১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গণতন্ত্রকে তামাশা বানানো হয়েছে

- ছবি : সংগৃহীত

প্রতারণা জালিয়াতির সর্বোচ্চ ধরনটি কেমন হতে পারে, বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মানুষ তার নজির সৃষ্টি করেছে। চোর ডাকাত বাটপাড় হিসেবে পরিচিতরা দুষ্কর্ম করলে বিস্মিত হওয়ার কিছু থাকে না। সমাজে বংশপরম্পরায় নির্দিষ্ট হারে এ ধরনের অপরাধী থাকে। রাষ্ট্র্র ও সমাজব্যবস্থা ধরে নেয় যে, চুরি ডাকাতি এসব অনিয়ম ঘটবে। সেজন্যে কারাগার আছে। কিন্তু আমাদের সমাজে আরেকটি নতুন শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছে। যাদের সাথে দেশের শাসনব্যবস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এরা সরকারের প্রশ্রয়ে থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামো তছনছ করে দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত মূল্যবোধকে হরফে খেলাধুলা বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা এদের জন্য একটি তামাশা ছাড়া কিছু নয়।

তামাশা বলতে ঠাট্টা বা কৌতুক বোঝায়। খেলা বা প্রদর্শনী যা মানুষের বিনোদনের জন্য করা হয়। এ জন্য যাত্রাপালা গান-বাজনার আয়োজন হয়। বর্তমান জামানায় নাটক সিনেমা বা বিনোদনের উদ্দেশ্যে যেকোনো ধরনের স্টেজ শো তামাশার মধ্যে পড়ে। এগুলো জীবনের নানা দিক প্রকাশের একটি মাধ্যম। মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য এর সৃষ্টি। সে জন্য এসব শোতে চুরি ডাকাতি খুন গুম সবই দেখানো যায়। আর আমরা জাতিগতভাবে মানুষের বাস্তব জীবন নিয়ে এই তামাশায় লিপ্ত হয়েছি।

আমরা ছায়াছবির রঙিন অবাস্তব প্রদর্শনীর বাস্তবায়ন শুরু করেছি জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে। বর্তমান সরকারের আমলে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রত্যেকটি খাতে এই তামাশা চালু হয়ে গেছে। কোন সেক্টরে তামাশা বেশি হচ্ছে তা আলাদা করে বলা দুরূহ। আইন প্রশাসন বিচার কোনো জায়গা বাদ নেই। রাষ্ট্র পরিচালনা ও গণতন্ত্রের সাথে যুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং ভোট ব্যবস্থাকে সম্ভবত আমরা সবচেয়ে বেশি তামাশার বস্তু বানিয়ে ফেলেছি।

রাজনীতি আমাদের শাসক শ্রেণীর কাছে পুরোই এখন ঠাট্টা মশকরা। যদিও এর কারণে বিরোধীদের প্রাণ যাচ্ছে, ঘরবাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে, ব্যবসা বাণিজ্য চাপে পড়ছে। বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠেকানোর জন্য সরকার এমন কৌটিল্য নীতি অবলম্বন করছে যা হতবাক করে দিচ্ছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত ব্যক্তিরা নির্জলা অসত্য বলছেন অবলীলায়। এই সরকারের সময় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অনেকটাই নিষিদ্ধ ছিল। নাশকতা জঙ্গিবাদ দমনের নামে দলটির সব কার্যক্রম একেবারে সীমিত করে দেয়া হয়েছিল। বিএনপির ঘরোয়া অনুষ্ঠানকেও যেনতেনভাবে ভণ্ডুল করা হয়েছে। যাই হোক, দলটিকে এখন সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। যদিও সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে এটি এখনো তারা স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে না। পুলিশের অনুমতি পেতেও অনেক ঝক্কি ঝামেলা হচ্ছে। সভাসমাবেশ করতে গিয়ে তাদের পদে পদে বাধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

মারধর করে ভয় দেখিয়ে বিএনপিকে রুখে দেয়ার অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর সরকার এখন অরুচিকর প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। দলটির ডাকা প্রত্যেকটি বিভাগীয় সমাবেশের একদিন আগে পরিবহন ধর্মঘট ডাকছে। এর ফলে সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ কাজে পরিবহন সংগঠনগুলো সব জায়গায় একই দাবির কথা উল্লেখ করছে। অটোরিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, করিমনসহ অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবিতে তাদের দুই দিনের ধর্মঘট। পুলিশ ও দলীয় লোকেরা পথে পথে বাধা দেয়ার পরও চট্টগ্রামে বিভাগীয় সমাবেশে বিপুল লোকসমাগম হয়। এরপর থেকে পরের প্রত্যেকটি সমাবেশে একই দাবিতে পরিবহন সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডাক দিচ্ছে। তারা ঠিক বিএনপির সমাবেশের দিনকে দাবি আদায়ে ধর্মঘটের জন্য বাছাই করছে।

এর আগে দেশে যখনই পরিবহন সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছে প্রশাসন তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে একসাথে বসে এর সুরাহা করার চেষ্টা করেছে। ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিএনপির সমাবেশ লক্ষ করে সংগঠনগুলোর ডাকা ধর্মঘটে যোগাযোগ সম্পূর্ণ অচল হয়ে যাত্রীদের ব্যাপক ভোগান্তির পরও প্রশাসনের কোনো ধরনের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। এতে শুধু বিএনপির সমাবেশে আগত মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে এমন নয়; সারা দেশের বহু মানুষ কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়ছে। বিশেষ করে মুমূর্ষু রোগী, জরুরি প্রয়োজনে মানুষ গন্তব্যে যেতে পারছে না। তারপরও প্রশাসনের কোনো নড়াচড়া নেই। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বিএনপির সমাবেশ নিয়ে ডাহা মিথ্যা বলছেন, আবার ঠাট্টা মশকরাও করছেন। দলীয় নেতারা বলছেন, পরিবহন ধর্মঘট সম্পূর্ণ পরিবহন মালিক শ্রমিকদের নিজেদের বিষয়, এ ব্যাপারে সরকারের কোনো হাত নেই। অপর দিকে, পরিবহন সংগঠনগুলোর বেশির ভাগ নেতা ক্ষমতাসীন দলের। আর যারা দলটির সাথে যুক্ত নন তারা ভয়ে মুখ খুলছেন না। তাদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, এই ধর্মঘটের সাথে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থের কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারি দলের নেতাদের নির্দেশে এই ধর্মঘট তাদের করতে হচ্ছে। সরকারি দলের লোকেরা আবার মশকরা করে বলছেন, ভাঙচুর ও আগুনের ভয়ে মালিকরা গাড়ি চালাচ্ছেন না। বাস্তবতা হচ্ছে- চলমান বিএনপির একটি সমাবেশেও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেনি।

অন্য দিকে, এসব ধর্মঘট সমাবেশমুখী মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্ট বাড়িয়ে দিলেও জনস্রোত ঠেকাতে পারেনি। সংবাদমাধ্যম থেকে প্রত্যেকটি সমাবেশে বিপুল মানুষের সমাগম হচ্ছে বলে খবর দিচ্ছে। তারপরও এই নকল পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত আছে। শঠতার আশ্রয় নিয়ে এভাবে মানুষকে যন্ত্রণা দিয়ে ক্ষমতাসীনরা কি অর্জন করতে চায় তা পরিষ্কার নয়। তবে তারা দেশের মানুষের ভাগ্য যেখানে জড়িত তা নিয়ে চটুলতা করছেন। এতে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও মূল্যবোধ সব সময় রক্ষিত হচ্ছে না।

গণতন্ত্রের সবচেয়ে মূল্যবান উপাদান ভোটব্যবস্থাকে এই সরকার আরো আগেই উপহাস বানিয়ে দিয়েছে। ২০১৪ সালে বিনাভোটের নির্বাচন ও ২০১৮ সালে নিশি রাতের নির্বাচন, ভোটের ইতিহাসে পৃথিবীতে আমরা অনন্য দুটো নজির সৃষ্টি করেছি। এই দুটো রেকর্ড ভঙ্গ করার সুযোগ সম্ভবত পৃথিবীতে আর কানো জাতি পাবে না। এরপরেও ভোট নিয়ে আমাদের উদ্ভাবিত দুর্নীতির নতুন নতুন কৌশল সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদের নির্বাচনে এমনটা দেখা গেছে।

বর্তমান সরকার জেলা পরিষদে আইয়ুব আমলের সিলেকটিভ নির্বাচন আমদানি করেছে; তাতে কোনো অসুবিধা নেই। এই নির্বাচনে শুধু আওয়ামী লীগাররা বিজয়ী হয়েছেন; তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। তবে কিছু কিছু প্রার্থী প্রতারণার যে অরুচিকর নজির সৃষ্টি করেছেন তা ভোলার মতো নয়। ধোঁকাবাজি জালিয়াতির হিমালয়ের কোন শৃঙ্গে আমরা আরোহণ করছি সেটি দেখার মতো। আগে তারা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে প্রতারণা করত। এখন সে কাজটি তাদের নিজেদের দলের লোকদের বিরুদ্ধে করছে নির্মমভাবে।

এই নির্বাচনে সব প্রতিযোগিতা আওয়ামী লীগের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ দলের বাইরে কেউ এর জন্য প্রার্থী হবেন তার সুযোগ একেবারেই সীমিত। সে জন্য কয়েকটি জেলায় মাত্র কয়েকজন প্রার্থী সহযোগী দল জাতীয় পার্টি থেকে জয় পেয়েছে সমঝোতার ভিত্তিতে। এই নির্বাচনে দেখা গেল, প্রার্থীরা যেমন জালিয়াতির প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন, আবার ভোটাররাও একইভাবে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে জবাব দিচ্ছেন। দুই সদস্য প্রার্থী ভোটারদের এক লাখ করে টাকা দেন। কিন্তু তারা দু’জনে পরাজিত হয়ে বুঝতে পারেন তাদের ওপরও বাটপাড় রয়েছেন। তারা মেহেরপুর জেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের একজন যুবলীগ অন্যজন আওয়ামী লীগের নেতা। পরাজয়ের পর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাচ্ছেন। একবার গলাধকরণ করলে সে টাকা ফেরত দেবেন এমন স্বভাব এখনকার আওয়ামী লীগারদের নেই। ফলে পরাজিত প্রার্থীদেরও কঠোর হতে হয়েছে। ভোট না দেয়ার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছেন।

ভোট ব্যবস্থা কলুষিত করতে আওয়ামী লীগ অন্যান্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধে যে ধরনের প্রতারণা শঠতা করছে সেগুলো তো যথা জায়গায় আছেই, তার সাথে যুক্ত হয়েছে আরো অভিনব সব অপকৌশল। সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মো: সুমন সরকার চোরের ওপর সেই ধরনের বাটপাড়িটি করেন। জাল টাকা দিয়ে কিনে নেন ভোটারদের। এই জালিয়াতি ইউনিক। ভোটের আগের রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের হাতে টাকার বান্ডিল তুলে দেন তিনি। জানাজানি হয়ে যাবে এই আশঙ্কার কথা বলে ভোটের আগে এই টাকা খরচ করতে নিষেধ করেন তিনি। এদিকে টাকা পেয়ে ভোটাররা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। ভোট দিয়ে নির্বাচনে তাকে জয়যুক্ত করেন। তবে পরের দিন বান্ডিল খুলে বুঝতে পারেন এগুলো জাল টাকা। সাতজন ইউপি সদস্য জালিয়াতির শিকার হয়ে তার কাছে প্রতিকার চান। অন্য দিকে, যুবলীগ নেতা সুমন তাদের উল্টো জাল টাকা রাখার জন্য পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এই দু’টি জালিয়াতির ঘটনা মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে এসেছে। দুটো অপরাধ করেছেন জেলা পরিষদের সদস্যপদের প্রার্থী ও ভোটাররা। জেলা পরিষদের প্রধান পদটি চেয়ারম্যানের। এটি অত্যন্ত লোভনীয় একটি পদ। আওয়ামী লীগ মূলত এর দ্বারা নিজেদের দলের এক শ্রেণীর লোককে অনেকটা বিনা পুঁজিতে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ও সম্মান অর্জনের আয়োজন করে দিয়েছে। চেয়ারম্যানের পদটি দখলের জন্য এর চেয়ে আরো জঘন্য অনিয়ম অন্যায় হওয়া স্বাভাবিক। সাধারণত এ বিষয়টি দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে বলে সেসব প্রকাশ হওয়ার সুযোগ থাকে না।

প্রশ্ন হচ্ছে, ভোট কেনাবেচার এভাবে প্রমাণ পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে? এখন পর্যন্ত যারা নগ্নভাবে জালিয়াতি করে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- এমন কোনো খবর নেই। এ ছাড়া তারা দেশের আইনে অপরাধ বলে গণ্য হয় এমন অপরাধ প্রকাশ্যে করেছেন। সে জন্য দেশে দায়িত্বশীল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে, তাদেরও কোনো নড়াচড়া দেখা গেল না। বাংলাদেশে এখন পুলিশের বহু বিশেষায়িত বিভাগ রয়েছে। এগুলো এখন এতটাই শক্তিশালী যে, তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ বিষয়ে বেশ কার্যকর বলে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা। আমরা বিগত এক যুগে বিরোধী রাজনৈতিক দলের লোকদের দমন করতে এদের বীরোচিত সব পদক্ষেপ দেখেছি। কিন্তু প্রকাশ্যে জাল টাকা বিতরণ করা হলেও তার কোনো একটি সংস্থাকেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল না।

চুরি বাটপাড়ি জালিয়াতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের কোনো আয়োজন থাকলে এ পর্যায়ে আমাদের প্রথম স্থান অর্জন কেউ ঠেকাতে পারত না। সমাজে অপরাধপ্রবণতার একটি সাধারণ হার রয়েছে। যদিও সভ্য সমাজে দিনের আলোয় প্রকাশ্যে তা করা যায় না। বৃহত্তর সমাজ এগুলোকে ঘৃণ্য কাজ হিসেবে দেখে। তাই এগুলো বিদ্যুৎ চলে গেলে কিংবা অন্ধকারে সংঘটিত হতে হয়। কেউ ধরা খেলে তাদের জামিন থাকে না। সমাজে সে আর মুখ দেখাতে পারে না। আমরা সম্ভবত এক ব্যতিক্রম জাতি যেখানে অপরাধীরাই নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠছে। কর্তৃপক্ষ দিনের আলোতে অপরাধ সংগঠনকারীদের দেখতে পাচ্ছে না; বরং অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাও সরাসরি অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে তাদের সাথে। বেড়ায় ক্ষেত খেলে কৃষকের পরিত্রাণের উপায় কি?

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement