২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নুসানতারা-বেইজিং ঘনিষ্ঠতা

লেখক : মো: বজলুর রশীদ - ফাইল ছবি

ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাজধানী নুসানতারা ও চীনের বেইজিং বিআরআই প্রকল্পগুলো নিয়ে আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। নুসানতারাকে ভবিষ্যৎ রাজধানী শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ইন্দোনেশীয় ভাষায় আবু কোটা নুসানতারা সংক্ষেপে আইকেএন। এই পরিকল্পিত রাজধানীটি ২০২৪ সালে জাতীয় দিবস উদযাপনের সময় উদ্বোধন করা হবে। জোকোভি ২০২৪ সালে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেবেন, তার আগে এটির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আগ্রহী।

১৯৪৫ থেকে রাজধানী হিসেবে স্বীকৃত জাকার্তার সবকিছু নুসানতারায় স্থানান্তরিত ও প্রতিস্থাপিত হবে। নুসানতারা পুরনো জাভানিজ শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ ‘বাইরের দ্বীপ’। ইন্দোনেশিয়ায়, এটি সাধারণত ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জকে বোঝায়, মালয়েশিয়ায় একই শব্দটি মালয় দ্বীপপুঞ্জকে বোঝায়।

নুসানতারা শহরটি ৯৯০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে পাহাড়ি আড়াআড়ি বন এবং একটি উপসাগর রয়েছে। চলতি বছর, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নুসানতারার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। প্রবেশের রাস্তা স্থাপন, সরকারি সেন্ট্রাল এরিয়া জোন, সরকারি অফিস, স্কুল, হাসপাতাল এবং শপিং মলগুলো নিয়ে প্রথম পর্বের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। সমগ্র ইন্দোনেশিয়া থেকে এক লাখ শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিদেশী শ্রমিক বাদ দিয়ে দেশের আরো এক লাখের মতো শ্রমিকের জোগান দেয়া হবে।

২০১৭ সালের এপ্রিলে, জোকো উইডোডো বা জোকোভি প্রশাসন জাকার্তা থেকে রাজধানী সরানোর কথা বিবেচনা করে। বর্তমান স্থানটি ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি থেকে তুলনামূলকভাবে মুক্ত। উন্নয়নমূলক বৈষম্য হ্রাস এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রাথমিক কেন্দ্র হিসেবে জাকার্তার বোঝা হ্রাস করার একটি কৌশলেরও অংশ হবে নুসানতারা। একই সময়ে, জাকার্তাকে আগামী দশকে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে বাঁচাতে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হবে।

উত্তর পেনাজাম পাসার এবং পূর্ব কালিমানতান প্রদেশের কুতাই কার্তানেগারা রিজেন্সির ২৫৬ হেক্টর জমির ওপর রাজধানী শহরটি অবস্থিত হবে, জাকার্তা থেকে নগরটি প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার দূরে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৬৬ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ বা ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইন্দোনেশিয়া সরকার মাত্র এক-পঞ্চমাংশ বিনিয়োগ খরচ বহন করতে পারবে, মোট বিনিয়োগমূল্যের ৮০ শতাংশ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ এবং অন্য বিনিয়োগ থেকে উঠে আসবে। পরিকল্পনা এমনই।

বিশাল এ কর্মকাণ্ড নির্ধারিত সময়ে শেষ করার জন্য চীনের উপর ইন্দোনেশিয়ার নির্ভরতা বেড়েই চলেছে। ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাজধানীর জন্য বিদেশী বিনিয়োগ চাওয়া হয়েছে, অন্যতম উৎস হলো চীন। এক টেলিফোন কথোপকথনে জোকোভি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে তার আশার কথা জানিয়ে বলেন, চীন নতুন রাজধানীসহ ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের উন্নয়নে চীনের সহায়তা ও বিনিয়োগ অব্যাহত রাখতে চায়।

প্রশ্ন হচ্ছে, নুসানতারা কি আরো বেশি চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে? তাৎক্ষণিক উত্তর না, যেহেতু এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা পাঠানোর গতি অনেকটা ধীর। যাহোক, প্রকল্পগুলো অবশ্যই রাস্তা, বাঁধ, বিদ্যুৎ, সুপেয় জল, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, হাউজিং, রিয়েল এস্টেট এবং অফিস বিল্ডিং নির্মাণের মতো মৌলিক অবকাঠামো হতে হবে যেখানে চীনা বিনিয়োগের জন্য প্রকল্পগুলোতে নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করতে পারে। এগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে হবে না, ববং উভয় পক্ষের স্বার্থ মেলে কি না তার উপর নির্ভর করবে। চীন ও ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যেকের যদি এমন কিছু থাকে যা অন্যরা চায়, তবে তারা নতুন নুসানতারায় বিনিয়োগ চুক্তিতে একমত হতে পারে। এসব কিছুতে বেল্ট ও রোড ইনিশিয়েটিভ-বিআরআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ইন্দোনেশিয়ায় চীনা বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট কো-অর্ডিনেটিং বোর্ডের তথ্যের উপর ভিত্তি করে ২০১৩ সালে ২৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ৪.৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-বিআরআই-এ অংশগ্রহণের অংশ হিসেবে সম্প্রতি চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ২৮টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।

সরকার বালিতে স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম বৈঠকে সমুদ্রবন্দর ও শিল্প এস্টেট, বিদ্যুৎকেন্দ্র, স্মেল্টার এবং পর্যটন এস্টেটসহ এসব প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রকল্পগুলো আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে মনোনীত চারটি স্থানে শুরু হবে। এই চারটি স্থান হলো উত্তর সুমাত্রা, নর্থ কালিমানতান-নুসানতারা এলাকা, নর্থ সুলাওয়েসি এবং বালি। এই অবস্থানগুলোর নিজস্ব সুবিধাও আছে যে কারণে চীনা বিনিয়োগকারীদের সহজে আকৃষ্ট করবে। যেমন, উত্তর সুমাত্রা মালাক্কা প্রণালীর কাছাকাছি এবং ইন্দোনেশিয়ার পাম তেল শিল্পের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নুসানতারা এলাকার উত্তর কালিমানতানের নদীগুলো জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার বিবেচনা করে যে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুলাবেসি চীনের কাছাকাছি হওয়ায় এটি চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় হবে। সরকার জানায়, ২৮টি প্রকল্প ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ান ও চীনা ব্যবসায়ীরা করিডোরে এবং মধ্য জাভায় ৮.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আরো সাতটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে।

এই প্রকল্পগুলো নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আগে চীনা বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই সরকারের চারটি শর্ত মেনে চলতে হবে। প্রথমটি হলো, ইন্দোনেশিয়ার সব উন্নয়ন প্রকল্পের স্থায়িত্ব বজায় রাখার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে চীনা বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই এসব প্রকল্পের জন্য পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রকল্পগুলোতে স্থানীয় শ্রমের সর্বাধিক ব্যবহার করতে হবে। যদি চীনা বিনিয়োগকারীরা তাদের নিজস্ব শ্রম ব্যবহার করে, তবে স্থানীয় শ্রমিকদের কাছে তাদের দক্ষতা হস্তান্তর করার আগে এটি কেবল প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে অনুমোদিত হবে। তৃতীয় শর্তটি সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের স্থানীয় অংশীদারদের কাছে প্রযুক্তি সম্পর্কে তাদের জ্ঞান স্থানান্তর করতে অনুরোধ করে। চতুর্থটি, প্রকল্পগুলো অবশ্যই ইন্দোনেশিয়ার আপস্ট্রিম এবং ডাউনস্ট্রিম শিল্পের জন্য অতিরিক্ত মান তৈরি করতে হবে যাতে খনির মতো নিষ্কাশনমূলক শিল্পের উপর দেশের নির্ভরতা হ্রাস করা যায়, পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হয়।

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভটি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং উন্মোচন করেছিলেন। সরকারি সূত্রে প্রকাশ, চীন ছাড়াও অনেক বিনিয়োগকারী নুসানতারায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরো কয়েকটি দেশ ব্যক্তিগতভাবে বা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে নুসানতারায় অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায়।

পরিকল্পনামন্ত্রী সুহারসা মনোয়ার এমন ধারণা নাকচ করে দেন যে, নুসানতারা প্রকল্পটি একচেটিয়াভাবে চীনা ঠিকাদারদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। সরকার চীনের বিনিয়োগের বিষয়ে অনেকটা সতর্ক, কারণ ইন্দোনেশিয়া-চীন বা চীনা ইস্যুগুলো রাজনৈতিকভাবে সেখানে সংবেদনশীল। কিছু কিছু চীন-বিরোধী মনোভাব সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত। বিভিন্ন চীনা প্রকল্পে চীনা শ্রমিকদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার কারণে স্থানীয়রা চীনবিরোধী বিক্ষোভে ইন্ধন যুগিয়েছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, চীনারা তাদের চাকরি চুরি করছে এবং তাদের পাওনা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ায় ৪০ হাজার চীনা কাজ করছে বিপরীতে ইন্দোনেশিয়ায় বেকার কর্মী রয়েছে ১০ মিলিয়ন। সমালোচকরা বলছেন, চীনা সংস্থাগুলোর সাথে জড়িত অংশীদারিত্বগুলো এড়ানো যাবে না যদি সরকার অগ্রগতি দেখতে চায়। কোনো বিনিয়োগকারীকে দেয়া প্রকল্প সম্প্রদায়ের উপকারে আসবে কি না এবং পরিবেশ রক্ষা করবে কি না তা নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের অংশ।

এখন জিনিইমিন বা নতুন চীনা অভিবাসী নিয়ে জার্কাতায় বিরোধী পক্ষগুলো নানা কথা তুলছেন। ২০১৩ সালে বিআরআই চালু হওয়ার পর থেকে ইন্দোনেশিয়ায় নতুন মূল ভূখণ্ডে চীনা অভিবাসীদের আগমন ঘটতে থাকে ও চীনা ব্যবসাগুলো বিকশিত হতে থাকে। আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, ২০০৮ সালে সারা বিশ্বে ১০.৩ মিলিয়ন জিনিইমিন ছিল, যার মধ্যে প্রায় ৮ মিলিয়ন চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে এসেছিল। চীন থেকে আগতদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গেছে। এ বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন কারণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় কোনো দেশই এই সম্পর্কিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।

ইন্দোনেশিয়ার শ্রমমন্ত্রী হানিফ ঢাকিরির মতে, ২০১৭ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ২৪,৮০০ চীনা শ্রমিক ছিল, যাদের অধিকাংশকেই দক্ষ শ্রমিক হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছিল।

ইন্দোনেশিয়ায় নতুন অভিবাসনের ওপর অনেক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, স্থানীয় শ্রমিকদের সাথে বিদেশী শ্রমিকদের অনুপাত এক থেকে দশ। যেসব শ্রমিকের দক্ষতা ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া যায় না, তারাই কেবল পারমিট পেতে পারেন এবং তাদের প্রকল্প শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। পারমিট সাধারণত ছয় মাসের জন্য হয়। এটি ‘আদিবাসী ইন্দোনেশীয়দের’ অর্থনৈতিক কল্যাণের সমর্থনে শক্তিশালী জাতিগত-জাতীয়তাবাদ এবং সংরক্ষণবাদী নীতির কারণে।

অনেক ‘আদিবাসী ইন্দোনেশীয়’ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে এবং তারা বিদেশীদের, বিশেষ করে চীনাদের প্রতি জোরালো সন্দেহ এবং কুসংস্কার পোষণ করে। আরো খারাপ ব্যাপার এই যে, বিরোধী রাজনীতিবিদরা প্রায়ই নিজেদের স্বার্থে জাতিগত পরিচয়কে রাজনীতিতে ব্যবহার করে এবং চীনা নতুন অভিবাসীদের ওপর আক্রমণ চালায়। জাতিগত কুসংস্কারগুলো কেবল নতুন অভিবাসীদের বিরুদ্ধেই নয়, চীনা ইন্দোনেশীয়দের প্রতিও রয়েছে, যারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সেখানে বাস করে আসছে। চীনা অভিবাসীদের প্রতি কঠোর নীতি যাই হোক না কেন, ইন্দোনেশিয়ার অনেক জায়গায় জিনিইমিন রয়েছে। এসব চীনা শ্রমিক ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে মাঝে মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

উদাহরণস্বরূপ, ২০১৫ সালে, বান্টেন প্রদেশের লেবাকের একটি সিমেন্ট কারখানায় ৭৯৯ জন চীনা অভিবাসী শ্রমিককে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, প্রধানত অদক্ষ কাজ করার জন্য। এসব শ্রমিক পরিবেশের ক্ষতি করেছে দাবি করে স্থানীয় লোকজন তাদের ওয়ার্কপারমিট প্রত্যাহারের দাবি জানায়। বালি ও কালিমানতানের যৌথ প্রকল্পের সংস্থাগুলো অনুমোদিত শ্রমিকের চেয়ে অনেক বেশি চীনা অভিবাসী শ্রমিক নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। আসলে রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য এসব ছোটখাটো বিষয়কে ইস্যু বানানো হয়।

কিছু সমালোচক যুক্তি দেন যে নুসানতারা প্রকল্পে চীনকে আমন্ত্রণ জানানো ইন্দোনেশিয়াকে চীনের উপর আরো নির্ভরশীল করে তুলবে। জাপানের সফটব্যাঙ্ক গ্রুপ ইন্দোনেশিয়ার নতুন মূলধন প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসে ফলে এই প্রকল্পের অর্থনৈতিক কার্যকারিতা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে জাপানের সাথে চীনের সর্ম্পক তেমন ভালো যাচ্ছে না। এর আগে আলিবাবা ক্লাউডও বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু তারাও মত পরিবর্তন করেছে। বিনিয়োগকারীরা তাদের ভবিষ্যতের বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে এবং সুস্পষ্ট কার্যকারিতা ও বিনিয়োগ রিটার্ন নিশ্চিত করতে চায়। একই যুক্তি চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্যও প্রযোজ্য।

জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, মন্ত্রণালয় প্রস্তুত করে, নতুন নুসানতারার বর্তমান মাস্টার প্ল্যান এখনও চূড়ান্ত প্রকল্প নয়। তাই এটি আরো কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা দরকার। মাস্টার প্ল্যানের অধীনে তালিকাভুক্ত প্রকল্পগুলোর সংখ্যাও সতর্কতার সাথে নির্বাচন করা দরকার। কারণ, সবগুলো প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর নয় বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন।

ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো সম্প্রতি চীনে রাষ্ট্রীয় সফর করেন, সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সাথে বেইজিংয়ে মতবিনিময় করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়েছে।

দুই রাষ্ট্রপতি একমত হন যে, চীন-ইন্দোনেশিয়া কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ২০১৩ সাল থেকে উন্নয়নের একটি শক্তিশালী গতি বজায় রেখেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, অভূতপূর্ব বৈশ্বিক পরিবর্তন সত্তে¡ও সামুদ্রিক প্রকল্প ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে অংশীদারিত্ব প্রদর্শন করা সম্ভব হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য মাইলফলকের কথা স্বীকার করে নিয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ আরো বাড়ানোর বিষয়ে একমত হন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিআরআই এবং গ্লোবাল মেরিটাইম ফুলক্রাম (জিএমএফ) এর সমন্বয়ের মাধ্যমে চীন ও ইন্দোনেশিয়া গভীরভাবে এবং উচ্চমানের সহযোগিতা পরিচালনা করবে এবং চীন ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের বাস্তবায়নের জন্য একটি নতুন পঞ্চবার্ষিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের গতি বাড়াবে। সামুদ্রিক বিষয়ের সংস্থাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ জোরদার করবে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement
কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল