১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার সংগ্রামে স্বাগতম

-

যুক্তরাষ্ট্র বনাম বাংলাদেশ সম্পর্কে চাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত কথা বলছে। ২০১৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশের ভোটব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। মানবাধিকারসংক্রান্ত গুরুতর প্রশ্নগুলো আরো আগে থেকে উঠতে শুরু করেছিল। তখন যুক্তরাষ্ট্রকে এতটা সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। অনেকেই মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের প্রভাবশালী মিত্র রাষ্ট্রগুলো এসব নিয়ে তখন সরকারের সাথে বোঝাপড়া করলে অবস্থার এতটা অবনতি হতো না। হঠাৎ করে এভাবে সক্রিয় হওয়ার পেছনে অনেকে বৈশ্বিক রাজনীতির সমীকরণ দেখতে পাচ্ছেন। তবে দেশের মানুষ যারা ভোটাধিকার হারিয়েছে, চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য এটি আশীর্বাদ। সরকারের নানামাত্রিক প্রতারণার কাছে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ ধরাশায়ী হয়েছে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময়। মোটা দাগের এসব অন্যায় করার জন্য সরকারকে কোনো ধরনের জবাবদিহি করতে হয়নি। এ অবস্থায় দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী চায় গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় ঘাটতিগুলো নিয়ে কথা বলুক। সরকার যেন কোনোভাবে ভোটাধিকার খর্ব ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করার সুযোগ আর না পায়।

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্র্রদূত পিটার হাস নির্বাচন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে তার দেশের পক্ষ থেকে জোরালো কিছু কথা বলেছেন। বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র্র, তার এ কথাটি সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে। তার এ কথাকে রাজনৈতিকভাবে কেউ সেভাবে চ্যালেঞ্জ করেনি। তবে এরপর আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তার পক্ষে কিছু প্রশ্ন পাঠান। তার অনুরোধ হচ্ছে, সাংবাদিকরা যাতে এসব প্রশ্ন পিটার হাসকে করেন। মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও পিটার হাস কথা বলেন। মার্কিন রাষ্ট্র্রদূতের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকারসংক্রান্ত মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। তিনি বলার চেষ্টা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে ভোটাধিকার কিভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল। পিটার হাসের জবাবে মাহফুজ আনামের যুক্তিতর্কগুলো আবর্তিত হয়েছে সাবেক পাগলাটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকেন্দ্রিক। বিচারব্যবস্থাকে পকেটে ভরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল বদলে দিতে চেয়েছেন ট্রাম্প। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিষোদগার ছিল তার রুটিন কাজের অংশ। সাংবাদিকদের মিথ্যুক ভণ্ড বলে গালিগালাজ করেছেন। ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে রুখে দিয়েছে আমেরিকার উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। তিনি ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিতে পারেননি। সাংবাদিকদেরও শেষ পর্যন্ত কিছুই করতে পারেননি। রাষ্ট্র হিসেবে আমেরিকা এই বদমেজাজি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে। সেই হিসেবে আমেরিকা রাষ্ট্র্র হিসেবে প্রশংসিত হতে পারে। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ যারা অগতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছেন তারা ধন্যবাদ পেতে পারেন। মাহফুজ আনাম যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে গোলযোগ চলার সময়ও একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধ লিখেন। তার আগেই অমাদের দেশে ২০১৪ সালের ভুতুড়ে ও ২০১৮ সালের নিশি রাতের নির্বাচন হয়। সাধারণত উত্তম বা শ্রেয়রা অধম বা নগণ্যদের শিক্ষা বা পরামর্শ দিতে পারেন। নিজেদের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় এ দেশের সাংবাদিকরা নিজ দেশে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।

আমেরিকার সক্রিয় উদ্যোগে বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হলে তার বিরোধিতা করার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না। ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র্রের ট্রেজারি বিভাগ আমাদের র‌্যাব ও এর কিছু সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। অভিযোগের পক্ষে তারা এভিডেন্স দিয়েছে। অন্য দিকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করে যাচ্ছে নিয়মিত। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিগত এক দশক ধরে প্রতি বছর গড়ে ৫৬ জনের বেশি নিখোঁজ হয়েছেন, মাসে গড়ে পাঁচজন করে। এদের মধ্য থেকে একটি অংশ ফিরে এসেছে, কিছু সংখ্যকের লাশ পাওয়া গেছে, বড় একটা অংশের আর খোঁজ মেলেনি।

বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যাটা আরো বেশ বড়। ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১২ বছরে দুই হাজার ৫৩৭ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। গড়ে প্রতি বছর ২১১ জন করে প্রাণ গেছে, মাসে ১৭ জনের বেশি।

গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ আমাদের সবগুলো বাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে। র‌্যাব, পুলিশ, শিল্প পুলিশ এমনকি আনসারও বাদ যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর কয়েক মাস ধরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। প্রতি মাসে পাঁচজন করে নিখোঁজ ও ১৭ জন করে বিচারবহির্ভূত হত্যা আর হচ্ছে না। আগের মতো চললে বিগত ছয় মাসে ৩০ জন নিখোঁজ ও ১০০ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হওয়ার কথা ছিল। একটি পরিবার যখন একজন সদস্যকে হারায় সেটি কতটা বেদনাদায়ক, ভুক্তভোগী মাত্রই সেটি বুঝতে পারেন। তার ওপর ঘটনাটি যদি এমন হয় যে, তার কোনো অপরাধ প্রমাণ হয়নি শুধু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে- তা হলে পরিবারগুলোর জন্য তা মেনে নেয়া আরো কঠিন হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপে বৈশ্বিক কারণ যাই হোক না কেন, আমাদের জন্য তা এ কারণে স্বস্তির যে, আগের ধারবাহিকতায় গুম হচ্ছে না, হেফাজতে মৃত্যু ও এনকাউন্টার নেই।

২০২৩ সালে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা দুই বছর আগেই তার স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের মানুষও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার চায়। এ ক্ষেত্রে অন্তত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এক কাতারে এসে গেছে। আজকে আমাদের ভোটব্যবস্থা হারিয়ে যাওয়ার পেছনের ইতিহাসটিও আমরা একটু তলিয়ে দেখতে পারি। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশের ভোট ব্যবস্থা অনেকটাই নির্বাসিত হয়। ওই নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যায়। বাকি ১৪৭টি আসনে আনুষ্ঠানিক নির্বাচন দেখানো হলেও সেখানে নানা ভৌতিক কাণ্ড ঘটে। বেশির ভাগ কেন্দ্র ছিল ভোটারশূন্য। সামান্য কিছু কেন্দ্রে কিছু ভোটার উপস্থিত থাকলেও কাগজ-কলমে ভোট পড়ার ভুতুড়ে হার উপস্থাপন করা হয়। বহু জায়গায় শতভাগ ভোট কাস্ট হয়। কোথাও কোথাও সেটি শতভাগও ছাড়িয়ে যায়।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। দেশের বেশির ভাগ মানুষ ওই নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত হয়। জনগণ পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে যায়। এর পর থেকে স্থানীয় সব পর্যায়ের নির্বাচনেও একই পদ্ধতির অনুসরণ করতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীনদের। এখন দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সব ধরনের ভোটাধিকার নির্বাসনে চলে গেছে, বলা যায়। এমনকি বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনেও একই ব্যবস্থা আমরা দেখতে পাচ্ছি।

২০১৪ সালের ওই নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টি প্রধান এরশাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর এরশাদ প্রকাশ্যে এক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সুজাতা সিং তার কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তিনি (এরশাদ) যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন তাহলে ‘মৌলবাদী জামায়াত-শিবির’ ক্ষমতায় এসে যাবে। ওই সময় সুজাতা নিজেও সরাসরি মন্তব্য করেন যে, ভারত চায় ‘বেশির ভাগ’ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। ‘বেশির ভাগ’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন সেটি কেউ আর স্পষ্ট করেনি। এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় এমনকি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ব্যাখ্যা করে কিছু বলেনি। বাস্তবে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও ভারত এ নির্বাচনী ফলাফলকে স্বীকৃতি দেয়।

জামায়াত শিবিরের যে প্রসঙ্গটি এরশাদ সুজাতার মন্তব্য থেকে জানিয়েছেন, সে ব্যাপারটি দেশটির কোনো কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেনি, তা হলে ধরে নেয়া যায়- মন্তব্যটি তিনি করেছিলেন। প্রতিবেশী একটি দেশের রাজনৈতিক দলের ব্যাপারে এভাবে মন্তব্য করার অধিকার তিনি রাখেন কি না সেই প্রশ্ন থেকে গেল। আরো জোরালো প্রশ্ন হলো- অন্য একটি দলকে তিনি জামায়াতকে নিয়ে ভয় দেখাতে পারেন কি না। স্বাধীনতার পর থেকে দলটি এ দেশে রাজনীতি করে আসছে। দলটির মৌলবাদিতার কারণে জনগণ কিংবা কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না। অথচ ২০১৪ সালে ভারতে কট্টর মৌলবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। এরপর সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অত্যাচার নিপীড়ন বহুগুণে বেড়ে গেছে। গো-রক্ষা আন্দোলন, লাভ জিহাদের নামে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। মন্দির রক্ষার নামে মুসলমানদের বাড়িঘর, উপাসনালয় উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এতসব যুক্তিতর্ক থাকার পরও বাংলাদেশের কোনো সাংবাদিক ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের অসৌজন্যমূলক তৎপরতা নিয়ে কিছু বলেনি। কোনো সম্পাদকও কিছু লিখতে আগ্রহ বোধ করেননি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আমরা ভোটাধিকার হারিয়েছি। এবার সেটি উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সহযোগিতা থাকলে আমরা কিভাবে তার বিরোধিতা করি?

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে একটি গোষ্ঠী এখন ছিনিমিনি খেলছে। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি দলের নেতারা ভোটের নতুন নতুন নিয়ম তৈরি করছেন। তারা নতুন করে ভোটকে সংজ্ঞায়িত করছেন। তাদের নিয়ম ও সংজ্ঞা অনুযায়ী অনুশীলন হলে সেটিকে নির্বাচন হিসেবে গণ্য করে অন্য সবাইকে মেনে নিতে হবে। কেউ শেখাচ্ছেন ইভিএমে নির্বাচন মানে কী; এর অর্থ হলো- সরকারি দলের পদপ্রার্থীর একজন প্রতিনিধি বুথের মধ্যে থাকবেন। তিনি ভোটারের হয়ে বাটন টিপে দেবেন। এতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভোট হয়ে যাবে। আবার কেউ বলছেন, ভোটকেন্দ্রে কষ্ট করে আসার দরকার কী? তাদের পক্ষ থেকে ভোট দিয়ে দেয়া হবে। আবার কেউ দেখাচ্ছেন অস্ত্রের ভয়। নির্ধারিত প্রতীকে ভোট না দিলে এর প্রয়োগ করা হবে। এগুলোকেও অন্তত কিছুটা হলেও ভোটের অনুশীলন বলা যাবে, যেখানে ভোটার ও প্রার্থীরা প্রাসঙ্গিক থাকেন।

২০১৮ সালে এতে নতুন মাত্রাটি যোগ করা হলো। তাতে পুরো জাতিকে ফাঁকি দিয়ে আগের রাতেই ভোটবাক্স ভর্তি করে ফেলা হলো। দিনের বেলায় ভোট হলেও ওই নির্বাচনে নিশ্চিতভাবে সরকারি দল জয়ী হতো। কারণ বিরোধীরা নির্বাচনের আগেই মাঠ থেকে ছিটকে পড়েছিল। সরকার, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি দলের প্রার্থীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা জোট কায়দা কানুন করে বিরোধী প্রায় সব প্রার্থীকে সম্পূর্ণ কাবু করে ফেলেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি দলের বিচ্ছিন্ন কয়েকজন সদস্যদের পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে, এভাবে সব আসনে জিতে যাওয়ার টার্গেট ২০১৮ সালে সরকারের ছিল না। তবে প্রার্থীরা সবাই নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করতে গিয়ে বিরোধীদের একেবারে বঞ্চিত করে দেন; অর্থাৎ সরকারি দলের ৩০০ প্রার্থীর সবাই জিততে চেয়েছিলেন। মেম্বার-চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর-মেয়র সবাই এর পর থেকে এসব কৌশলের কোনো না কোনোটি অবলম্বন করছেন। ফলে আমাদের ভোটাধিকার লুণ্ঠিত হয়ে গেছে।

ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার দরকার, এ উপলব্ধি সরকারি দলের মধ্যেও জেগেছে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্র্র তার নিজস্ব স্বার্থে কার্যক্রম চালাবে। চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার বাসনা তার রয়েছে। দেশটি তার বৈশ্বিক নেতৃত্বও ধরে রাখতে চায়। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মানবাধিকার ও ভোটাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এগুলোতে আমাদের ঘাটতি শতভাগ প্রমাণিত। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র্রের ত্রুটিবিচ্যুতি তুলে ধরা আমাদের জন্য শোভন হতে পারে না। কারণ তাদের সেসব বিচ্যুতি ঠিক করার সামর্থ্য আমরা রাখি না। এ অবস্থায় দেশটির পক্ষ থেকে সুচিন্তিত মতামতও তুলে ধরা হচ্ছে। তারা দাবি করতে শুরু করেছেন, কেন তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে কথা বলার বা অবস্থান নেয়ার অধিকার রাখেন।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সম্প্রতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন- আমাদের তারা আট বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান দিয়েছেন। আমরা যদি সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষণ করি, দেখতে পাব একমাত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র্র যার ওপর আমাদের সর্বাধিক নির্ভরতা রয়েছে। তারা আমাদের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার। আমাদের সবচেয়ে বেশি পোশাক রফতানি হয় সেখানে। প্রবাসী আয়েরও দ্বিতীয় প্রধান উৎস দেশটি। জাতিসঙ্ঘে শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ করে আমরা বিপুল অর্থ আয় করি। সেখানেও যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে প্রভাবশালী। দেশটি চাইলে তার হাতে থাকা ‘টুল’গুলো দিয়ে আমাদের আরো উপকার করতে পারে। তাই তাদের সুপরামর্শগুলো আমরা গ্রহণ করতে পারি। ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের সহযোগিতা আমরা গ্রহণ করতে পারি।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
স্বাধীনতা সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১তম নাটোর পৌরসভা কার্যালয়ের ভিতরে দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত কাঁঠালিয়ায় মাঠে ছাগল আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কিশোরে মৃত্যু সালমান খানের বাড়িতে গুলির ঘটনায় গ্রেফতার ২ আরো দুই সদস্য বাড়িয়ে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন রাবির নতুন জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রণব কুমার পাণ্ডে অপরাধ না করেও আসামি হওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে : মির্জা ফখরুল লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানোৎসবে নেমে শিশুর মৃত্যু ধূমপান করতে নিষেধ করায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা বড় বোনের বৌভাতের গিয়ে দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র নিহত কোটালীপাড়ায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত

সকল