দুই নবীর উত্তম গুণাবলি ও অলৌকিক ঘটনাগুলোতে বিশ্বাস করতেন।’

গিবন মহানবী সা:-কে রাসূলদের ধারায় উপস্থাপন করেও বলতে চেয়েছেন তাঁর সাফল্য মূলত ছিল তাঁর প্রতিভার অর্জন। তাঁর প্রতিভার অনন্যতাকে মুখ্য হিসেবে দেখান গিবন। লিখেছেন, মুহাম্মদ সবচেয়ে বিশুদ্ধ আরবি শিখেছিলেন। পড়াশোনা না করেও তিনি বাগ্মিতা অর্জন করেছিলেন। প্রকৃতির বই থেকে তিনি জ্ঞানার্জন করতেন। সফরের সময় তিনি দর্শন ও রাজনীতির অনেক কিছুই লক্ষ করতেন। সংক্ষিপ্ত ও তাড়াহুড়োমূলক এসব সফরের সময়ও তার প্রতিভাদীপ্ত চোখ এমন সব বিষয় দেখত, যা দেখতে অক্ষম ছিল তার সাথে থাকা দূরদৃষ্টিহীন বা অবিচক্ষণ মানুষদের চোখ।’

আরো অগ্রসর হয়ে গিবন ব্যক্ত করেন আপন শ্রদ্ধাপূর্ণ ভাষ্য। লিখেন- মুহাম্মদ বিপুল জনগণের মধ্যে কিংবা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর মধ্যে বক্তব্য দেয়ার আগেই শ্রোতাদেরকে নিজের সমর্থক বানিয়ে ফেলতেন। তাঁর জ্যোতির্ময় প্রখরতা, মর্যাদাময় ও ভাবগম্ভীর উপস্থিতি এবং মহিয়ান বাহ্যিক রূপ বা ভঙ্গিমা, অন্তর্ভেদী দৃষ্টি ও কোমলতা বা দয়া-মিশ্রিত স্মিত হাসি, দীর্ঘ দাড়ি ও তাঁর সম্ভ্রান্ত মুখ- এসবই যেন ছিল তাঁর আত্মার স্নেহমাখা অনুভূতিগুলোর ছবি। তাঁর চলাফেরাও তাঁর হয়ে কথা বলত।... মুহাম্মদ রাজত্ব বা রাজা-বাদশাহদের সব আভিজাত্যকে তুচ্ছ মনে করতেন এবং অভিজাতদের দৃষ্টিতে যা অতি সাধারণ বা যে কাজ নিম্ন পর্যায়ের শ্রমিকের, সে সব কাজও নিজেই করতেন!’

গিবন মনে করতেন, মুহাম্মদের চিন্তাধারারই ফসল হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। একত্ববাদ বা তাওহিদ হচ্ছে এ ধর্মের চিরন্তন বাস্তবতা ও সর্বপ্রধান মূলনীতি। আর এ ধর্মবন্ধন গড়ে তোলার দ্বিতীয় প্রধান মূলনীতি হলো তাঁরই ঐশী রিসালাত।

আল-কুরআন তাঁর বিচারে মহানবীর রচিত গ্রন্থ। তবুও কুরআনের প্রতি তার ছিল অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা। যেভাবে তা নবীযুগে ছিল, এখনো সেভাবেই আছে কুরআন। একেবারে অবিকৃত। গিবনের বিচারে এটি সত্য, এ কোনো প্রোপাগান্ডা নয়। তিনি লিখেন- ‘এ নয় মুহাম্মদের ধর্মের প্রচারণা; বরং এ হচ্ছে তাঁর ধর্মের স্থায়িত্বের নিদর্শন। আমাদের বিস্মিত হতে বাধ্য করছে এই সত্য। মক্কা ও মদিনায় মুহাম্মদ সা: লিপিবদ্ধ করিয়ে রেখেছিলেন তা এক হাজার ২০০ বছর পরও পুরোপুরি অবিকৃত রয়েছে ভারতে, আফ্রিকায় আর তুরস্কে ধর্ম বদলানো মানুষের মাধ্যমে।’

আপনকালে ইউরোপে প্রচারিত স্তূপ স্তূপ মিথ্যার বিপরীতে ইসলামের প্রতি যে বস্তুনিষ্ঠতার তালাশ গিবনে পাওয়া যায়, তা আজকের ঘৃণা ও বিদ্বেষ বিষাক্ত ইসলামোফোবিয়াকেও থামার জন্য আহ্বান জানায়। বলে যা স্পষ্ট সত্য, তাকে বিদ্বেষ দিয়ে ঢেকে ফেলতে চাইলে তার শক্তিকেই বরং বৃদ্ধি করা হয়!


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল